বাংলাফ্লো প্রতিনিধি,
ঢাকা: সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী ও তার স্ত্রী হাসিনা গাজীসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দুদকের পৃথক পৃথক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালত এই আদেশ দেন।
অপর ব্যক্তিরা হলেন, সালমান এফ রহমানের ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান, আইএফআইসি ব্যাংকের সাবেক পরিচালক ও সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, সার্ভ কনস্ট্রাকশন এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের পরিচালক সারওয়াত সুলতানা মনামী, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুল ইসলাম, আইএফআইসি ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শাহ আলম সারোয়ার, সাবেক পরিচালক রাবেয়া জামালী, আর এ এম নাজমুস সাকিব, কামরুন নাহার আহমেদ, জাফর ইকবাল, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ মো. মাইনউদ্দিন, নুরুল হাসনাত ও বেক্সিমকো গ্রুপের ডেপুটি ম্যানেজার কৌশিক কান্তি পন্ডিত।
দুদকের উপপরিচালক ইয়াছির এক আবেদনে সালমান এফ রহমানসহ ১৩ জনের দেশত্যাগের নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন।
আবেদনে বলা হয়েছে, আসামি সালমান ফজলুর রহমানে কথিত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মনিরুল ইসলাম সহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে ঋনের নামে আইএফআইসি ব্যাংক পিএসসি, প্রিন্সিপাল শাখার অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। আসামিরা দেশ ছেড়ে বিদেশে পালিয়ে যেতে পারেন মর্মে তদন্তকালে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায় এবং এর ফলে তদন্ত কার্যক্রম বিঘ্নিত হতে পারে। এজন্য মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা একান্ত প্রয়োজন।
দুদকের উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ জুলফিকার গোলাম দস্তগীর গাজী ও হাসিনা গাজীর পৃথক দুই আবেদনে তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন।
গোলাম দস্তগীর আবেদনে বলা হয়, আসামি গোলাম দস্তগীর গাজী (৭৭) সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্বে থেকে অপরাধমূলক অসদাচরণ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে অবৈধ উপায়ে অসৎ উদ্দেশে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙে অসঙ্গতিপূর্ণ ২৩ কোটি ৫১ লাখ ৩৩ হাজার ৫৮২ টাকার মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জনপূর্বক ভোগ দখলে রেখেছেন।
গোলাম দস্তগীর গাজী ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামীয় ৬টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে মোট ১২৮ কোটি ৬১ লাখ ৬২ হাজার ৪৮৬ টাকা জমা ও ১২৮ কোটি ৩৯ লাখ ১৩ হাজার টাকা উত্তোলনসহ সর্বমোট ২৫৭ কোটি ৭৫ হাজার ৪৮৯ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করে মানিলন্ডারিং-এর সম্পৃক্ত অপরাধ দুর্নীতি ও ঘুষ সংঘটনের মাধ্যমে প্রাপ্ত অর্থ বা সম্পত্তির অবৈধ উৎস গোপন বা আড়াল করার অসৎ উদ্দেশে স্থানান্তর ও রূপান্তর করে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা তৎসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
হাসিনা গাজীর আবেদনে বলা হয়, আসামি হাসিনা গাজী (৭০), সাবেক পৌর মেয়র হিসাবে দায়িত্বে থেকে অপরাধমূলক অসদাচরণ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে অবৈধ উপায়ে অসৎ উদ্দেশ্যে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ৯ কোটি ৬৯ লাখ ২৪ হাজার ৫৫৫ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জনপূর্বক ভোগ দখলে রেখেছেন।
হাসিনা গাজী ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামীয় ৫টি ব্যাংক হিসাবে সন্দেহজনক ১৬ কোটি ২১ লাখ ৪৭ হাজার ৬৩৫ টাকা জমা ও ১৫ কোটি ৪৭ লাখ ৯০ হাজার ৮৭৮ টাকা উত্তোলনসহ সর্বমোট ৩১ কোটি ৬৯ লাখ ৩৮ হাজার ৫১৩ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করে মানিলন্ডারিং-এর সম্পৃক্ত অপরাধ দুর্নীতি ও ঘুষ সংঘটনের মাধ্যমে প্রাপ্ত অর্থ বা সম্পত্তির অবৈধ উৎস গোপন বা আড়াল করার অসৎ উদ্দেশে উহার হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তর করে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা তৎসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
বাংলাফ্লো/এনআর
Comments 0