স্পোর্টস ডেস্ক
ঢাকা: সৌদি ট্যুরিজম কর্তৃপক্ষের ভোক্তাবান্ধব ব্র্যান্ড ‘সৌদি আরবের হৃদয়ে স্বাগতম’ নামে নতুন একটি ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করেছে। ক্যাম্পেইনের কেন্দ্রে রয়েছেন সিআর-সেভেনখ্যাত ফুটবল সুপারস্টার ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। ক্যাম্পেইনটি ইউরোপ, ভারত, চীনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মার্কেটে পরিচালিত হবে। ‘ফুটবলের টানে এসেছিলাম, আরো কিছুতে বাঁধা পড়লাম’ স্লোগানের মাধ্যমে সৌদিতে প্রত্যাশার চেয়ে অনেক বেশি কিছু উপভোগের সুযোগ তুলে ধরা হবে। এর মাধ্যমে সৌদিতে শুরু হতে যাওয়া বিশ্বমানের ক্রীড়া, চমকপ্রদ বিনোদন, মনোমুগ্ধকর চলচ্চিত্র, ফ্যাশন এবং সাংস্কৃতিক ইভেন্টের দীর্ঘ সিজনের ঘোষণা প্রদান করা হয়েছে। টেলিভিশন, সোশ্যাল মিডিয়া, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম এবং অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সীর মাধ্যমে পরিচালিত ক্যাম্পেইনে বিশ্বের অন্যতম আকর্ষণীয় গন্তব্যের ইভেন্ট ক্যালেন্ডার প্রচারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
ক্যাম্পেইনে সিআর সেভেন খ্যাত ফুটবল সুপারস্টার ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোকে দেখা যাবে, যিনি বর্তমানে সৌদির একজন সম্মানিত বাসিন্দা। ক্যাম্পেইন ভিডিওতে তিনি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্টে ভিউয়ারদের সঙ্গী হবেন। সাদাকালো দৃশ্য ক্রমে রঙিন ও প্রানবন্ত হয়ে উঠতে দেখা যাবে, যা সিআর সেভেনকে সৌদির ব্যাপারে প্রলুব্ধ করেছে। দর্শকদের উত্তেজনা, উল্লাসের গর্জন, আবেগের ঢেউ তুলে ধরা হয়েছে ভিডিওতে। এটিই হলো সৌদি যা এখন বিশ্বমঞ্চে নিজস্ব অবস্থান প্রতিষ্ঠিত করতে আগ্রহী।
ক্যাম্পেইনে রিয়াদ, জেদ্দা এবং আলউলাজুড়ে আয়োজিত বছরব্যাপী আয়োজিত বৈচিত্র্যময় ক্রীড়া ও বিনোদন ইভেন্টগুলো বিশেষ গুরুত্ব পাবে। আগামী বছরগুলোতে সৌদি গুরুত্বপূর্ণ কিছু বৈশ্বিক ইভেন্ট আয়োজন করতে যাচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে ফিফা ওয়ার্ল্ডকাপ ২০৩৪, এএফসি এশিয়ান কাপ ২০২৭, ই-স্পোর্টস অলিম্পিক গেমস ২০২৭, এশিয়ান উইন্টার গেমস ২০২৯। এসকল ইভেন্ট আয়োজনের মাধ্যমে সৌদি নিজেদেরকে একটি বৈশ্বিক ক্রীড়াকেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। ই-স্পোর্টস ওয়ার্ল্ড কাপ, ফর্মুলা ওয়ান, ডাকার র্যালি, আল্টিমেট ফাইটিং চ্যাম্পিয়নশীপ, প্রো ফাইটার্স লীগ, গলফ রিয়াদ, টেনিস, সৌদি প্রো লীগ এবং ওয়ার্ল্ড রেসলিং এন্টারটেইনমেন্ট এর মতো বিশাল আন্তর্জাতিক ইভেন্ট বার্ষিক ক্রীড়া পঞ্জিকায় যুক্ত করার মাধ্যমে ক্রীড়া হাব হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে সৌদির অবস্থান আরো সুদৃঢ় হয়েছে।
ক্রীড়া থেকে শুরু করে সংস্কৃতি ও বিনোদন সকলের জন্যই সৌদি কিছু না কিছু অফার করছে। তাদের বার্ষিক ক্যালেন্ডার ক্রমান্বয় বৃদ্ধি পাচ্ছে, বর্তমানে রিয়াদ এবং জেদ্দায় অনুষ্ঠিত ইভেন্টগুলোর মধ্যে রয়েছেঃ রিয়াদ ফ্যাশন সপ্তাহ, রেডসী আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব, আর্টস বিয়েনিয়াল এবং আকর্ষনীয় শিরোনামে বিভিন্ন সিজন।
