বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

‘উনারা মুখে সংস্কার মানেন, কিন্তু সংস্কারকে বৈধতা দিতে চান না’

সোমবার (৪ আগস্ট) রাজধানীর শাহবাগে ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম আয়োজিত চিকিৎসক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাফ্লো প্রতিনিধি.

ঢাকা: তারা মুখে সংস্কার মানে, কথায় কথায় প্রতিশ্রুতি দেয়; কিন্তু সেই সংস্কারকে আইনগত ভিত্তি দিতে চায় না উল্লেখ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, সংস্কার নিয়ে কিছু রাজনৈতিক দলের অবস্থানকে দ্বিমুখী ও আত্মঘাতী।

সোমবার (৪ আগস্ট) রাজধানীর শাহবাগে ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম আয়োজিত চিকিৎসক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

ডা. তাহের বলেন, কিছু দল বলছে, ‘আমরা সব সংস্কার মানী, সাইন করে দিতেও সমস্যা নেই’। মনে হয় তারা খুব সংস্কারপন্থি, খুবই ভালো মানুষ। কিন্তু এরপরই বলছে, এটাকে আইনগত ভিত্তি দিতে হবে না। তাহলে তো তাদের বক্তব্য দাঁড়ায়—‘আমি সালিশ মানী, কিন্তু তালগাছ আমার’। একদিকে ওয়াদা করবে, আবার বলবে—‘ওয়াদা ভঙ্গ করব না।’ অথচ কার্যকর করার জন্য যে আইনগত কাঠামো দরকার, সেটি মানতে রাজি নয়।

সংস্কারের আইনি ভিত্তি না থাকলে বাস্তবায়ন অসম্ভব, এমনটা জানিয়ে জামায়াত নায়েবে আমির বলেন, আমরা রক্ত দিয়েছি, জীবন দিয়েছি। তাই শুধু স্বীকৃতিই যথেষ্ট নয়। পঙ্গুদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে, বঞ্চিতদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। এবং সবচেয়ে জরুরি হলো—এত বড় আন্দোলনের চূড়ান্ত অর্জন যেন বাস্তবে বাস্তবায়িত হয়।

তিনি আরও বলেন, একটা দল বলছে, আমরা সব সংস্কার মানী। কিন্তু তারা চার্টারে সই করতে চায় না, আইনি কাঠামো চায় না। তারা কেবল প্রতিশ্রুতির ভরসায় জনগণকে বোঝাতে চায়—যে আমরা ‘ওয়াদা করছি, ভঙ্গ করব না।’ এটা জনগণ মেনে নেবে—এমন চিন্তা করে থাকলে সেটা ভয়ংকর আত্মপ্রবঞ্চনা।

সংস্কারের আইনগত ভিত্তি ও জাতীয় ঐক্যের জন্য সব পক্ষকে দায় নিতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি আরও বলেন, গত ১৫–১৬ বছর ধরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সংগ্রাম করেছে, ত্যাগও দিয়েছে। কিন্তু তারা সেমিফাইনাল পর্যন্ত খেলতে পেরেছে, ফাইনাল খেলেছে জনগণ। নেতৃত্ব দিয়েছে ছাত্ররা। এটাই আন্দোলনের প্রকৃত রূপ—সামষ্টিক অংশগ্রহণ।

ডা. তাহের বলেন, পৃথিবীতে অনেক আন্দোলন হয়েছে, কিন্তু এই আন্দোলনের আলাদা বৈশিষ্ট্য হচ্ছে—এখানে সবাই অংশ নিয়েছে। ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, নার্স তো ছিলই, এমনকি হাসপাতালের রোগীরাও আন্দোলনে অংশ নিয়েছে। শিশুরাও রাস্তায় নেমেছে। একদিন দেখেছি, একজন মা কোলে শিশু নিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে। এই বিপ্লবে তাই সবার অংশগ্রহণ রয়েছে। এরকম সর্বজনীন অংশগ্রহণ এই দেশের ইতিহাসে বিরল।

বাংলাফ্লো/এনআর

Leave a Comment

Comments 0