Logo

দর কষাকষি করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের মধ্যে চুক্তিতে সই

কয়েক সপ্তাহ ধরে দরকষাকষি করে দুই দেশ চুক্তি সই করে ।

ট্রাম্প-জেলেনেস্কি

বাংলাফ্লো আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ঢাকা:  যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের মধ্যে কয়েক সপ্তাহ ধরে উত্তেজনা চলার পর দেশ দুটি একটি চুক্তিতে সই করেছে। এর ফলে ওয়াশিংটন কিয়েভের মূল্যবান দুর্লভ খনিজসম্পদে প্রবেশাধিকার পাবে ও যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিকে তার পুনর্গঠনে তহবিল জোগান দেবে।

গতকাল বুধবার ওয়াশিংটন ডিসিতে এ চুক্তি সই হয়। এ নিয়ে কয়েক সপ্তাহ ধরে দরকষাকষি করে দুই দেশ। চুক্তি সই হওয়ার ব্যাপারে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত কিছু অনিশ্চয়তা থাকলেও অবশেষে এটি সম্পন্ন হয়।

যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেন সম্পর্কের ক্ষেত্রে এ চুক্তি একটি অগ্রগতি নির্দেশ করছে। গত মার্চে হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে উত্তপ্ত বৈঠকের পর এ সম্পর্ক তলানিতে নেমেছিল।

চুক্তি সইয়ের ঘোষণা দিয়ে মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেন, যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেন পুনর্গঠন বিনিয়োগ তহবিল প্রতিষ্ঠা রাশিয়ার প্রতি একটি বার্তা যে, ট্রাম্প প্রশাসন দীর্ঘমেয়াদে এক স্বাধীন, সার্বভৌম ও সমৃদ্ধ ইউক্রেন গড়ার শান্তি প্রক্রিয়ার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

বাংলাফ্লো/এসএস 

স্কট বেসেন্ট আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের জনগণের মধ্যে অংশীদারত্ব প্রতিষ্ঠার এ ভাবনা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের; যা একটি টেকসই শান্তি ও সমৃদ্ধ ইউক্রেনের প্রতি উভয় পক্ষের প্রতিশ্রুতিই প্রতিফলিত করে।’

‘স্পষ্ট করে বলতে গেলে, রাশিয়ার যুদ্ধচেষ্টায় অর্থ বা অন্যান্য সহায়তাদানকারী কোনো রাষ্ট্র বা ব্যক্তিকে ইউক্রেনের পুনর্গঠন থেকে উপকৃত হতে দেওয়া হবে না’, বলেন মার্কিন অর্থমন্ত্রী।

ট্রাম্প প্রশাসন এ চুক্তির বিস্তারিত প্রকাশ করেনি।

ইউক্রেনের অর্থ মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘ইউক্রেন পুনর্গঠন তহবিলে’ যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি বা সামরিক সহায়তার মাধ্যমে অবদান রাখবে এবং কিয়েভ তার প্রাকৃতিক সম্পদ থেকে পাওয়া রাজস্বের ৫০ শতাংশ তহবিলে দেবে।

মন্ত্রণালয় আরও জানায়, তহবিলের সম্পূর্ণ অর্থ প্রথম ১০ বছর শুধু ইউক্রেনে বিনিয়োগ করা হবে, এরপর ‘লাভ অংশীদারদের মধ্যে বণ্টন করা হতে পারে’। তহবিলে দুপক্ষের সমান সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা থাকবে। এ চুক্তি শুধু ভবিষ্যতের মার্কিন সামরিক সহায়তায় নজর দেব, অতীতের সহায়তা এতে অন্তর্ভুক্ত নয়।

ইউক্রেনের অর্থমন্ত্রী ইউলিয়া সিরিদেনকো বলেন, ‘আমরা শুধু বিনিয়োগই পেতে যাচ্ছি না; বরং এমন একটি কৌশলগত অংশীদারকেও পাচ্ছি, যারা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উদ্ভাবনে সহায়তা করতে আমাদের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

ইউক্রেনের অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এ চুক্তি বিস্তারিত আলোচনার ফল এবং আমি দুপক্ষের মধ্যস্থতাকারী দলকে তাদের পেশাদারি ও নিষ্ঠার জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই। আমরা পারস্পরিক স্বার্থের ক্ষেত্রে উপকারী একটি রূপকাঠামো তৈরি করেছি। ইউক্রেনের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের টেকসই শান্তির প্রতিশ্রুতি ও বৈশ্বিক নিরাপত্তায় ইউক্রেনের অবদানের স্বীকৃতিও দেয় এ চুক্তি।’

চুক্তি সইয়ের কিছুক্ষণ আগে ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শ্মাইগাল সামাজিকমাধ্যম টেলিগ্রামে লিখেছেন, এ চুক্তির ফলে ইউক্রেন তার ‘ভূগর্ভস্থ সম্পদ, অবকাঠামো ও প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখবে’ এবং এটি ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদানের প্রচেষ্টায় কোনো বাধা তৈরি করবে না।

চুক্তিটি কয়েক সপ্তাহ আগেই স্বাক্ষরিত হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু মার্চে হোয়াইট হাউসে বৈঠকে ট্রাম্প ও জেলেনস্কির মধ্যে তীব্র বাকবিতণ্ডার জেরে এটি বিলম্বিত হয়।

সূত্র: আল জাজিরা

বাংলাফ্লো/এসএস 

Leave a Comment

Comments 0