বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ইউক্রেনকে ন্যাটো ও ক্রিমিয়ার আশা ছাড়তে বললেন ট্রাম্প

রাশিয়ার সঙ্গে চলমান যুদ্ধ চাইলে মুহূর্তেই বন্ধ করতে পারেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি— রবিবার এমন মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাফ্লো ডেস্ক

ঢাকা: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনকে ন্যাটোতে যোগদান এবং রাশিয়ার দখলে থাকা ক্রিমিয়া পুনরুদ্ধারের আশা ছেড়ে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। রাশিয়ার সঙ্গে চলমান যুদ্ধ চাইলে মুহূর্তেই বন্ধ করতে পারেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি— রবিবার এমন মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার (১৮ আগস্ট) ওয়াশিংটনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের আগে তিনি এ অবস্থান জানান। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলাস্কায় বৈঠকের পর এবার ইউক্রেনের ওপর চাপ দিচ্ছেন ট্রাম্প। ইউরোপে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘাতের অবসানে কিয়েভকে শান্তিচুক্তি মেনে নিতে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করছেন তিনি। এ যুদ্ধ ইতোমধ্যে লাখো মানুষকে বাস্তুচ্যুত করেছে, প্রাণ হারিয়েছেন দশ হাজারেরও বেশি।

হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, ট্রাম্প প্রথমে জেলেনস্কির সঙ্গে এবং পরে ব্রিটেন, জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি, ফিনল্যান্ড, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটো নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। ইউরোপীয় নেতারা একযোগে ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তার দাবি তুলতে ওয়াশিংটনে পৌঁছেছেন।

রবিবার নিজের প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লিখেছেন, জেলেনস্কি চাইলে যুদ্ধ প্রায় সঙ্গে সঙ্গে শেষ করতে পারেন, অথবা লড়াই চালিয়ে যেতে পারেন। তবে মনে রাখতে হবে, ওবামার আমলে কোনও গুলি ছাড়াই ক্রিমিয়া হারানো হয়েছে, আর ইউক্রেনের জন্য ন্যাটো নয়।

ইউক্রেন ও এর মিত্ররা আশঙ্কা করছেন, ট্রাম্প হয়তো মস্কো-সমর্থিত সমঝোতার জন্য চাপ সৃষ্টি করবেন। তবে তারা কিছুটা স্বস্তি পেয়েছেন এই কারণে যে, ট্রাম্প যুদ্ধ-পরবর্তী পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চয়তার ইঙ্গিত দিয়েছেন।

পুতিনের প্রস্তাব অনুযায়ী ইউক্রেনকে ডনেস্ক অঞ্চলের বাকি অংশ ছেড়ে দিতে হবে। কিন্তু জেলেনস্কি এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে জানিয়েছেন, তিনি তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি এবং পরবর্তী সময়ে শান্তি আলোচনার পক্ষে। তবে পুতিনের সঙ্গে শীর্ষ বৈঠকের পর ট্রাম্প রাশিয়ার দাবির প্রতিই সমর্থন জানিয়েছেন।

ট্রাম্প বলেন, ‘জেলেনস্কি যদি দোনেৎস্ক অঞ্চলের পুরোটা ছেড়ে দেন, তাহলে একটি শান্তিচুক্তি সম্ভব হতে পারে।’ তিনি আরো বলেন, ‘যুদ্ধ বন্ধে ইউক্রেনের রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি একটি চুক্তি করা উচিত। কারণ, রাশিয়া একটি বড় শক্তি, ইউক্রেন তা নয়।’

ওয়াশিংটনে পৌঁছে রবিবার রাতে জেলেনস্কি বলেন, আমরা সবাই চাই এই যুদ্ধ দ্রুত ও স্থায়ীভাবে শেষ হোক। রাশিয়াই এই যুদ্ধ শুরু করেছে, রাশিয়ারই শেষ করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় বন্ধুদের সঙ্গে এক হয়ে আমরা শান্তি আনতে চাই।

এদিকে ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় সাতজন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্য অনুযায়ী, আবাসিক ভবনে হামলার ঘটনায় একাধিক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ইউরোপীয় নেতাদের আশঙ্কা, পুতিন-ট্রাম্প বৈঠকে তাদের বাইরে রাখা হয়েছে। তাই তারা আগেভাগেই জেলেনস্কির সঙ্গে সমন্বয় করেন। জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োহান ওয়াদেফুল বলেছেন, যদি বলি এখন পুরো বিশ্বের চোখ ওয়াশিংটনের দিকে তাহলে খুব একটা বাড়িয়ে বলা হবে না।

ট্রাম্পের জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউজে ফেরার পর থেকে কিয়েভ-ওয়াশিংটনের সম্পর্ক টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তা ও গোয়েন্দা তথ্যের ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় জেলেনস্কি বাধ্য হচ্ছেন ট্রাম্পের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যেতে।

বাংলাফ্লো/সিএস


Post Reaction

👍

Like

👎

Dislike

😍

Love

😡

Angry

😭

Sad

😂

Funny

😱

Wow

Leave a Comment

Comments 0