বাংলাফ্লো প্রতিনিধি

ঢাকা: মেয়র হিসেবে শপথ গ্রহণের বিরুদ্ধে রিট খারিজের পরও বিএনপি নেতা ইশরাকে হোসেন কেন ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র পদ পাচ্ছেন না, সে প্রশ্নে একটি বক্তব্য দিয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ।

বিষয়টি সর্বোচ্চ আদালতে বিচারাধীন থাকায় ইশরাকের মেয়র পদে শপথ বিলম্ব হচ্ছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়। এজন্য আদালতের নির্দেশনার অপেক্ষায় আছে সরকার।

মঙ্গলবার(২৭মে) সচিবালয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের আইন অধিশাখা থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

সেখানে বলা হয়েছে, স্থানীয় সরকার বিভাগ জানিয়েছে, বিষয়টি এখন দেশের সর্বোচ্চ আদালতে বিচারাধীন। তাই আদালতের রায় না হওয়া পর্যন্ত শপথ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হচ্ছে না।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইশরাক হোসেনকে শপথ পড়ানোর বিষয়ে ২২ মে হাইকোর্টে করা রিট খারিজ হওয়ার পর স্থানীয় সরকার বিভাগ প্রস্তুতি নিচ্ছিল।

তিন দিন পর ২৫ মে মেয়র হিসেবে শপথ নিতে হাইকোর্টে রিট করেন ইশরাক।

এছাড়া এক নাগরিক আগের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে ‘লিভ টু আপিল’ করেন। ফলে বিষয়টি এখন বিচারাধীন অবস্থায় রয়েছে।

আদালতের রায় না আসা পর্যন্ত ইশরাক হোসেনের শপথ অনুষ্ঠান স্থগিত রাখা হয়েছে।

২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হয়। তাতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস মেয়র নির্বাচিত হন।

নির্বাচন কমিশন ২ ফেব্রুয়ারি ভোটের ফলাফলের গেজেট প্রকাশ করে। এরপর শপথ নিয়ে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন তাপস।

সেই নির্বাচনে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ফল বাতিল চেয়ে ২০২০ সালের ৩ মার্চ মামলা করেন ইশরাক।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের আগস্ট মাসে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের সব সিটি করপোরেশনের মেয়রদের অপসারণ করা হয়। এরপর ঢাকা দক্ষিণ সিটির প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন অতিরিক্ত সচিব শাহজাহান মিয়া।

গত ২৭ মার্চ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২০২০ সালের নির্বাচনে ফজলে নূর তাপসকে বিজয়ী ঘোষণার ফল বাতিল করে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করেন ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. নুরুল ইসলাম।

আদালত ১০ দিনের মধ্যে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দেন। এ রায় পাওয়ার পর ২৭ এপ্রিল গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন।

গেজেট প্রকাশের দিন ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে দেওয়া রায় ও ডিক্রির বিরুদ্ধে আপিল করতে আইনি নোটিশ দেন রফিকুল ইসলাম ও মামুনুর রশিদ নামে দুই ব্যক্তি।

নোটিশে প্রজ্ঞাপন প্রকাশ এবং ইশরাককে শপথ নেওয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়।

আদালতের রায়ের পরও ইশরাককে মেয়রের দায়িত্ব না দেওয়ায় আন্দোলন করে তার সমর্থকরা। নগর ভবন অবরোধ করে ওই আন্দোলনে ভোগান্তি হয় সেবাগ্রহীতাদের। পরে সেই অবরোধ আসে মৎসভবনের সামনে।

তাদের আন্দোলনের মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ডিএসসিসি মেয়র হিসেবে ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশনের দেওয়া গ্যাজেটের বৈধতা নিয়ে এবং শপথ পড়ানো থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা চেয়ে করা রিট খারিজ করে দেয় হাইকোর্ট।

বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। এ আদেশের ফলে ইশরাক হোসেনের শপথ দিতে বাধা নেই বলে জানান তার আইনজীবীরা।

ইশরাককে মেয়র হিসেবে দায়িত্ব দিতে বিলম্বের জন্য স্থানীয় সরকার আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে দায়ী করছে বিএনপি। শনিবার প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকে আসিফসহ আরও দুই উপদেষ্টার অপসারণ চায় দলটি।

বাংলাফ্লো/এসকে