বাংলাফ্লো প্রতিনিধি,
ঢাকা: নির্বাচন নিয়ে সংশয় কাটাতে সরকারের দৃঢ় রাজনৈতিক ইচ্ছাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। তিনি বলেন, নির্বাচন পর্যন্ত যেতে হলে সরকারের মধ্যকার ছোট ছোট ‘সরকারগুলোকে’ অবিলম্বে ভেঙে দিতে হবে।
সোমবার (২৫ আগস্ট) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
সাইফুল হক বলেন, দলীয় এজেন্ডার কারণে ফেব্রুয়ারির নির্বাচন অনিশ্চিত হয়ে গেলে গণঅভ্যুত্থানের অর্জন বিপর্যয়ের মধ্যে পড়বে। রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা উগ্র হিংসাশ্রয়ী বৈরিতায় পরিণত হলে আম-ছালা দুটোই চলে যেতে পারে।
তিনি মনে করেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সমঝোতা সনদ সংবিধানের ওপরে প্রাধান্য পেতে পারে না।
সেগুনবাগিচায় সংহতি মিলনায়তনে এই সংবাদ অনুষ্ঠিত সম্মেলনে সাইফুল হক বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে সরকার ও নির্বাচন কমিশন থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বলা হলেও জনমনে নির্বাচন নিয়ে সংশয় কাটছে না।
তিনি বলেন, অবাধ জাতীয় নির্বাচন নিশ্চিত করতে সরকারের দৃঢ় রাজনৈতিক সদিচ্ছাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য সরকারকে দ্রুত যাবতীয় পক্ষপাতদুষ্টতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। বিতর্কিত উপদেষ্টাদের দ্রুত প্রত্যাহার করে প্রয়োজনে উপদেষ্টামণ্ডলী পুনর্গঠন করতে হবে।
তিনি বলেন, এই সরকারকে নির্বাচন পর্যন্ত যেতে হলে সরকারের মধ্যে থাকা ‘সরকারগুলো’ অবিলম্বে ভেঙে দিতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সমগ্র প্রশাসনকে প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বাধীন সরকারের কার্যকরি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে হবে।
তিনি সমগ্র প্রশাসনকে সর্বোচ্চ পেশাদারত্ব ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করে ঢেলে সাজানোর আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, সরকার, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হলে নির্বাচনও প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়বে।
তিনি বলেন, আরপিও বা নির্বাচনবিধি চূড়ান্ত করার আগে নির্বাচন কমিশনের কাজ হচ্ছে রাজনৈতিক দল ও গুরুত্বপূর্ণ অংশীজনদের মতামত গ্রহণ করা।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনে অঢেল অর্থ ব্যয়সহ নির্বাচনে রাজনৈতিক প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ, ধর্মীয় অনুভূতির ব্যবহার বন্ধ এবং নির্বাচনের সত্যিকার গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত না হলে নির্বাচন অর্থহীন হয়ে যাবে।
তিনি বলেন নির্বাচনকালীন নির্বাচনসংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়গুলো নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বে নিয়ে আসাও জরুরি।
রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক বলেন, রাজনৈতিক মতভিন্নতা বা রাজনৈতিক প্রতিযোগিতাকে উগ্র বৈরীতায় নিয়ে যাওয়া হবে আত্মঘাতী। হিংসাশ্রয়ী এই বিভক্তি বিভাজনের কারণে গণ অভ্যুত্থানের অবশিষ্ট অর্জন হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে।
তিনি বলেন, দলীয় এজেন্ডার কারণে ফেব্রুয়ারির নির্বাচন কোনও কারণে অনিশ্চিত হয়ে পড়লে বাংলাদেশের বিদ্যমান নিরাপত্তা ঝুঁকি আরও আরও বৃদ্ধি পাবে এবং সে রকম পরিস্থিতিতে আম-ছালা দুটোই চলে যেতে পারে। তিনি নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সবাইকে দায়িত্বশীল আচরণ করার উদাত্ত আহ্বান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে সাইফুল হক প্রস্তাবিত জুলাই সনদ সম্পর্কে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির অবস্থান তুলে ধরে বলেন, আমরা মনে করি, দলগুলো কর্তৃক জুলাই জাতীয় সনদ সইয়ের পর আর কোনও অঙ্গীকারনামার প্রয়োজন হয় না। কারণ সই করাটা অঙ্গীকারনামার চেয়ে বেশি কিছু।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য বহ্নিশিখা জামালী, আকবর খান, মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সিকদার হারুন মাহমুদ, সজীব সরকার রতন, কেন্দ্রীয় সদস্য ফিরোজ আলী, কেন্দ্রীয় সংগঠক বাবর চৌধুরীসহ পার্টির মহানগরের নেতারা।
বাংলাফ্লো/এনআর
Comments 0