Logo

আরব আমিরাতের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে সিরিজই হারলো বাংলাদেশ

২০২৪ সালে আয়োজিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে আইসিসি’র আরেক সহযোগী দেশ যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে স্বাগতিকদের কাছে ২-১ ব্যবধানেই হেরেছিল বাংলাদেশ। ২০২৫ সালে দ্বিতীয় বারের মতো আইসিসি’র আরেক সহযোগী দেশ আরব আমিরাতের কাছে সিরিজ হারের স্বাদ পেলো বাংলাদেশ।

ছবি: সংগৃহীত

স্পোর্টস ডেস্ক

ঢাকা: পাকিস্তান সিরিজের প্রস্তুতি হিসেবে আইসিসি র‍্যাংকিংয়ে ১৫তম স্থানে থাকা আরব আমিরাতের বিপক্ষে প্রথমে দুই ম্যাচের টি-২০ সিরিজ আয়োজন করে বাংলাদেশ। পরবর্তীতে আরও এক ম্যাচ বাড়ানো হয়। সবাই যখন ধরেই নিয়েছিল হেসেখেলে জিতবে র‍্যাংকিংয়ে এগিয়ে থাকা বাংলাদেশ তখন আরব আমিরাতের খেলোয়াড়দের মনে হয়তোবা ভিন্ন কিছুই ছিল।

আর সেটারই প্রতিফলন তারা দেখার মাঠের খেলায়। সিরিজের প্রথম ম্যাচে হারলেও দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশকে হারিয়ে সমতা আনে দলটি। শেষ ম্যাচে বাংলাদেশকে সব বিভাগে পরাস্ত করে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে হারিয়ে ২০১ ব্যবধানে সিরিজও জিতে নিয়েছে আরব আমিরাত।

বুধবার (২১ মে) শারজাহতে সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি খেলার সব বিভাগেই দুর্দান্ত ছিল আরব আমিরাতের খেলোয়াড়রা।

এ দিন টসে এরে আবার ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশের ব্যাটাররা।

ইনিংসের প্রথম ওভারেই আকিফ রাজাকে চারের পর ছক্কা মেরে ভালোই সূচনা করে তানজিদ হাসান তামিম।

কিন্তু এরপরের ওভার থেকেই দুর্দশা শুরু হয় বাংলাদেশ দলের ব্যাটারদের।

ধ্রুব পরাশরের প্রথম বলেই উড়িয়ে মারতে গিয়ে সীমানায় তালুবন্দি হন সিরিজের প্রথম টি-২০ ম্যাচে সেঞ্চুরি হাকানো ইমন।

এরপরে চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে প্যাডল সুইপ করতে গিয়ে হায়দার আলীর বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন লিটন দাস।

ঠিক তার দুই বল পরেই হায়দারের বলেই এলবিডব্লিউ আউট হয়ে সাজঘরে ফিরেন তাওহিদ হৃদয়।

চতুর্থ ব্যাটার হিসেবে শেখ মেহেদী হাসান আউট হন হায়দারের বলেই। বাংলাদেশের সহ অধিনায়ক যখন বলের লাইন মিস করে বোল্ড হন তখন তার সংগ্রহ ৯ বলে মাত্র ২ রান।

পাওয়ার প্লে’র ৬ ওভার শেষে বাংলাদেশের দলীয় সংগ্রহ দাঁড়ায় ৪ উইকেটে ৪৯ রান।

এক প্রান্ত আগলে রাখা তানজিদ তামিম ভালোই খেলছিলেন। কিন্তু সপ্তম ওভারে আকিফের করা ওভারের বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরেন তিনিও। মাত্র ১৮ বলে চারটি করে চার ও ছক্কায় ৪০ রান আসে তার ব্যাট থেকে।

একাদশ ওভারে মতিউল্লাহ খানের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরেন শামিম। ১২ বলে ৯ রান করে তিনি সাজঘরে ফিরেন।

তার একটু পরেই অবশ্য কোন রান না করেই সাজঘরে ফিরেন রিশাদ।

ইনিংসের ১৪তম ওভারে ছক্কা হাকানোর চেষ্টায় তানজিম হাসান সাকিব ক্যাচ দেন সগির খানের বলে। ১২ বলে ৬ রান করে তিনিও সাজঘরে ফিরেন।

