বাংলাফ্লো প্রতিনিধি
ঢাকা: হাতি সংরক্ষণে আবাসস্থল রক্ষা, করিডোর মুক্তকরণ ও সচেতনতা জরুরি বলে উল্লেখ করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, হাতি রক্ষার জন্য প্রথম শর্ত হলো তাদের প্রাকৃতিক আবাসস্থল সংরক্ষণ করা। তিনি বলেন, হাতির জন্য উপযোগী গাছ লাগানো, করিডোর চিহ্নিত করে মুক্ত রাখা, জরিপের মাধ্যমে সঠিক সংখ্যা নির্ধারণ এবং মানুষ-হাতি দ্বন্দ্ব কমাতে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া এখন জরুরি।
আজ বুধবার (২০ আগস্ট) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বন ভবনে ‘বিশ্ব হাতি দিবস ২০২৫’ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, ‘ক্যাপটিভ হাতি নিয়ন্ত্রণ, গ্রামীণ জনগণকে সচেতন করা এবং হাতির জন্য টেকসই আবাসস্থল নিশ্চিত করা জরুরি। হাতি সংরক্ষণের লক্ষ্যে একটি বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এর আওতায় ৩৫০ হেক্টর জমিতে হাতির খাদ্যোপযোগী গাছের বাগান, ৫০ হেক্টর বাঁশবাগান সৃজন এবং রোপিত উদ্ভিদের যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।’
তিনি আরও জানান, মানুষ-হাতি দ্বন্দ্ব নিরসনের জন্য ইকোলোজিক্যাল বাউন্ডারি বায়োফেন্সিং নির্মাণ করা হবে। এতে বেত, লেবু ও বড়ইসহ কাঁটাজাতীয় জীবন্ত বেড়া দিয়ে ১০ কিলোমিটার সীমানা তৈরি করা হবে। পাশাপাশি এলিফ্যান্ট রিজার্ভ-সংলগ্ন এলাকায় ‘অ্যান্টি ডেপ্রেডেশন স্কোয়াড (এডিএস), এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিম (ইআরটি) ও এলিফ্যান্ট রেসকিউ টিম’ গঠন করে কার্যক্রম জোরদার করা হবে। হাতির চলাচল পর্যবেক্ষণে ১৬টি ট্রি টাওয়ার নির্মাণ এবং গাজীপুর সাফারি পার্ক ও ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে দুটি উদ্ধার কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে।
উপদেষ্টা আরও বলেন, আহত হাতির চিকিৎসার জন্য সিলেট, চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি ও শেরপুরে অস্থায়ী সেড নির্মাণ করা হবে। পাশাপাশি মানুষ-হাতি দ্বন্দ্ব নিরসনে এনথ্রোপোজেনিক প্রভাব ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিরূপণ এবং নৃ-বৈজ্ঞানিক জরিপ চালানো হবে। এ ছাড়া চট্টগ্রামের চুনতিতে ১০ একর জায়গাজুড়ে একটি হাতি অভয়ারণ্য গড়ে তোলা হবে, যেখানে পোষা হাতিদের পুনর্বাসন করা হবে।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. খায়রুল হাসান; দুবাই সাফারি পার্কের প্রাক্তন প্রিন্সিপাল ওয়াইল্ডলাইফ স্পেশালিস্ট ড. মোহাম্মদ আলী রেজা খান; জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এম মনিরুল এইচ খান; বন অধিদফতরের বন সংরক্ষক এ এস এম জহির উদ্দিন আকন; আরণ্যক ফাউন্ডেশনের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক ড. মোহাম্মদ আবদুল মোতালেব এবং বন সংরক্ষক মো. ছানাউল্যা পাটওয়ারী।
বাংলাফ্লো/সিএস
Like
Dislike
Love
Angry
Sad
Funny
Wow
Comments 0