বাংলাফ্লো প্রতিনিধি
ঢাকা: চার দিনের সরকারি সফরে যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
সোমবার (৯ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তিনি রওনা হন। এই সফরেই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন তিনি। ইতোমধ্যে প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে তারেক রহমানকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
সোমবার (৯ জুন) বিএনপির চেয়ারপারসনের সাবেক প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়েছেন অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে তারেক রহমানের সাক্ষাৎ হওয়ার বিষয়ে।
সোমবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটি একটি জরুরি বৈঠক সেরে ফেলেছে এই বৈঠককে কেন্দ্র করে। দলের নেতারা এ বিষয়ে নীরবতা অবলম্বন করলেও দলীয় একটি সূত্র জানায়, দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মঙ্গলবার (১০ জুন) সংবাদ সম্মেলন করে সাক্ষাতের বিষয়ে বিস্তারিত গণমাধ্যমে তুলে ধরবেন।
সরকারের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, লন্ডনের স্থানীয় একটি হোটেলে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বসবেন তারেক রহমান।
ইতোমধ্যে গত ৬ জুন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামী এপ্রিলের প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা উল্লেখ করেছেন। আপাতত বিএনপির পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্তকে নাকচ করে দেওয়া হয়েছে। যদিও দলের অবস্থান শেষ পর্যন্ত নমনীয় হবে কিনা, এ আলোচনাও এখন সামনে।
সিনিয়র একাধিক রাজনীতিক বলছেন, নির্বাচনের সময়টিই এখন প্রধান আলোচ্য বিষয়। এক্ষেত্রে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের জন্য অধিকাংশ রাজনৈতিক দল চাপাচাপি করলেও শেষ পর্যন্ত দুই নেতার বৈঠক থেকে বিশেষ কিছু উঠে আসতে পারে।
বিএনপির সিনিয়র নেতারা মনে করছেন, দলীয়ভাবে বৈঠকের আগে আপাতত তারা এ বিষয়টিকে পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। বৈঠকের পর দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনার মধ্য দিয়ে পরবর্তী রাজনৈতিক করণীয় নির্ধারণ করবেন তারা।
গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম নেতা, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘দেশের ক্রান্তিকালে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির কার্যকরী নেতা তারেক রহমানের সম্ভাব্য বৈঠকটি কেবলই সৌজন্য সাক্ষাৎ নয়, এই সাক্ষাতের গুরুত্ব ও তাৎপর্য রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘তারেক রহমান একটি দলের প্রধান কার্যকরী নেতা। সে হিসেবে সরকার প্রধানের সঙ্গে বৈঠকটি স্বাভাবিক। বিএনপি সিদ্ধান্ত নিয়েছে পজিটিভ, যে তারা সাক্ষাৎ করবেন। আমি মনে করি, বিএনপির যে বার্তা দেওয়া দরকার তা তারেক রহমান দেবেন। সরকারকে যে বিএনপি এবং বিরোধী দলগুলো সমর্থন করছে, সে বিষয়েও অবহিত করবেন।’
সাইফুল হক বলেন, সরকারের প্রধান যে তিনটি ম্যান্ডেট— বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন, সে বিষয়ে তিনি বিএনপির বার্তা তুলে ধরবেন। নির্বাচনের ব্যাপারে বিএনপিসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দলগুলোর ভাবনা, যুক্তি তারেক রহমান তুলে ধরবেন।
এছাড়া একাধিক সিনিয়র রাজনীতিক জানান, ড. ইউনূসের সঙ্গে তারেক রহমানের ১৩ জুনের সম্ভাব্য সাক্ষাৎটি হবে দুজনের প্রথম মোলাকাত। ফলে, দুই নেতার মুখোমুখি সাক্ষাতে রাজনৈতিক তাৎপর্য অনেক বেশি। বিশেষ করে তারেক রহমানের দেশে ফেরার প্রাসঙ্গিকতা, আগামী নির্বাচনের সময়, নির্বাচন পরবর্তী বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের এজেন্ডা, নানা দেশি-বিদেশি উদ্যোগ ও প্রসঙ্গ নিয়ে দুই নেতার মধ্যে আলোচনা হবে।
বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিনিয়র কোনও নেতা যোগ দেবেন কিনা, তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের লন্ডনযাত্রা সম্পর্কে আশা করছেন কেউ কেউ।
বাংলাফ্লো/এনআর
Comments 0