বাংলাফ্লো ডেস্ক
ঢাকা: বর্তমানে বিশ্বজুড়ে দারুণ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ওট মিল্ক । শুধু ‘ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স’ যাদের আছে বা যারা ভেজিটেরিয়ান তাদের প্রথম পছন্দ তো বটেই, বাকিরাও অনেকে সকালের কফিতে বা সিরিয়ালে গরুর দুধের পরিবর্তে বেছে নিচ্ছেন ওট মিল্ক।
প্রাকৃতিক মিষ্টি স্বাদ, বাদামি ঘ্রাণ এবং ‘ক্রিইমি টেক্সচার’– এই সব কিছু মিলিয়ে ওট মিল্ক যেন দুধের সবচেয়ে চমৎকার বিকল্প। এমনকি গরুর দুধের চাইতেও উপকারী হতে পারে ওট মিল্ঙ্ক
ওট মিল্কের গুণাগুণ কী কী?
পরিবেশবান্ধব পছন্দ: যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক পুষ্টিবিদ অ্যাশলি কফ রিয়েলসিম্পল ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন, “ওট মিল্ক শুধু স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়, এটি পরিবেশের জন্যও তুলনামূলকভাবে ভালো।”
আমন্ড বা কাঠবাদামের দুধ বা গরুর দুধ উৎপাদনের তুলনায় ওট মিল্ক তৈরিতে অনেক কম পানি লাগে এবং গ্রিনহাউজ গ্যাসের নির্গমনও অনেক কম হয়।
বিশেষ করে যারা পরিবেশ নিয়ে সচেতন, তাদের জন্য এটি একটি উত্তম বিকল্প।
কফির জন্য উপযুক্ত বিকল্প: অনেক ভেজাল-মুক্ত দুধ বিকল্প কফিতে ভালোভাবে ফেনা তৈরি করতে পারে না। তবে ওট মিল্ক দিয়ে তৈরি করা ‘লাতে’ বা ‘ক্যাপুচিনো’ স্বাদে এবং দেখতে বেশ আকর্ষণীয় হয়।
এটি দুধের মতন ঘন ও ক্রিইমি হওয়াতে কফি প্রেমীদের কাছে এখন এটি ‘বারিস্তা ফেভারিট’ (যারা কফি তৈরি করেন)।
পুষ্টিগুণে ভরপুর: যুক্তরাষ্ট্রে পুষ্টিবিদ ডন মেনিং মত দেন, “সাধারণত বাজারজাত ওট মিল্কগুলোতে ভিটামিন এ, ডি, বি কমপ্লেক্স এবং ক্যালসিয়াম যুক্ত করা থাকে, যা শরীরের জন্য প্রয়োজনীয়। বিশেষ করে যারা দুধ থেকে ভিটামিন পেতে অভ্যস্ত ছিলেন, তাদের জন্য এটি ভালো বিকল্প হতে পারে।”
আঁশের ভালো উৎস: ওটস মানেই আঁশ। সেই সূত্রেই ওট মিল্কেও থাকে দ্রবণীয় আঁশ, যা হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী।
মেনিং বলেন, “ওট মিল্কের দ্রবণীয় আঁশ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং হজমে সাহায্য করে।”
গরুর দুধ বনাম ওট মিল্ক
• গরুর দুধের তুলনায় ওট মিল্কে ‘স্যাচুরেইটেড ফ্যাট’ কম থাকে এবং ‘আনস্যাচুরেইটেড ফ্যাট’ বা ভালো বেশি থাকে, যা হৃদযন্ত্রের জন্য ভালো।
• গরুর দুধে যেখানে প্রতি কাপ ২৪ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল থাকে, ওট মিল্কে তা একেবারেই থাকে না।
• ভিটামিনের দিক থেকে দুটি দুধ প্রায় সমান। দুটাতেই ভিটামিন এ এবং ডি থাকে। তবে পার্থক্য দেখা যায় প্রোটিন এবং কার্বোহাইড্রেইটে বা শর্করায়।
• গরুর দুধে প্রোটিন থাকে ৮ গ্রাম, ওট মিল্কে মাত্র ২ গ্রাম।
• অন্যদিকে ওট মিল্কে কার্বোহাইড্রেইট থাকে ১৫-২০ গ্রাম, গরুর দুধে ১২ গ্রাম।
• ওট মিল্কে আঁশ থাকে দুই থেকে চার গ্রাম, গরুর দুধে একদমই থাকে না।
এই কারণে যারা ওট মিল্ক পান করেন তাদের পরামর্শ দেওয়া হয় এটি যেন প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারের সঙ্গে গ্রহণ করা হয়। যেমন- সিরিয়ালের সঙ্গে বাদাম বা চিয়া-হেম্প সিড। অথবা ওট মিল্ক লাতের সঙ্গে একটা সিদ্ধ ডিম খাওয়া যেতে পারে।
কখন ওট মিল্ক বেছে নেবেন?
যাদের দুগ্ধজাত খাবারে অ্যালার্জি আছে বা ল্যাকটোজ হজমে সমস্যা হয়, তাদের জন্য ওট মিল্ক একটি অসাধারণ বিকল্প।
এটি দুধের মতন ঘন ও ক্রিইমি হওয়াতে দুধের অভাবও বোধ হয় না। এছাড়া যারা ‘স্যাচুরেইটেড ফ্যাট’ কম খেতে চান বা স্বাস্থ্যকর চর্বি বাড়াতে চান, তারাও এটি বেছে নিতে পারেন।
বাংলাফ্লো/আফি
Comments 0