সৌদি ট্যুরিজম কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী ফাহদ হামিদাদ্দিন তার মন্তব্যে বলেন, ক্যাম্পেইনে সিআর সেভেনকে যুক্ত করার মাধ্যমে আমরা বোঝাতে চাচ্ছি আধুনিক সৌদিকে এবং ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছি আমদের উচ্চাকাংখা। আমাদের ভিশনের অন্যতম মুল উপাদান হলো ট্যুরিজম এবং আমরা ক্রমাগত আমাদের অফারগুলোর পরিসর বৃদ্ধি করছি। ২০১৮ সাল থেকে আমরা ১০০টির বেশি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক ইভেন্ট আয়োজন করেছি এবং এই সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০৩০ সাল নাগাদ আমরা ১৫০ মিলিয়ন ভিজিটরের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করার পথে রয়েছি। বিশ্বমানের এই ইভেন্ট থেকে শুরু করে আইকমিক সাইট এবং অপরুপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নিয়ে সৌদি হয়ে উঠছে বিশ্বের অন্যতম একটি আকর্ষণীয় একটি পর্যটন গন্তব্য। আমরা পুরো বিশ্বকে আমন্ত্রন জানাচ্ছি আরবের হৃদয়ে, কিছু সময় এখানে কাটাতে, শীতকালীন রৌদ্রস্নানের অভিজ্ঞতা অর্জন এবং চোখে সামনে ভবিষ্যতের গল্প প্রস্ফুটিত হতে।
ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো এ প্রসঙ্গে বলেন, বৈশ্বিক ক্রীড়া হাব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সৌদি যাত্রায় অংশগ্রহণ করতে পারাটা সত্যিকার ভাবেই বিশেষ অর্থ বহন করে। কয়েক বছর আগেও আমার কাছে ব্যাপারটি ছিল অপ্রত্যাশিত। কিন্তু, বর্তমানে দাঁড়িয়ে এটাই সত্যি যে, ফ্যানদের এনার্জী থেকে শুরু করে প্রত্যাশার পারদ এর মাধ্যমেই রচিত হচ্ছে স্পোর্টসের ভবিষ্যৎ। সৌদির যে বিষয়টি আমাকে মুগ্ধ করে তা হল যে, তারা ভবিষ্যৎ বিনির্মানে নিজস্ব শিকড়কে সম্মান করে। উট থেকে শুরু করে ঘোড়া, রেসিং থেকে ই-স্পোর্টস, মরুভুমি থেকে স্টেডিয়াম এসবই রয়েছে সৌদিতে যেখানে প্রতিটি তরুণ এথলেট বড় কিছুর স্বপ্ন দেখতে পারে”।
ভিশন ২০৩০ অনুযায়ী অর্থনীতির বৈচিত্র্যকরণ এবং পর্যটন খাতের বিস্তারের অংশ হিসেবে সৌদি নিজেকে ইভেন্টের একটি বৈশ্বিক কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে বিনিয়োগ করছে। এই খাতটিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছে সৌদি, কারন ২০৩০ সাল নাগাদ দেশে এই শিল্পটির বাজার মূল্য দাঁড়াবে আনুমানিক ২২.৪ বিলিয়ন ডলার এবং জিডিপি’তে এর অবদান ১৬.৫ বিলিয়ন ডলারে পৌছুবে বলে আশা করা হচ্ছে। ইভেন্টকে বিশেষভাবে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে যা পর্যটকের সংখ্যা বৃদ্ধি, অবকাঠামোর উন্নয়ন, নতুন কর্মসংস্থান এবং তরুণ প্রজন্মের অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করে। স্টেডিয়াম, অ্যারেনা এবং তৃনমূল প্রোগ্রামে বিনিয়োগ, বৈশ্বিক স্পোর্টস ট্যুরিজম হিসেবেই নয় বরং বিস্তৃত বিনোদন সেক্টরে সৌদি নেতৃত্ব অর্জনে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।
চমকপ্রদ সৌদি ক্যালেন্ডারটি পেতে ক্লিক করুন
‘সৌদি আরবের হৃদয়ে স্বাগতম’ হলো সৌদি আরবের আন্তর্জাতিক ভোক্তামুখী পর্যটন ব্র্যান্ড, যা ভ্রমণকারীদের দেশটির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও আতিথেয়তা উপভোগের আহ্বান জানায়। এ ব্র্যান্ডের লক্ষ্য হলো সচেতনতামূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে সৌদির পর্যটন শিল্পকে এগিয়ে নেওয়া এবং ভ্রমণকারীদের জন্য নির্ভরযোগ্য তথ্য ও পরিকল্পনার সুযোগ তৈরি করা। বিশ্বের দ্রুততম বর্ধনশীল পর্যটন গন্তব্য হিসেবে আরবের হৃদয় -সৌদি, ভ্রমণকারীদের জন্য সারা বছর জুড়ে রোমাঞ্চকর বিভিন্ন অভিজ্ঞতা প্রদানে প্রস্তুত ।
বাংলাফ্লো/এসও
Like
Dislike
Love
Angry
Sad
Funny
Wow
Comments 0