আন্তর্জাতিক ডেস্ক ঢাকা
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্বের অনেক দেশের ওপর নতুন করে যে শুল্ক আরোপ করেছেন তা আজ থেকেই কার্যকর হয়েছে। এতে ট্রাম্পের নেতৃত্বে চলা বাণিজ্যযুদ্ধ আরও তীব্র হলো। ট্রাম্প মধ্যরাতে তার সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, এখন মধ্যরাত! বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের শুল্ক আমেরিকায় ঢুকছে!
বাংলাদেশি পণ্যের ওপর আরোপিত বাড়তি শুল্কের হার ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
তবে বুধবার (৬ আগস্ট) ট্রাম্প ভারতের ওপর শুল্ক আরও বাড়িয়ে মোট ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন। কারণ তিনি চান বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম জ্বালানি আমদানিকারক দেশটি রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করুক।
ভারত এই সিদ্ধান্তকে অন্যায়, অযৌক্তিক ও ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছে। ভারতের ওপর এই শুল্ক ২৭ আগস্ট থেকে কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, যদি প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো আমেরিকায় বিনিয়োগ না করে তাহলে বিদেশে তৈরি কম্পিউটার চিপের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক বসানো হবে।
এরপর অ্যাপল ঘোষণা দেয় তারা আমেরিকায় ১০০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ করবে। এর আগে ট্রাম্প প্রশাসন নতুন করে আমদানি পণ্যের তালিকা তৈরি করে এবং দেশগুলোকে চুক্তি করার জন্য ৭ আগস্ট পর্যন্ত সময় দেয়।
অনেক দেশ এখন আমেরিকার সঙ্গে চুক্তি করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে যেন শুল্ক কমানো বা বাদ দেওয়া যায়। ট্রাম্প মনে করেন, আমেরিকাকে বাকি দুনিয়া ঠিকমতো বাণিজ্যের সুযোগ দেয় না। এই শুল্ক আরোপের কারণে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ যেমন লাওস ও মিয়ানমার সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের ওপর ৪০ শতাংশ শুল্ক বসানো হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেসব দেশের সঙ্গে চীনের ভালো ব্যবসায়িক সম্পর্ক আছে, ট্রাম্প সেসব দেশকেই টার্গেট করছেন।
তবে যুক্তরাজ্য, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়ার মতো কিছু বড় দেশ আগেই আমেরিকার সঙ্গে চুক্তি করে শুল্ক কমিয়ে নিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নও একটি চুক্তি করেছে, যেখানে তারা ১৫ শতাংশ শুল্ক মেনে নিয়েছে।
তাইওয়ানের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক বসানো হয়েছে, তবে দেশটির প্রেসিডেন্ট বলেছেন এটা অস্থায়ী এবং আলোচনাও চলছে। কানাডার ওপর শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ শতাংশ করা হয়েছে কারণ ট্রাম্প বলছেন, তারা মাদক পাচার ঠেকাতে সাহায্য করছে না।
তবে কানাডার বেশিরভাগ পণ্য আগের এক চুক্তির কারণে এই শুল্কের বাইরে থাকবে। মেক্সিকোর ওপর বাড়তি শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত রাখা হয়েছে এবং আলোচনা চলছে।
বুধবার ট্রাম্প বলেন, বিদেশে তৈরি সেমিকন্ডাক্টরের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক বসানো হবে। তবে যেসব কোম্পানি আমেরিকায় অনেক বিনিয়োগ করেছে, যেমন- টিএসএমসি, স্যামসাং, এসকে হাইনিক্স তারা এই শুল্ক থেকে রেহাই পাবে।
ব্রাজিলের ওপরও ৫০ শতাংশ শুল্ক বসানো হয়েছে। ট্রাম্প বলছেন, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট আমেরিকার প্রযুক্তি কোম্পানিকে অন্যায়ভাবে আক্রমণ করছেন এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট বলসোনারোর বিরুদ্ধে মামলা চালানোকে উইচ হান্ট বলছেন।
এদিকে চীন ও আমেরিকা একসঙ্গে বসে আলোচনা করছে যেন ১২ আগস্ট শেষ হতে যাওয়া ৯০ দিনের শুল্ক বিরতির সময়সীমা বাড়ানো যায়।
বাংলাফ্লো/এফএ
Like
Dislike
Love
Angry
Sad
Funny
Wow
Comments 0