বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বহিরাগতদের হামলায় বাকৃবিতে শিক্ষার্থীরা আহত

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়েছে বহিরাগতরা।

ছবি: সংগৃহীত

জেলা প্রতিনিধি

ময়মনসিংহ: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পর এবার বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়েছে বহিরাগতরা। রবিবার (৩১ আগস্ট) সন্ধ্যা পৌনে ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনের সামনের এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এতে একজন নারী শিক্ষার্থীসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। হামলার সময় ককটেল বিস্ফোরণের শব্দও শোনা যায়।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের পশুপালন ও ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থীরা ‘কম্বাইন্ড ডিগ্রির’ (বিএসসি ইন ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি) দাবিতে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে রবিবার বেলা ১১টায় একাডেমিক কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়। শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনে এ সভায় কম্বাইন্ড ডিগ্রি চালুর পাশাপাশি পশুপালন ও ভেটেরিনারি ডিগ্রিও চালু রাখার সিদ্ধান্ত হয়। তবে মোট তিনটি ডিগ্রি চালু রাখার সিদ্ধান্ত মেনে নিচ্ছেন না আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। একাডেমিক কাউন্সিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব অনুষদের দুই শতাধিক শিক্ষক অংশগ্রহণ করেন।

সভা শেষে তিন ডিগ্রি চালুর সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর দুপুর দেড়টার দিকে ‘এক পেশায় এক ডিগ্রি (কম্বাইন্ড ডিগ্রি)’ দাবিতে মিলনায়তনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। এতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়াসহ শিক্ষকরা। খবর পেয়ে রাত ৮টার দিকে ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ক্যাম্পাসে উপস্থিত হন। তারা অবরুদ্ধ শিক্ষকদের সেখান থেকে বের করে আনেন।

কয়েকজন শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, অবরুদ্ধ থেকে মুক্ত হয়ে শিক্ষকরা বেরিয়ে আসার পর জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনের সামনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় বহিরাগতরা। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বহিরাগতরাও ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়ে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পশুপালন অনুষদের এক শিক্ষার্থী বলেন, যৌক্তিক দাবিতে শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করায় আমাদের ওপর প্রশাসন বহিরাগতদের লেলিয়ে দিয়ে হামলা চালিয়েছে। হামলা চলাকালে শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে আশ্রয় নিলে সেখানেও হামলা ও ভাঙচুর করা হয়েছে। এ সময় বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। হামলায় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন।

পশুপালন অনুষদের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, শিক্ষকরা অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে বাইরে আসার সঙ্গে সঙ্গে একদল বহিরাগত আমাদের ওপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে জেলা প্রশাসকের সামনে হামলা চালায়। এতে আমাদের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. আসাদুজ্জামান সরকার বলেন, পশুপালন ও ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আজকে একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। ডিন কাউন্সিলের আহ্বায়ককে প্রধান করে একটি চার সদস্যবিশিষ্ট কমিটি করা হয়েছে, যারা কম্বাইন্ড ডিগ্রির জন্য কোর্স কারিকুলাম প্রণয়ন করবে। আগামী সেশন থেকে কম্বাইন্ড কোর্সে ১৫০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হবে। এবার যারা ভর্তি হয়েছে, তাদের অপশন থাকবে তারা চাইলে ভেটেরিনারি, পশুপালন বা কম্বাইন্ড নিতে পারবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী দুই অনুষদকে এক করতে পারবেন না। দুই অনুষদ মিলিতভাবে কম্বাইন্ড ডিগ্রি দেবে এবং ধারাবাহিকভাবে দুই অনুষদ থেকেই ডিন হবে।

বাংলাফ্লো/সিএস


Post Reaction

👍

Like

👎

Dislike

😍

Love

😡

Angry

😭

Sad

😂

Funny

😱

Wow

Leave a Comment

Comments 0