বাংলাফ্লো প্রতিনিধি
ঢাকা: বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও ব্যবসায়িক সম্ভাবনাকে আরও বিস্তৃত পরিসরের কাজে লাগাতে মালয়েশিয়ার শীর্ষ কংগ্লোমারেটগুলোকে বাংলাদেশের সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসন, বন্দর, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষাখাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
বুধবার (১৩ আগস্ট) কুয়ালালামপুরে মালয়েশিয়ার শিল্পপতি ও কয়েকজন শীর্ষ ব্যবসায়িক নেতার সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠককালে তিনি এ আহ্বান জানান।
প্রধান উপদেষ্টা সানওয়ে গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রতিষ্ঠাতা জেফ্রি চিয়াকে বিশেষ করে বাংলাদেশের শিল্পাঞ্চল ও অর্থনৈতিক অঞ্চলের কাছাকাছি বসবাসরত ক্রমবর্ধমান সংখ্যক কারখানা শ্রমিকদের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসন খাতে বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানান।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার সময় এখনই। এ সময় তিনি সরকারের গৃহীত সংস্কারের কথাও তুলে ধরেন।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন জানান, দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে নতুন বন্দর ও অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হচ্ছে। সেখানে বৃহৎ পরিসরে আবাসন ও নির্মাণ খাতে বিনিয়োগের জরুরি প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। তিনি সানওয়ে গ্রুপকে বাংলাদেশে হাসপাতাল স্থাপনের আহ্বানও জানান।
সানওয়ে গ্রুপের চেয়ারম্যান জেফ্রি চিয়া বৈঠকে জানান, আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো অবশ্যই বাংলাদেশে ব্যবসায়িক সুযোগ অনুসন্ধান করবে। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি দেওয়ার বিষয়েও আগ্রহী আমরা। তিনি আরও উল্লেখ করেন, বর্তমানে সানওয়ের নির্মাণ ও আবাসন বিভাগে কয়েক হাজার বাংলাদেশি কর্মরত রয়েছেন। বাংলাদেশি শ্রমিকদের প্রশংসা করে চিয়া বলেন, তিনি মালয়েশিয়ান কর্তৃপক্ষকে তাদের ছয় বছরের বেশি সময় থাকার অনুমতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
একটি পৃথক বৈঠকে মালয়েশিয়ান টাইকুন সাইয়েদ মখতার আল-বুখারি বাংলাদেশে বিনিয়োগের মাধ্যমে সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। তিনি অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে বৈঠককালে বলেন, এটি শুধু মুনাফার জন্য নয়, আমরা এটি করতে চাই বাংলাদেশি জনগণের জন্য। তিনি নদী উন্নয়ন ও জেলে সম্প্রদায় জড়িত প্রকল্পগুলিতে দায়িত্বশীল পুনর্বাসনের প্রয়োজনীয়তার উপরও জোর দেন।
প্রধান উপদেষ্টা পুনরায় উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ব্যবসা ও বিনিয়োগ প্রক্রিয়া সহজ করতে ব্যাপক সংস্কার চালু করেছে। এসময় বিডা নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী সৌর শক্তি ও কৃষি-প্রক্রিয়াকরণকে অগ্রাধিকার বিনিয়োগ খাত হিসেবে চিহ্নিত করেন। পরে সাইয়েদ মখতার বাংলাদেশের সৌর শক্তির সম্ভাবনা নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও খাদ্য নিরাপত্তা—উভয় ক্ষেত্রেই আগ্রহের কথা জানান।
বৈঠকের শেষে সৌজন্য উপহার হিসেবে সাইয়েদ মখতার অধ্যাপক ইউনূসকে ১৮শ শতকের ভারতীয় ঔপনিবেশিকবিরোধী শাসক টিপু সুলতানকে নিয়ে ২০ বছরের গবেষণার সংকলন একটি বই উপহার দেন।
বাংলাফ্লো/সিএস
Like
Dislike
Love
Angry
Sad
Funny
Wow
Comments 0