বাংলাফ্লো স্পোর্টস
ঢাকা: বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ৩ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশকে পাত্তা না দিয়ে জয় তুলে নেয় শ্রীলঙ্কা। তবে দ্বিতীয় ম্যাচেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশের টাইগাররা। আর তাই এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজে ফিরেছে সমতা। ব্যাট হাতে অধিনায়ক লিটন দাসের ফিফটি ও বল হাতে রিশাদ হোসেনের ঘূর্ণি ছিল ম্যাচের মূল হাইলাইট। আর তাতেই বাংলাদেশের টাইগাররা ৮৩ রানে হারাল শ্রীলঙ্কার সিংহদের।
রবিবার (১৩ জুলাই) দাম্বুলায় সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে দুর্দান্ত অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে স্বাগতিকদের ৮৩ রানে হারিয়ে সিরিজে ১-১ সমতায় ফিরেছে বাংলাদেশ।
এ দিন, টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো ছিল না বাংলাদেশের। ৭ রানে দুই ওপেনার ফিরে যান। ইনিংসের প্রথম ওভারেই সাজঘরে ফেরেন পারভেজ হোসেন ইমন। রানের খাতা খোলার আগেই তিন বলে শূন্য রানে বোল্ড হয়ে গেছেন ইমন।
পরের ওভারেই ফেরেন আরেক ওপেনার তানজিদ তামিম। বিনুরা ফার্নান্দোর অফ স্টাম্পের সামান্য বাইরের গুড লেংথের বলে ড্রাইভ করতে গিয়েছিলেন তামিম। তবে তা তার ব্যাটে ঠিকঠাক লাগেনি। শর্ট থার্ডম্যানে দাঁড়ানো কুশাল পেরেরা দারুণ এক ক্যাচ নেন। ৮ বলে ৫ রান করেছেন এই ওপেনার।
সাম্প্রতিক সময়ে সাদা বলের ক্রিকেটে ব্যাট হাতে বেশ ভুগছেন লিটন দাস। ধারবাহিক ব্যর্থতায় অধিনায়কের একাদশে অন্তর্ভুক্তি নিয়েও প্রশ্ন উঠছিল! অবশেষে রানের দেখা পেলেন তিনি।
এ দিন দলের প্রয়োজনে হাল ধরেন অধিনায়ক লিটন দাস। তাওহীদ হৃদয়ের সঙ্গে বড় জুটি গড়েন তিনি।এই দুইজনের ৬৯ রানের জুটিতে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। ২৫ বলে ৩১ রান করে হৃদয় ফিরলে ভাঙে সেই জুটি।
পাঁচে নেমে ব্যর্থ হন মিরাজ।
এরপর শামীম হোসেনের সঙ্গে আরও এক কার্যকরী জুটি গড়েন লিটন।
লিটনের ব্যাট থেকে আসে ৫০ বলে ৭৬ রানের ক্যাপ্টেনস ইনিংস, যেখানে ছিল ৫টি ছক্কা। ৩৯ বলে পান ব্যক্তিগত ফিফটির দেখা। ১৩ ইনিংস পর এই সংস্করণে ফিফটি পেলেন তিনি। সবমিলিয়ে ৫০ বলে করেছেন ৭৬ রান।
এ দিন শামীম হোসেন ২৭ বলে খেলেন ৪৮ রানের ঝড়ো ইনিংস। এই দুজনের দাপটে বাংলাদেশ ২০ ওভারে তুলে ফেলে ১৭৭ রান।
১৭৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই চাপে পড়ে শ্রীলঙ্কা। দ্বিতীয় ওভারেই কুশল মেন্ডিস রান আউট হন শামীমের সরাসরি থ্রোতে। এরপর একে একে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে লঙ্কান ব্যাটাররা। পাওয়ারপ্লের মধ্যেই ৪ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে অনেকটাই ছিটকে পড়ে তারা।
নতুন বলে বাংলাদেশকে ভালো শুরু এনে দেন দুই পেসার শরীফুল ইসলাম ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। তাদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে চাপে পড়ে রান আউটের শিকার হয়েছেন কুশল মেন্ডিস। ৫ বলে ৮ রান করেছেন তিনি।
এরপরই যেন আগুন ঝরান বাংলাদেশি পেসাররা। পাওয়ার প্লের মধ্যেই তুলে নেন ৪ উইকেট। ৩০ রানের মধ্যেই টপ অর্ডারের চার ব্যাটারকে হারিয়ে শুরুতেই বিপাকে পড়ে শ্রীলঙ্কা। সেখান থেকে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে একশর আগেই অলআউট হয়।
বাংলাদেশের হয়ে ১৮ রানে ৩ উইকেট পেয়েছেন রিশাদ হোসেন। এ ছাড়া দুটি করে উইকেট পেয়েছেন সাইফউদ্দিন ও শরীফুল।
বাংলাদেশ ৮৩ রানে ম্যাচ জিতলেও একটা আক্ষেপ অবশ্য রয়ে যায়। কারণ রানের হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জয়ের হাতছানিটা ছোঁয়া হলো না।
২০২১ বিশ্বকাপে পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে ৮৪ রানের জয়ের রেকর্ডটাই থেকে গেল বাংলাদেশের রানের হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বড় জয়। তবে ‘আইসিসির পূর্ণ সদস্য দেশের বিপক্ষে’ শর্তটা যোগ করলে আবার ডাম্বুলার এই জয়ই বিশেষ হয়ে যায়।
এর আগে গত ডিসেম্বরে কিংসটাউনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৮০ রানের জয়ই ছিল টি-টোয়েন্টিতে পূর্ণ সদস্য কোনো দেশের বিপক্ষে রানের হিসেবে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জয়, শ্রীলঙ্কাকে ৯৪ রানে গুটিয়ে দিয়ে আজ সেই রেকর্ড নতুন করে লিখল বাংলাদেশ।
৮৩ রানের এই জয়ে সিরিজেও ফেরাল সমতা। আগামী বুধবার কলম্বোতে তৃতীয় টি-টোয়েন্টি হয়ে গেল সিরিজনির্ধারণী।
বাংলাফ্লো/এসবি
Comments 0