মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

প্রবাসী কর্মী বিষয়ে আসিফ নজরুলের সঙ্গে জাপানিজ পার্লামেন্টারিয়ান লীগের বৈঠক

সাক্ষাৎকালে উভয়পক্ষ জাপানে দক্ষ কর্মী প্রেরণাসহ অন্যান্য দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে মতবিনিময় করেন।

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাফ্লো প্রতিনিধি

ঢাকা: আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)-এর কার্যক্রম এবং দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে জাপানিজ পার্লামেন্টারিয়ান লীগের ৯ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছে। দ্য কনস্টিটিউশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি অব জাপানের সেক্রেটারি জেনারেল ও হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভ সদস্য মিসিহিরো ইশিবাসি নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলটি আসেন।

সাক্ষাৎকালে উভয়পক্ষ জাপানে দক্ষ কর্মী প্রেরণাসহ অন্যান্য দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে মতবিনিময় করেন।

ড. আসিফ নজরুল বলেন, “বাংলাদেশ ও জাপান দুই বন্ধুপ্রতীম দেশের মধ্যে বিদ্যমান সুসম্পর্ক আজ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এক অনন্য দৃষ্টান্ত। জাপান বাংলাদেশের এক অকৃত্রিম ও বিশ্বস্ত বন্ধু। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে জাপানের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথা স্মরণ করে বলতে চাই, ওইসিডিভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে জাপানই প্রথম দেশ যারা ১৯৭২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি স্বাধীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছে।”

তিনি আরও জানান, প্রতিবছর অন্তত ১০ লাখ বাংলাদেশি কর্মী বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ পাচ্ছেন। প্রবাসী শ্রমিকরা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।

ড. আসিফ নজরুল বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ নিরাপদ, সুশৃঙ্খল ও নিয়মিত অভিবাসন নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে বৈদেশিক কর্মসংক্রান্ত একটি জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটি রয়েছে, যার অন্যান্য ১৩টি মন্ত্রণালয় সদস্য। দেশের কর্মীদের দক্ষতা উন্নয়ন, ভাষা প্রশিক্ষণ ও সাংস্কৃতিক প্রস্তুতির মাধ্যমে জাপানের শ্রমবাজারের চাহিদা পূরণে আমরা প্রস্তুত।”

তিনি জাপানে যাওয়া প্রার্থীদের জন্য ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া সহজ করা, ঢাকায় জাপান ফাউন্ডেশন অফিস স্থাপন এবং জাপানি অর্থায়নে বাংলাদেশে বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে মানসম্পন্ন প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে জাপান সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন। এছাড়া, দেশের টিটিসিগুলোতে উন্নত প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে জাইকার মাধ্যমে জাপানি প্রশিক্ষক নিয়োগের প্রয়োজনীয়তাও তিনি উল্লেখ করেন।

সাক্ষাৎ অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের পলিসি অ্যাডভাইজার জিয়া হাসান। তিনি বলেন, “ডেমোগ্রাফিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আগামী ১৫ বছরে জাপানে অন্তত এককোটি ২০ লাখ কর্মীর প্রয়োজন হবে। বৈশ্বিক এ সুযোগ কাজে লাগাতে আমাদের বিশাল জনশক্তি প্রস্তুত করতে হবে। এ লক্ষ্যে জাপানে বাংলাদেশ সেল গঠন, আগমন পরবর্তী ওরিয়েন্টেশন ও হেল্পডেস্ক চালু, অভিবাসন সংক্রান্ত তথ্য ও সেবা সহজলভ্য করার জন্য তথ্যপোর্টাল এবং খাত ভিত্তিক দক্ষতা উন্নয়নের জন্য জাপান-বাংলাদেশ বিশেষ দক্ষতা প্রশিক্ষণ জোন প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।”

প্রতিনিধিদলের অন্য সদস্যরা ছিলেন— হাউজ অব কাউন্সিলর ও লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির ভাইস-সেক্রেটারি জেনারেল মিস. হানাকো জিমি, হাউজ অব কাউন্সিলর এক্সিকিউটিভ বোর্ড মেম্বার মি. রিউজি ‍সাতোমি, হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভ দ্যা কনস্টিটিউশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি নেতা মি. কেনেটা ইজুমি, হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভ ইন্ডিপেন্ডেন্ট এমপি মিস মাকিকো ডোগোমি, হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভ দ্যা কনস্টিটিউশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি নেতা মিস মাকি ইকেডা, হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভ দ্যা কনস্টিটিউশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি নেতা মি. মামোরু উমেতানি এমপি ও এক্সিকিউটিভ বোর্ড মেম্বার মি. আতশুশি অসিমা।

সাক্ষাৎকালে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া, বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত সাইদা সিনিছি, বিএমইটি’র মহাপরিচালক সালেহ আহমেদ মুজাফ্ফর এবং ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক ব্যারিস্টার মো. গোলাম সারওয়ার উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাফ্লো/সিএস

Post Reaction

👍

Like

👎

Dislike

😍

Love

😡

Angry

😭

Sad

😂

Funny

😱

Wow

Leave a Comment

Comments 0