বাংলাফ্লো প্রতিনিধি,
ঢাকা: জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি ড. আলী রীয়াজ জানিয়েছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে চলমান সংলাপে আজকের আলোচনায় বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে অগ্রগতি হয়েছে।
তিনি বলেছেন, আমরা এখন এমন একটি পর্যায়ে পৌঁছেছি যেখানে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রয়োজন ও প্রস্তাবনার ভিত্তিতে একটি সমন্বিত সনদ তৈরি করা সম্ভব।
সোমবার (২৮ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
আলী রীয়াজ বলেন, জুলাই সনদের খসড়া রাজনৈতিক দলগুলোর হাতে দেওয়া হয়েছে। সে বিষয়ে পরামর্শ বা সংশোধনী ৩০ জুলাই দুপুর ১২টার মধ্যে জানাতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। দলগুলোর প্রস্তাব ও পরামর্শের ভিত্তিতে ওইদিনই সনদের চূড়ান্ত খসড়া প্রস্তুতের চেষ্টা থাকবে।
চারটি সাংবিধানিক নিয়োগ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়ে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আজকের আলোচনায় চারটি সাংবিধানিক বা সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে- সরকারি কর্মকমিশন, মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, দুর্নীতি দমন কমিশন এবং ন্যায়পাল। কমিশনের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, এ নিয়োগগুলো সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করে একটি স্বতন্ত্র ও নিরপেক্ষ নিয়োগ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে হবে।
কমিশন সহ-সভাপতি বলেন, বিএনপি ও তার সমমনা কয়েকটি দল এ নিয়োগগুলো সংবিধানে না এনে আইনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের পক্ষপাতী। তবে অধিকাংশ দল সংবিধানের ১৩৭ অনুচ্ছেদে সংশোধন এনে নিয়োগ ব্যবস্থা শক্তিশালী করার পক্ষে।
দুদককে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান করার পক্ষে অধিকাংশ দল ঐকমত্য জানিয়েছে উল্লেখ করে আলী রীয়াজ বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনকে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরের ব্যাপারে বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে। এতে যদিও বিএনপি কিছু ভিন্নমত পোষণ করেছে। তবুও আলোচনার ধারা ইতিবাচক মনে হয়েছে।
আলোচনায় তত্ত্বাবধায়ক সরকার কাঠামো নিয়ে অগ্রগতি হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাঠামো এবং প্রধান উপদেষ্টার নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হয়েছে। একাধিক প্রস্তাবের মধ্যে অন্যতম ছিল, সর্বসম্মতিভিত্তিক নির্বাচন, র্যাঙ্কড চয়েস, ওপেন ভোট এবং ত্রয়োদশ সংশোধনীতে ফিরে যাওয়া এবং বিচার বিভাগকে অন্তর্ভুক্ত না করে।
তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাঠামো নিয়ে জামায়াতে ইসলামী নতুন একটি প্রস্তাব আনলেও বিএনপি এখনো সেটি প্রাথমিকভাবে বিবেচনা করছে। চূড়ান্ত অবস্থান জানায়নি। আমরা আশা করছি, রাতের মধ্যেই জামায়াত সেটি লিখিতভাবে প্রস্তাব দেবে এবং আগামীকাল (মঙ্গলবার) সকালে আলোচনা পুনরায় শুরু হলে এই গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে অগ্রগতি হবে।
আলী রীয়াজ আরও বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, ৩০টি রাজনৈতিক দল একত্রে তত্ত্বাবধায়ক কাঠামোর বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারবে। এটি আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। জাতীয় ঐক্যের এ মুহূর্তটিকে সফলভাবে সমাপ্ত করা আমাদের সবার স্বার্থে।
বাংলাফ্লো/এনআর
Comments 0