আরব আমিরাতের বোলারদের দুর্দান্ত নৈপুন্যে বাংলাদেশ দলের একসময় স্কোর দাঁড়ায় ৮ উইকেটের বিনিময়ে ৮৪ রান।

এর মাঝে এক প্রান্ত আগলে রেখে ব্যাটিং করেন যান জাকের আলী। ছয়ে নামা উইকেটরক্ষক-ব্যাটার জাকের সর্বোচ্চ ৪১ রানের ইনিংস খেলেন। ৩৪ বল মোকাবিলায় ১ চার ও ৩ ছক্কা হাঁকান তিনি।

নবম উইকেট জুটিতে ২৬ বলে ৪৪ রান আনেন জাকের ও হাসান।

বড় শট খেলতে গিয়ে সগিরের শিকার হন জাকের। সেখান থেকে দলীয় সংগ্রহ ১৬২ রানে পৌঁছায় মূলত টেল এন্ডারদের ব্যাটে ভর করে। হাসান ও শরিফুল দুইটি ক্যামিও ইনিংস খেললে বাংলাদেশের সংগ্রহ সম্মানজনক অবস্থানে পৌঁছায়।

দশে নামা হাসান ১৫ বলে ৩ ছক্কায় ২৬ রানে অপরাজিত থাকেন। সবার শেষে নামা শরিফুল ৭ বলে একটি করে চার ও ছক্কায় করেন অপরাজিত ১৬ রান। দশম উইকেটে স্রেফ ১২ বলে ৩৪ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েন তারা, যা শেষ জুটিতে বাংলাদেশের রেকর্ড।

আরব আমিরাতের পক্ষে হায়দার ৪ ওভারে মাত্র ৭ রানে নেন ৩ উইকেট।

মতিউল্লাহ ও সগির পান দুটি করে উইকেট।

১৬৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে আগের ম্যাচে আমিরাতের জয়ের নায়ক মুহাম্মদ ওয়াসিমকে বেশি বিপজ্জনক হতে দেননি শরিফুল ইসলাম।

ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই শরিফুলের বলে স্লিপে ক্যাচ দেওয়া আরব আমিরার অধিনায়ক ৬ বলে করেন ৯ রান।

অবশ্য এরপরে শরাফু এসে জুটি বাধেন ওপেনার মুহাম্মদ জোহাইবের সঙ্গে। ৩৫ বলে এই জুটি সংগ্রহ করেন ৪৪ রান।

এরপরে জোহাইব সাজঘরে ফিরলেও রাহুল চোপড়ার সঙ্গে জুটি বেধে ২০ বলে ২১ রান সংগ্রহ করেন শরাফু।

এরপরে রাহুল চোপড়ার সাজঘরে ফিরলেও চতুর্থ উইকেটে আসিফের সঙ্গে জুটি বেধে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান শরাফু।

মাত্র ৫১ বলে ৮৭ রান করে এই জুটি ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছাড়ে।

৪৭ বলে পাঁচটি চার ও তিনটি ছক্কার মারে শরাফু ম্যাচ শেষে অপরাজিত ছিলেন ৬৮ রানে। আর ২৬ বলে পাঁচটি ছক্কা হাঁকিয়ে আসিফ ৪১ রান করে অপরাজিত থাকেন।

বাংলাদেশ দলের সবচেয়ে কম খরুচে বোলার হিসেবে শরিফুল ৪ ওভারে ২৪ রানে নেন ১ উইকেট। তানজিম সাকিব নির্ধারিত চার ওভারে ৪০ রানে ১ উইকেট নেন। লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন ৩২ রানের বিনিময়ে নেন এক উইকেট।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালে আয়োজিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে আইসিসি’র আরেক সহযোগী দেশ যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে স্বাগতিকদের কাছে ২-১ ব্যবধানেই হেরেছিল বাংলাদেশ।

২০২৫ সালে দ্বিতীয় বারের মতো আইসিসি’র আরেক সহযোগী দেশ আরব আমিরাতের কাছে সিরিজ হারের স্বাদ পেলো বাংলাদেশ।

বাংলাফ্লো/এসবি

Related Posts খেলা

Leave a Comment

Comments 0