বাংলাফ্লো প্রতিনিধি
ঢাকা: ঢাকার জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীদের চলমান কর্মবিরতির চতুর্থ দিনে বন্ধ রয়েছে চিকিৎসাসেবা। নিরাপত্তাহীনতার কারণে প্রতিদিন শত শত রোগীকে চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে।
শনিবার সকালে হাসপাতাল প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, পুরো এলাকায় বিরাজ করছে থমথমে পরিবেশ। হাসপাতালের দুটি প্রধান গেট তালাবদ্ধ, ভেতরে অবস্থান করছে পুলিশ সদস্যরা। সকাল থেকেই অনেক রোগী চিকিৎসার আশায় এলেও তারা সেবা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছেন প্রায় ৫০ জন ‘জুলাই যোদ্ধা’। আত্মহত্যার চেষ্টা করা চারজনকে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং একজনকে সিএমএইচে স্থানান্তর করা হয়েছে। ইতিমধ্যে নিরাপত্তার অভাবে হাসপাতাল ছেড়েছেন প্রায় ১৫০ জন সাধারণ রোগী।
২৫ মে জুলাই-আগস্ট গণআন্দোলনের আহত চারজন হাসপাতালে বিষপান করেন। এ ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। প্রথমে নিজেদের মধ্যে এবং পরে হাসপাতালের পরিচালকের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয়। ২৭ মে কয়েকজন বিক্ষোভকারী পরিচালকের কক্ষে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করেন।
এ ঘটনার প্রতিবাদে চিকিৎসক, নার্স ও হাসপাতালকর্মীরা ২৮ মে সকাল থেকে কর্মবিরতি শুরু করেন। বন্ধ করে দেওয়া হয় বহির্বিভাগের সেবা এবং নিয়মিত অস্ত্রোপচার কার্যক্রম।
২৮ মে বেলা ১১টার দিকে সাধারণ রোগী ও আন্দোলনে আহতদের সঙ্গে চিকিৎসক-কর্মীদের মধ্যে কথা কাটাকাটি থেকে শুরু হয় হাতাহাতি, যা পরে রূপ নেয় সংঘর্ষে। পরে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোর) থেকে আসা আন্দোলনকারীরাও এতে যোগ দেন।
আন্দোলনকারীরা হাসপাতালের আবাসিক ভবনে হামলা চালান এবং কর্মচারীদের শাস্তির দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা হস্তক্ষেপ করেন।
এরপর থেকে আতঙ্কে হাসপাতাল ত্যাগ করেছেন চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং অনেক রোগী ও তাদের স্বজন।
চলমান এই অচলাবস্থা কবে নাগাদ নিরসন হবে, সে বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা পাওয়া যায়নি।
বাংলাফ্লো/এসও
Comments 0