মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সমাবেশ ঘিরে জামায়াতের ব্যাপক প্রস্তুতি, ১০ লাখ মানুষ উপস্থিতির টার্গেট

শুক্রবার (১৮ জুলাই) জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, আগামী কালকের সমাবেশে ১০ লাখের বেশি মানুষের উপস্থিতি নিশ্চিত করার লক্ষে কার্যক্রম চলছে।

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাফ্লো প্রতিনিধি

ঢাকা: রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সমাবেশ আগামীকাল শনিবার (১৯ জুলাই) দুপুর ২টায়। এ লক্ষ্যে দেশব্যাপী ব্যাপক প্রস্তুতি, প্রচার ও মাঠ পর্যায়ের সাংগঠনিক তৎপরতা চালাচ্ছে জামায়াত।

সে লক্ষ্যে রাজধানী ঢাকা ও ঢাকার বাইরে ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছে দলটি। ইতিমধ্যে বিভিন্ন ব্যানার, ফেস্টুন, মিছিল, সমাবেশ, লিফলেট বিতরণসহ মাইকিং করছে দলটি।

শুক্রবার (১৮ জুলাই) জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, আগামী কালকের সমাবেশে ১০ লাখের বেশি মানুষের উপস্থিতি নিশ্চিত করার লক্ষে কার্যক্রম চলছে।

তিনি জানান, উত্তরবঙ্গ থেকে প্রায় ১৫০০ বাস, চট্টগ্রাম-ঢাকা ও রাজশাহী-ঢাকা রুটে বিশেষ ট্রেন এবং নৌপথে লঞ্চ রিজার্ভেশন দেওয়া হয়েছে। কেউ কেউ আত্মীয়-স্বজনের বাসায় থেকেও সমাবেশে অংশ নেবেন।

সমাবেশ থেকে সাত দাবি জানাবে জামায়াত

দাবিগুলো হলো-

১. ২০২৪ সালের ৫ আগস্টসহ পূর্ববর্তী গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করা।

২. রাষ্ট্রের সর্বস্তরে মৌলিক সংস্কার আনা।

৩. ঐতিহাসিক জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন।

৪. জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পুনর্বাসন।

৫. পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন।

৬. প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা। এবং

৭. রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য সমান সুযোগ ও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা।

সমাবেশে অন্য দলের নেতাদেরও আমন্ত্রণ

জামায়াত নেতারা জানিয়েছেন, এই সমাবেশে ফ্যাসিবাদ বিরোধী সব রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আমন্ত্রিত দলগুলোর মধ্যে রয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসসহ আরও কয়েকটি দল। সমাবেশে বিএনপি নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত করেননি জামায়াতের নেতারা। তবে বিএনপি নেতাদেরও আমন্ত্রণ জানানো হবে বলে কেউ কেউ জানিয়েছেন।

জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসান মাহবুব জোবায়ের বলেন, আমরা ইতিহাসের সবচেয়ে বড় জনসমাগম আশা করছি। এরই মধ্যে ১০ হাজারের বেশি বাস, একাধিক স্পেশাল ট্রেন এবং নৌযান রিজার্ভ করা হয়েছে।

মাঠ প্রস্তুত ও সংগঠনিক সমন্বয়

দলটি থেকে জানানো হয়, মাঠে মোতায়েন থাকবে প্রায় ৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবক, থাকবে বিশেষ পোশাক, ডিউটি কার্ড ও দায়িত্বভাগ। ঢাকা মহানগর ও আশপাশের জেলা থেকে আগতদের জন্য ১৫টি পার্কিং স্পট নির্ধারণ করা হয়েছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভেতরে ও বাইরে থাকবে ১৫টি মেডিকেল বুথ, প্রতিটিতে এমবিবিএস ডাক্তার, জরুরি ওষুধ এবং অ্যাম্বুলেন্স সুবিধা থাকবে।

প্রযুক্তি ব্যবহার ও নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব

সমাবেশের সম্পূর্ণ কার্যক্রম ড্রোন ও আধুনিক ক্যামেরা দিয়ে ধারণ করা হবে। ফেসবুক, ইউটিউব ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লাইভ সম্প্রচার করা হবে, মাঠে থাকবে বড় আকারের এলইডি স্ক্রিন।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সঙ্গে বৈঠকে ট্রাফিক, নিরাপত্তা ও জনসমাগম নিয়ন্ত্রণে সমন্বয় করা হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, পুলিশ কমিশনারসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিতভাবে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে সহযোগিতার আশ্বাস পেয়েছে দলটি।

পাড়া-মহল্লা, শপিংমল ও বিভিন্ন স্থানে লিফলেট, পোস্টার ও ব্যানারের মাধ্যমে চলছে প্রচারণা। এছাড়া ভ্রাম্যমাণ মাইকিং করা হচ্ছে। সাংস্কৃতিক দল নাটিকা, গানের সুর ও মঞ্চনাটকের মাধ্যমে সমাবেশের বার্তা জনগণের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে।

বাংলাফ্লো/এনআর

Leave a Comment

Comments 0