বাংলাফ্লো প্রতিনিধি
ঢাকা: খাল দখল ও ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেছেন, খাল দূষণ ও দখল প্রতিরোধে সবাইকে একসঙ্গে এগিয়ে আসতে হবে। খাল দখলকারী ও ভূমিদস্যুদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) সকালে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের প্রাণবন্ত জলপথ হিসেবে পরিচিত শুভাঢ্যা খাল পুনঃখনন প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানও উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, কেরানীগঞ্জে ভূমিদস্যু অনেক। শুভাঢ্যা খাল দখলকারী ভূমিদস্যুদের শুধু উচ্ছেদ করলেই হবে না, তাদের জেলখানায় পাঠাতে হবে। আইন ভাঙার পরিণাম দেখাতে না পারলে দখলচক্র আবার সক্রিয় হয়ে উঠবে।
পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানান, প্রকল্পের ব্যয় ১ হাজার ৭০০ কোটি টাকা থেকে কমিয়ে ৩১৭ কোটিতে আনা হয়েছে। তিনি বলেন, অপ্রয়োজনীয় খাত বাদ দেওয়ায় খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, একসময় শুভাঢ্যা খাল বুড়িগঙ্গার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিল এবং স্থানীয় কৃষি, মৎস্যচাষ ও নৌপথে চলাচলের প্রধান মাধ্যম ছিল। কিন্তু দখল, ভরাট, অবৈধ স্থাপনা ও বর্জ্য ফেলার কারণে খালের প্রবাহ প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বর্ষা ছাড়া অন্য সময় খালটি দুর্গন্ধময় নর্দমায় পরিণত হয়।
পুনঃখনন শেষে বর্ষার পানি নিষ্কাশন, কৃষিজমিতে সেচ সুবিধা, জলাবদ্ধতা নিরসন ও পরিবেশের ভারসাম্য ফিরবে বলে আশাবাদী স্থানীয়রা। তবে তারা প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, রাজনৈতিক প্রভাব বা আপস যেন উদ্ধারকাজে প্রভাব না ফেলে। আগানগর এলাকার হাসিবুর রহমান বলেন, এই খাল বাঁচানো মানে কেরানীগঞ্জকে বাঁচানো। আগের ব্যর্থতার পুনরাবৃত্তি যেন না হয়।
সাত কিলোমিটার দীর্ঘ শুভাঢ্যা খালটি দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের চর কালীগঞ্জ থেকে শুরু হয়ে রাজেন্দ্রপুর বাজারে গিয়ে শেষ হয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এই প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করবে। খননের পাশাপাশি পাড় বাঁধাই, ওয়াকওয়ে নির্মাণ এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার লক্ষ্য রয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোকাব্বির হোসেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ, সেনাসদরের ইঞ্জিনিয়ার ইন চিফ মেজর জেনারেল মু. হাসান-উজ-জামান, বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক মো. এনায়েত উল্লাহ, নির্বাহী প্রকৌশলী এম এল সৈকত, কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিনাত ফৌজিয়া, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমসহ প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা।
বাংলাফ্লো/সিএস
Like
Dislike
Love
Angry
Sad
Funny
Wow
Comments 0