বাংলাফ্লো ডেস্ক
ঢাকা: চন্দ্র ও সূর্যগ্রহণ আল্লাহ তাআলার কুদরত ও নিদর্শনের একটি প্রকাশ। যখন চাঁদ পৃথিবী ও সূর্যের মধ্যে অবস্থান গ্রহণ করে, তখন পৃথিবীর কোনো দর্শকের কাছে সূর্য আংশিক বা সম্পূর্ণ অদৃশ্য হয়ে যায়। এ ঘটনাকে সূর্যগ্রহণ (কুসুফ) বলা হয়। অন্যদিকে, যখন পৃথিবী চাঁদ ও সূর্যের মধ্যে অবস্থান গ্রহণ করে, তখন পৃথিবী থেকে চাঁদ কিছু সময়ের জন্য অদৃশ্য হয়, যা চন্দ্রগ্রহণ (খুসুফ) নামে পরিচিত।
নবীজি (সা.) এ ধরনের ঘটনার সময় মুসলমানদের নামাজ আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন:
“কোনো লোকের মৃত্যুর কারণে কখনো সূর্যগ্রহণ বা চন্দ্রগ্রহণ হয় না। তবে তা আল্লাহ তাআলার নিদর্শনগুলোর দুটি। তোমরা সূর্যগ্রহণ বা চন্দ্রগ্রহণ হতে দেখলে নামাজে দাঁড়িয়ে যাবে।”
(সহিহ বুখারি: ৯৮৪)
সূর্য ও চন্দ্রগ্রহণের সময় রাসুল (সা.) দুই রাকাত নামাজ আদায় করতেন। দশম হিজরিতে সূর্যগ্রহণ হলে নবী (সা.) সাহাবিদের সমবেত করে দুই রাকাত নামাজ পড়েছেন। এ সময় মুসলমানদের উদ্দেশ্যে তিনি আল্লাহর দরবারে দোয়া ও ইবাদতের আহ্বান জানিয়েছেন এবং গ্রহণকে ঘিরে প্রচলিত কুসংস্কারকে এড়িয়ে আল্লাহর ইবাদতে মনোনিবেশ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
চন্দ্রগ্রহণের নামাজ আদায়ের নিয়ম:
১. চন্দ্রগ্রহণ চলাকালে দুই রাকাত নামাজ আদায় করা সুন্নত। ইসলামের পরিভাষায় এটিকে ‘সালাতুল খুসুফ’ বলা হয়।
২. নামাজ একাকী আদায় করাই সুন্নত। সূর্যগ্রহণের নামাজ জামাতে আদায় করা যায়, তবে চন্দ্রগ্রহণের ক্ষেত্রে জামাতে আদায় সুন্নত নয়।
৩. যারা চন্দ্রগ্রহণ প্রত্যক্ষ করবেন, তারা নিজ নিজ বাসায় ফজরের নামাজের মতোই দুই রাকাত নফল নামাজ পড়বেন।
৪. ইচ্ছা করলে চার রাকাত বা এর চেয়েও বেশি পড়া যাবে, তবে প্রত্যেক দুই বা চার রাকাত পরপর সালাম ফেরাতে হবে।
৫. অন্যান্য নফল নামাজের মতো এ নামাজেও আজান-একামত নেই।
৬. নামাজ শেষে চন্দ্রগ্রহণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত জিকির, দোয়া ও মোনাজাতে মশগুল থাকা উত্তম।
সূর্য ও চন্দ্রগ্রহণ আল্লাহর শক্তি ও নিদর্শনের পরিচায়ক। ইসলামে গ্রহণের সময় নামাজ আদায় ও দোয়াকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, যা মুসলিমদের আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস ও ভক্তি বৃদ্ধি করে।
বাংলাফ্লো/সিএস
Like
Dislike
Love
Angry
Sad
Funny
Wow
Comments 0