নিজস্ব প্রতিবেদক: ডলারের বিপরীতে স্থানীয় মুদ্রার বিনিময় হার হ্রাস ও ক্রিসমাসের ছুটি সামনে রেখে চাহিদা কমায় এশিয়ায় চালের বাজার পড়তির দিকে। ডলারের বিপরীতে স্থানীয় মুদ্রার বিনিময় হার হ্রাস ও ক্রিসমাসের ছুটি সামনে রেখে চাহিদা কমায় এশিয়ায় চালের বাজার পড়তির দিকে। ভারত, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামসহ এ অঞ্চলের প্রধান চাল উৎপাদন ও রফতানিকারক দেশগুলোয় চালের রফতানি মূল্য কমে গেছে। শুধু ভারতেই রফতানি মূল্য ১৭ মাসের মধ্যে সর্বনিম্নে পৌঁছেছে। খবর বিজনেস রেকর্ডার ও নিক্কেই এশিয়া। ভারত বিশ্বের শীর্ষ চাল রফতানিকারক। ডলারের বিপরীতে দেশটির মুদ্রা রুপির বিনিময় হার সাম্প্রতিক সময়ে নিম্নস্তরে চলে গেছে। তাছাড়া প্রতিযোগী অন্যান্য দেশের বাজারে দাম কমায় দেশটির চালের দামও কমে গেছে। চলতি সপ্তাহে ভারতের ৫ শতাংশ খুদবিশিষ্ট আধা সেদ্ধ চালের রফতানি মূল্য ছিল প্রতি টন ৪৩৯-৪৪৫ ডলার, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪৪০-৪৪৬ ডলার। অন্যদিকে ৫ শতাংশ খুদবিশিষ্ট সাদা চালের দাম ছিল টন প্রতি ৪৪৬-৪৫৩ ডলার। নয়াদিল্লিভিত্তিক বহুজাতিক বাণিজ্য সংস্থার এক ডিলার জানান, রুপির দরপতনের কথা বিবেচনা করে চলতি সপ্তাহে রফতানিকারকরা দাম সমন্বয় করেছেন। তাছাড়া ক্রিসমাসের ছুটির কারণে চাহিদা কমে গেছে। দরপতনের ফলে রুপির বিনিময় হার ডলারের বিপরীতে রেকর্ড সর্বনিম্নে পৌঁছেছে। অবশ্য এতে রফতানিকারকদের মুনাফা বেড়েছে। অন্যদিকে চাল মজুদ বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ। এর অংশ হিসেবে দরপত্রের মাধ্যমে ভারত থেকে চাল আমদানি অব্যাহত রেখেছে দেশটি। চলতি বছরের আগস্ট ও অক্টোবরে বন্যার কারণে বাংলাদেশে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। ফলে খাদ্যশস্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশটি চাল আমদানি বাড়াতে বাধ্য হয়েছে। এদিকে ছুটির মৌসুম ঘিরে অর্থনৈতিক কার্যক্রমে ধীরগতির কারণে থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামের চালের দামও কমেছে। চলতি সপ্তাহ ৫ শতাংশ খুদবিশিষ্ট থাইল্যান্ডের ভাঙা চালের দাম ছিল প্রতি টনে ৫০২ ডলার, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫১২ ডলার। ব্যাংককভিত্তিক এক 9য়ী বলেন, সরবরাহ পরিস্থিতি বর্তমানে অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে থাই 9য়ীরা আশা করছেন, নতুন বছরে ভারত থেকে বিশ্ববাজারে সরবরাহ বাড়লে চালের দাম আরও কমতে পারে। এদিকে উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে ভিয়েতনামের চালের দাম। ভিয়েতনাম ট্রেড অ্যাসোসিয়েশন ও 9য়ীদের সূত্রে জানা গেছে, চলতি সপ্তাহে দেশটির ৫ শতাংশ খুদবিশিষ্ট চাল প্রতি টন ৪০৫ ডলারে বেচাকেনা হয়েছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪৯৫-৫০৮ ডলার। মেকং ডেল্টা প্রদেশ আন গিয়াংয়ের এক 9য়ী জানান, শরৎ ও শীতকালীন মাড়াইয়ে ধীরগতির কারণে দেশীয় বাজারেও বিক্রি কমেছে। দেশটির ফুড অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান গুয়েন এনগক নাম বলেন, আগামী বছর ভারতের চাল রফতানি বাড়বে। একইসঙ্গে ভিয়েতনামি চালের অন্যতম প্রধান বাজার ইন্দোনেশিয়া আমদানি কমানোর উদ্যোগ নেবে। এ অবস্থায় আগামী বছর ভিয়েতনামের চাল বিশ্ববাজারে কঠিন প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হতে পারে। এদিকে শিল্পসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন ও অন্য আমদানিকারকদের ক্রমবর্ধমান চাহিদার ফলে বছর শেষে থাইল্যান্ডের চাল রফতানি ছয় বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছতে পারে। এ সময় দেশটির রফতানি বেড়ে এক কোটি টন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভিয়েতনাম ও ভারতের পাশাপাশি থাইল্যান্ডও বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ চাল রফতানিকারক। বছরের প্রথম ১১ মাসে দেশটি ৯০ লাখ টনের বেশি চাল রফতানি করেছে, যা এর বার্ষিক লক্ষ্য ৮০ লাখ টনকে অতিক্রম করেছে। রফতানিকারকদের মতে, ডিসেম্বরে প্রায় পাঁচ-আট লাখ টন চাল রফতানি হতে পারে। জেবি