স্পোর্টস ডেস্ক
ঢাকা: জমজমাট এক ফাইনালের মধ্য দিয়ে পর্দা নামলো পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) দশম আসরের। কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটর্সকে ৬ উইকেটে হারিয়ে তৃতীয়বারের মতো শিরোপা ঘরে তুলেছে লাহোর কালান্দার্স। বাংলাদেশি স্পিনার রিশাদ হোসেন খেলেছেন ফাইনালে, লাহোর স্কোয়াডে ছিলেন সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজও।
এই জয়ে পিএসএলের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল দল হয়ে উঠেছে শাহিন আফ্রিদির নেতৃত্বাধীন লাহোর। এর আগে ২০২২ ও ২০২৩ সালে টানা দুইবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল দলটি। ২০২৪ সালে থমকে গেলেও ২০২৫ সালে এসে আবারো শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট পরলো তারা।
শুধু ট্রফিই নয়, প্রাপ্তির ঝুলিতে রয়েছে মোটা অঙ্কের প্রাইজমানিও। চ্যাম্পিয়ন হিসেবে লাহোর কালান্দার্স পেয়েছে ৫ লাখ মার্কিন ডলার—পাকিস্তানি মুদ্রায় প্রায় ১৪ কোটি রুপি, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬ কোটি ৫ লাখ টাকার কাছাকাছি। রানার্স-আপ কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটর্স পেয়েছে ২ লাখ ডলার, অর্থাৎ প্রায় ৫ কোটি ৬০ লাখ পাকিস্তানি রুপি বা ২ কোটি ৪১ লাখ টাকা।
ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের পুরস্কারেও ছিল চমক। টুর্নামেন্টসেরা হয়েছেন কোয়েটার ব্যাটার হাসান নেওয়াজ। ৩৯৯ রান করে পেয়েছেন ৩০ লাখ রুপি এবং একটি বিদ্যুচ্চালিত গাড়ি—বিওয়াইডি সিল। পাশাপাশি সেরা ব্যাটসম্যানের পুরস্কারেও মিলেছে ৩৫ লাখ রুপি। লাহোর অধিনায়ক শাহিন আফ্রিদি হয়েছেন সেরা বোলার, তাকেও দেওয়া হয়েছে ৩৫ লাখ রুপি।
বাকি ক্যাটাগরিতেও ছিল উদারতা—সেরা ফিল্ডার (আবদুস সামাদ), অলরাউন্ডার (সিকান্দার রাজা), উইকেটকিপার (মোহাম্মদ হারিস) ও উদীয়মান খেলোয়াড় (মোহাম্মদ নাঈম) প্রত্যেকেই পেয়েছেন ৩৫ লাখ রুপি করে।
রোমাঞ্চকর ফাইনালের শেষ তিন ওভারে ৪৭ ও শেষ ওভারে ১৩ রানের কঠিন সমীকরণ মেলান কুশাল পেরেরা ও সিকান্দার রাজা। রাজা ৭ বলে করেন ২২ রান, আর পেরেরা খেলেন দুর্দান্ত এক ইনিংস—৩১ বলে ৬২ রান। সেই নায়কোচিত পারফরম্যান্সের স্বীকৃতি হিসেবে ফাইনালের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার হিসেবে পেরেরা পেয়েছেন ৫০ লাখ রুপি।
রিওতে পৌঁছাতেই আনচেলত্তিকে ঘিরে সমর্থকদের উচ্ছ্বাসরিওতে পৌঁছাতেই আনচেলত্তিকে ঘিরে সমর্থকদের উচ্ছ্বাস
প্রাইজমানির বিচারে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) এখনো পিছিয়ে। সদ্য শেষ হওয়া আসরে চ্যাম্পিয়ন ফরচুন বরিশাল পেয়েছে ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা। রানার্স-আপ চিটাগাং কিংস পেয়েছে ১ কোটি ৫০ লাখ। সব মিলিয়ে এবারের বিপিএলের প্রাইজমানি বরাদ্দ ছিল ৫ কোটি ৩১ লাখ টাকা।
অন্যদিকে, আইপিএল যেন ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের রাজা। চলতি আসরের প্রাইজমানি এখনো ঘোষণা করা না হলেও ধারণা করা হচ্ছে, আগের মতোই থাকছে বরাদ্দ। যেখানে চ্যাম্পিয়ন দল পায় ২০ কোটি রুপি (প্রায় ২৭.৫ কোটি টাকা), রানার্স-আপ দল ১২.৫ কোটি রুপি (প্রায় ১৭ কোটি টাকা)। ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স ও প্রতি ম্যাচে আলাদা ক্যাটাগরিতে পুরস্কারসহ সব মিলিয়ে বরাদ্দ থাকে প্রায় ১.৫৫ কোটি রুপি। ম্যাচপ্রতি ৬টি আলাদা পুরস্কারে খেলোয়াড়দের হাতে তুলে দেওয়া হয় প্রায় ৬ লাখ রুপি।
বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ হিসেবে আইপিএলের সঙ্গে লড়তে না পারলেও, পিএসএল যে বিপিএলের চেয়ে বেশ কয়েক ধাপ এগিয়ে—তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। মাঠের লড়াইয়ের সঙ্গে অর্থের লড়াইটাও যে তীব্র!
বাংলাফ্লো/এসও
Comments 0