আন্তর্জাতিক ডেস্ক,
ঢাকা: জাতিসংঘ গাজা উপত্যকায় আনুষ্ঠানিকভাবে দুর্ভিক্ষের ঘোষণা দিয়েছে। এটি মধ্যপ্রাচ্যে প্রথমবারের মতো কোনো অঞ্চলে দুর্ভিক্ষের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি।
শুক্রবার (২২ আগস্ট) এ তথ্য জানিয়েছে কাতার ভিক্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
জাতিসংঘের জরুরি সহায়তা সমন্বয়ক টম ফ্লেচার বলেন, গাজায় চলমান মানবিক বিপর্যয় সম্পূর্ণরূপে প্রতিরোধ করা যেত। তিনি অভিযোগ করেন, ইসরায়েল সীমান্তে খাদ্য ও অন্যান্য মানবিক সহায়তা আটকে দিয়ে সংকটকে ভয়াবহ অবস্থায় ঠেলে দিয়েছে। তাঁর ভাষায়, ‘এই দুর্ভিক্ষ মানবসৃষ্ট এবং সহায়তা অবরোধ না করা হলে তা এড়ানো যেত।’
ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন (IPC)-এর সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা সিটিতে অন্তত পাঁচ লাখ মানুষ বর্তমানে দুর্ভিক্ষ স্তরের খাদ্য সংকটে রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া না হলে এই সংকট আরও বিস্তৃত হয়ে দেইর আল-বালাহ ও খান ইউনিসের মতো দক্ষিণাঞ্চলীয় এলাকাতেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।
এদিকে ইসরায়েল এ ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করে জানিয়েছে, ‘দুর্ভিক্ষের এই দাবি ভিত্তিহীন এবং হামাসের প্রচারণার অংশ।’ তবে আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলো বলছে, গাজার ২১ লাখ মানুষের জন্য এখনো যথাযথ সহায়তা পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। তাদের মতে, ইসরায়েলের বাধার কারণে খাদ্য ও ওষুধ যথাসময়ে মানুষের হাতে পৌঁছাচ্ছে না।
জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, গাজা উপত্যকার মোট জনসংখ্যার মধ্যে অন্তত পাঁচ লাখ মানুষ তীব্র ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে ভুগছে। প্রয়োজনীয় সহায়তা না পৌঁছালে দুর্ভিক্ষ আরও ঘনীভূত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
চলমান পরিস্থিতিতে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস শান্তি প্রক্রিয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমরা এই পরিস্থিতি আর চলতে দিতে পারি না।’
জাতিসংঘের এই ঘোষণা এমন সময়ে এলো যখন ইসরায়েল পুরো উপত্যকা দখলে নিতে গাজা সিটিতে পূর্ণমাত্রার সামরিক অভিযানের প্রথম ধাপ শুরু করেছে। হামলার তীব্রতায় তাঁবুতে থাকা বিপন্ন ফিলিস্তিনিরা দিগ্বিদিক ছুটছেন। অন্তত ১০ লাখ মানুষ আবারও বাস্তুচ্যুতির ঝুঁকিতে আছেন।
বাংলাফ্লো/এনআর
Comments 0