স্পোর্টস ডেস্ক
ঢাকা: মার্কিন ক্রিকেটে বড় ধরনের অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেট (ইউএসএ ক্রিকেট) পরিচালনা পর্ষদ কৌশলগত অংশীদার আমেরিকান ক্রিকেট এন্টারপ্রাইজেস (এসিই)-এর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে।
২০১৯ সালের জুনে স্বাক্ষরিত ৫০ বছরের চুক্তির আওতায় এসিই দেশটির শীর্ষস্থানীয় টি-২০ লিগ মেজর লিগ ক্রিকেট (এমএলসি) আয়োজনের একচেটিয়া অধিকার পায়। একইসঙ্গে জাতীয় দলকে বাণিজ্যিকভাবে এগিয়ে নেওয়া এবং অবকাঠামো উন্নয়নের প্রতিশ্রুতিও ছিল এই চুক্তিতে।
কিন্তু টানা কয়েক বছরের টানাপোড়েন অবশেষে ভাঙনের দিকে গড়ায়। তিন ঘণ্টার বোর্ড মিটিং শেষে ইউএসএ ক্রিকেট আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তি বাতিলের নোটিশ পাঠায়। তবে বোর্ডটি এ সিদ্ধান্তে তীব্রভাবে বিভক্ত হয়ে পড়ে।
বোর্ড চেয়ারম্যান ভেনু পিসিকে ও সদস্য ডেভিড হাউবার্ট চুক্তি বাতিলের প্রস্তাব দেন। তাদের সঙ্গে ছিলেন শ্রীনি সালভার, অঞ্জ বলুসু ও পিন্টু শাহ। বিপক্ষে ছিলেন পরিচালক নাদিয়া গ্রুনি, কুলজিত নিঝ্জার, অতুল রাই ও অর্জুন গোনা। এর মধ্যে নাদিয়া গ্রুনি ইতোমধ্যে পিসিকের চেয়ারম্যান পদ নিয়ে আইনি চ্যালেঞ্জও জানিয়েছেন।
মিটিংয়ে উপস্থিত ছিলেন সিইও জনাথন অ্যাটকেইসন ও বোর্ডের আইনি উপদেষ্টা। অ্যাটকেইসন সতর্ক করেন, এসিই-এর নিয়মিত অর্থ ছাড়া ইউএসএ ক্রিকেট কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই দেউলিয়া হয়ে পড়তে পারে।
আইনজীবীরা জানিয়েছেন, এই চুক্তি বাতিল সালিশি আদালতে টিকবে না। বরং এটিকে 'বেপরোয়া' সিদ্ধান্ত আখ্যা দিয়েছেন বাহ্যিক আইন উপদেষ্টা। ইউএসএ ক্রিকেট-এর অভিযোগ ছিল এসিই কয়েকটি শর্ত ভঙ্গ করেছে।
কিন্তু পর্যালোচনায় দেখা গেছে, মাত্র দুটি অভিযোগ চুক্তির বাতিলযোগ্য শর্তের মধ্যে পড়ে—ন্যূনতম গ্যারান্টির অর্থ প্রদান না করা এবং হাই-পারফরম্যান্স সেন্টার তৈরি না করা।
কিন্তু ব্যাংক রেকর্ডে দেখা যায়, এসিই নিয়মিত অর্থ দিয়েছে। এছাড়া গ্র্যান্ড প্রেইরি-তে তৈরি হাই-পারফরম্যান্স সেন্টার আইসিসির মানদণ্ড ছাড়িয়েছে এবং ২০২৪ সালের বিশ্বকাপ আয়োজনের উপযোগী বলে বিবেচিত হয়েছে।
২০১৯ থেকে এখন পর্যন্ত ইউএসএ ক্রিকেটকে ১ কোটি ডলারের বেশি দিয়েছে এসিই। তাদের অর্থ ছাড়া জাতীয় দলের প্রস্তুতি কার্যক্রম হুমকির মুখে পড়বে। চলতি অক্টোবরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ‘এ’ দলের বিপক্ষে তিনটি ওয়ানডে ও তিনটি টি-২০ এবং যুক্তরাষ্ট্র নারী দলের সিরিজ নির্ধারিত ছিল। ম্যাচগুলোতে এমএলসি’র মাঠ ও প্রায় সাত লাখ ডলারের বাজেট ব্যবহারের পরিকল্পনা ছিল। এখন সবকিছু অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
ফলে ২০২৪ সালের বিশ্বকাপের আগে যুক্তরাষ্ট্র জাতীয় দল হয়তো পূর্ণ প্রস্তুতি ছাড়াই মাঠে নামতে বাধ্য হবে। ইতোমধ্যে এসিই জানিয়েছে, তারা চুক্তি বাতিলের বিরুদ্ধে সালিশি আদালতে যাবে, যা ইউএসএ ক্রিকেট-এর আর্থিক চাপ আরও বাড়াতে পারে।
বাংলাফ্লো/এসও
Like
Dislike
Love
Angry
Sad
Funny
Wow
Comments 0