আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ঢাকা: ইসরায়েলি বাহিনী গাজা উপত্যকাজুড়ে হামলা অব্যাহত রেখেছে। শনিবার ভোর থেকে শুরু হওয়া একাধিক হামলায় অন্তত ১১৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ৩৮ জন প্রাণ হারিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণকেন্দ্রের সামনে খাদ্যের জন্য অপেক্ষা করার সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে।
মোহাম্মদ আল-খালিদি নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “তারা ইচ্ছা করে গুলি চালিয়েছে। একদিকে জিপ আর অন্যদিকে ট্যাংক আসতে দেখে আমরা পালাতে চেয়েছিলাম, কিন্তু তারা গুলি শুরু করে।”
আরেক প্রত্যক্ষদর্শী মোহাম্মদ আল-বারবারি তার চাচাতো ভাইকে হারিয়েছেন। তিনি বলেন, “এই কেন্দ্রগুলো আসলে মৃত্যু ফাঁদ। মানুষ শুধু একটু খাবারের আশায় আসে, কিন্তু ফিরে যায় লাশ হয়ে।”
আন্তর্জাতিক রেড ক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট ফেডারেশনের মহাসচিব জগন চাপাগাইন বলেন, “গাজায় ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি দেখা দিয়েছে। কাউকে যেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এক মুঠো খাবার সংগ্রহ করতে না হয়।”
এদিকে ইসরায়েলের অবরোধ ও সহিংসতার মধ্যে গাজায় এক নবজাতক শিশুর মৃত্যু হয়েছে দুর্ভিক্ষে।
মাত্র ৩৫ দিন বয়সী এই শিশু গাজা সিটির আল-শিফা হাসপাতালে অপুষ্টিজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেছে বলে নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালটির পরিচালক ড. মোহাম্মদ আবু সালমিয়া। শনিবার হাসপাতালটিতে আরো এক ব্যক্তি একইভাবে অপুষ্টিতে প্রাণ হারিয়েছেন।
এদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বর্তমানে হাসপাতালগুলোর জরুরি বিভাগে রেকর্ডসংখ্যক ক্ষুধার্ত রোগী ভর্তি হচ্ছে এবং অবস্থা চরম সংকটময়। তারা আরো জানায়, গাজায় প্রায় ১৭ হাজার শিশু চরম অপুষ্টিতে ভুগছে।
গাজার বাজারগুলোতে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নেই, আর খাদ্যদ্রব্যের দাম এতটাই বেড়ে গেছে যে ২৩ লাখ মানুষের পক্ষে দৈনন্দিন পুষ্টি চাহিদা পূরণ করা অসম্ভব হয়ে উঠেছে।
স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই সহিংসতাকে ‘মানবিক বিপর্যয়’ হিসেবে অভিহিত করেছে এবং অবিলম্বে গাজায় অবরোধ তুলে দিয়ে মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর আহ্বান জানিয়েছে।
তথ্যসূত্র : আলজাজিরা
বাংলাফ্লো/এফএ
Like
Dislike
Love
Angry
Sad
Funny
Wow
Comments 0