বুধবার, ৬ আগস্ট ২০২৫

ঘোষণাপত্রে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নেই: আখতার

আখতার হোসেন বলেন, এনসিপি শিগগিরই একটি বিকল্প নাগরিক ঘোষণা প্রকাশ করবে, যেখানে এসব আন্দোলনের যথাযথ মূল্যায়ন থাকবে।

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাফ্লো প্রতিনিধি

ঢাকা: জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক ঘোষিত ঐতিহাসিক জুলাই ঘোষণাপত্র অনেক গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হলেও এতে দেশের সাম্প্রতিক ইতিহাসের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ও আন্দোলনের উল্লেখ না থাকায় তা পরিপূর্ণ হয়নি। তিনি আরও বলেন, সরকার গতকাল ঐতিহাসিক জুলাই ঘোষণাপত্র দিয়েছে কিন্তু এতে দেশের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অনুপস্থিত রয়ে গেছে।

বুধবার (৬ আগস্ট) জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে এনসিপির প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

আখতার হোসেন বলেন, ‘জুলাই ঘোষণাপত্র নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। তবে আমরা অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি যে, এতে পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা চত্বরের গণহত্যা, জুডিসিয়াল কিলিং, ভ্যাটবিরোধী আন্দোলন, ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, আবরার ফাহাদ হত্যার বিরুদ্ধে আগ্রাসনবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং মোদিবিরোধী প্রতিবাদ— এই জাতীয় আন্দোলনগুলোর কোনো উল্লেখ নেই।’

তিনি আরও বলেন, এই ঘটনাগুলো আমাদের জাতীয় চেতনা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের ইতিহাসে গভীরভাবে জড়িত। এগুলোর স্বীকৃতি ছাড়া জাতির পূর্ণাঙ্গ পুনর্জাগরণ সম্ভব নয়। এনসিপি শিগগিরই একটি বিকল্প নাগরিক ঘোষণা প্রকাশ করবে, যেখানে এসব আন্দোলনের যথাযথ মূল্যায়ন থাকবে।

এছাড়া তিনি বলেন, গত ১৬ বছরে বাংলাদেশের মানুষ বহু আন্দোলন-সংগ্রাম করেছে। কিন্তু এসবের মধ্যে কিছু সংগ্রাম আমাদের জাতীয় জীবনে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলেছে, যা ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ পর্ব হয়ে উঠেছে। এসব উল্লেখ করলে ঘোষণাপত্রটি জাতির জন্য গর্বের দলিল হতে পারত।

ঘোষণাপত্রের ভাষা ও কাঠামো নিয়েও প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, এক হাজার শব্দের ঘোষণাপত্রে জাতিসংঘ স্বীকৃত জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে এক হাজার ৪০০ নিহত নিয়ে কোনো তথ্য নেই। আহত এবং নিহতের প্রকৃত সংখ্যা নির্ধারণে সরকার এখনও ব্যর্থ। এ ব্যর্থতার প্রতিফলন ঘোষণাপত্রেও রয়েছে।

আখতার হোসেন বলেন, ঘোষণাপত্রে উপনিবেশ বিরোধী লড়াইয়ের কথা বলা হলেও ১৯৪৭ সালের ভাষা ও অধিকারভিত্তিক সংগ্রামের উল্লেখ নেই। ১৯৪৭, ১৯৭১ এবং ২০২৪—এই তিনটি যুগান্তকারী গণআন্দোলনের ইতিহাস ঘোষণাপত্রকে সমৃদ্ধ করতে পারত। আমরা বহুদিন ধরেই একটি নতুন সংবিধানের দাবি জানিয়ে আসছি। গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের অংশগ্রহণে নতুন সংবিধান রচনার পথ এখনই খুলে দেওয়া প্রয়োজন। নির্বাচন শুধু নির্বাচন নয়, সেটি হতে হবে একটি নতুন গণতান্ত্রিক চুক্তির সূচনা।

সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনপূর্ব প্রক্রিয়ায় বিচার সংস্কার এবং ‘লেভেল প্লেইং ফিল্ড’ নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়ে আখতার হোসেন বলেন, এই অন্তর্বর্তী সময়ে যদি ন্যায়বিচার, রাজনৈতিক সমতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত না হয়, তবে গণতন্ত্র নতুন করে জন্ম নিতে পারবে না।

বাংলাফ্লো/সিএস


Post Reaction

👍

Like

👎

Dislike

😍

Love

😡

Angry

😭

Sad

😂

Funny

😱

Wow

Leave a Comment

Comments 0