স্পোর্টস ডেস্ক
ঢাকা:ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে রোমাঞ্চকর নামগুলোর একটি—রোনালদিনহো। মাঠের ভেতরে যেন এক জাদুকর, যার পায়ের ছোঁয়ায় বল নেচেছে, আর চোখে-মুখে ছিল চিরচেনা সেই ছেলেমানুষি হাসি।
খেলার মাঠ ছাড়লেও, ফুটবলের প্রতি ভালোবাসায় এতটুকু ভাটা পড়েনি তার। সম্প্রতি তিবলিসিতে বার্সেলোনার কিংবদন্তিদের নিয়ে আয়োজিত এক প্রীতি ম্যাচে আবারও সেই হাসিমাখা মুখ নিয়ে মাঠে ফিরেছিলেন তিনি। ১০ নম্বর জার্সি পরে, পুরনো সতীর্থদের সঙ্গে খেলে আরেকটি সন্ধ্যা স্মরণীয় করে রাখেন এই ব্রাজিলিয়ান জাদুকর। ম্যাচ শেষে কথা বলেন স্প্যানিশ দৈনিক মার্কার সঙ্গে। সেখানে উঠে আসে বার্সেলোনার বর্তমান, তরুণ ইয়ামাল, ব্যালন ডি'অর বিতর্ক, ভিনিসিয়ুস, এবং ব্রাজিলের ভবিষ্যৎ।
বিশ্বকাপজয়ী সাবেক এই ব্রাজিলিয়ান মহাতারকাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল—খেলা ছেড়ে যাওয়ার পর কী সবচেয়ে বেশি মিস করেন?
রোনালদিনহো: “সবকিছুই। সারাজীবন তো আমি শুধু এটিই করে এসেছি। কিন্তু সবচেয়ে বেশি মিস করি ড্রেসিংরুমের পরিবেশটা—বন্ধু, হাসাহাসি, খুনসুটি। এখন যখন পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে মাঠে নামি, মনে হয় আবার যেন সেই পুরনো দিনগুলো ফিরে পেয়েছি। ”
বার্সেলোনার বর্তমান দল সম্পর্কে বলেন, “টানা কঠিন সময় কাটানোর পর এখন দলটা আবার জয়ের ধারায় ফিরেছে। রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে জয়টা ছিল আত্মবিশ্বাস ফেরানোর জন্য বিশাল এক ধাপ। ভক্তদের মুখে হাসি ফেরা—এর চেয়ে বড় সাফল্য আর কী হতে পারে!”
রোনালদিনহোর বিশ্বাস, বার্সেলোনা খুব দ্রুত আবার ইউরোপ সেরা হবে। তার ভাষায়, “এই দলের খেলোয়াড়রা ভয়ডরহীন। তারা মাঠে নামে শুধু জেতার জন্য। প্রতিভা, ক্ষুধা—সবই আছে। আমি আশাবাদী, এই তরুণদের হাত ধরেই বার্সা আবার শিরোপা ফিরিয়ে আনবে। ”
তরুণ লামিনে ইয়ামালের পারফরম্যান্সে মুগ্ধ রোনালদিনহো। তিনি, “তুলনার মধ্যে আমি বিশ্বাস করি না। আমি, মেসি—আমরা আমাদের পথ তৈরি করেছি। লামিনে তার পথ তৈরি করছে। ও যেভাবে খেলছে, বয়স ভুলে যেতে হয়। ভবিষ্যৎ তার সামনে উজ্জ্বল, সে নিজেই তার ইতিহাস গড়বে। ”
ইয়ামালের ভবিষ্যৎ নিয়ে বেশ আশাবাদী রোনালদিনহো বলেন, “আমি অবশ্যই মনে করি, সে ব্যালন ডি’অরের যোগ্য। বয়স কোনো বাধা নয়, এমন খেলোয়াড় বছরে একবার আসে না। সে যদি এভাবে চালিয়ে যায়, একাধিকবারও জিততে পারে। ”
গত মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতার পরও ভিনিসিয়ুস ব্যালন ডি’অর না পাওয়ায় অনেকেই হতাশ। রোনালদিনহোও ব্যতিক্রম নন, “আমি নিশ্চিত, ভিনিসিয়ুস ব্যালন ডি’অর পাওয়ার যোগ্য ছিল। সে বড় ম্যাচে বড় পারফর্ম করেছে, শিরোপা এনে দিয়েছে। ”
স্পেনের কিছু অংশে ভিনিসিয়ুসকে ঘিরে বিতর্কের বিষয়েও মন্তব্য করেন তিনি: “সত্যি বলতে আমি জানতাম না। আমাদের দেশে সে বিশাল এক আইকন। সে যেমন খেলোয়াড়, তেমনই মানুষ হিসেবেও দারুণ। আমি তাকে নিয়ে গর্বিত। ”
আগামী বিশ্বকাপে ব্রাজিল দলের কোচ হিসেবে আসছেন কার্লো আনচেলত্তি—এই প্রসঙ্গে রোনালদিনহো বলেন: “আমি তাকে কাছ থেকে দেখেছি। একজন অসাধারণ কোচ, অসাধারণ মানুষ। তার নেতৃত্বে আমরা বিশ্বকাপ জিততেই পারি। ”
পিএসজি ছিল রোনালদিনহোর ইউরোপীয় ক্যারিয়ারের প্রথম ক্লাব। তাই এখনো ফ্রেঞ্চ জায়ান্টদের প্রতি এক ধরনের টান অনুভব করেন তিনি। “ওরা আমাকে ইউরোপে প্রথম সুযোগ দিয়েছিল। ওখানে অনেক স্মৃতি। আমি চাই, তারা এবার চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতুক। ”
বাংলাফ্লো/এসও
Comments 0