Logo

কমে যাচ্ছে ৭০ লাখেরও বেশি চাকরি: উদ্বেগজনক অবস্থায় বাংলাদেশ

বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার বিদায়ী কান্ট্রি ডিরেক্টর টুমো পৌটিআইনেন বলেন, চাকরির বৈশ্বিক সংকোচন অত্যন্ত উদ্বেগজনক, বিশেষ করে বাংলাদেশের জন্য– যা একাধারে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও জলবায়ু পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে এবং প্রতিবছর দেশটি ১০ লাখেরও বেশি কর্মী বিদেশে পাঠায়।

প্রতীকী ছবি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ঢাকা: দেশে তরুণদের মাঝে বেকারত্ব বাড়ছে। তরুণদের এই বেকারত্ব জাতীয় বেকারত্ব হারের দ্বিগুণেরও বেশি। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতকরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। যদিও শিক্ষার হার বিশ্বজুড়ে বাড়ছে, কর্মসংস্থানে এখনও শিক্ষাগত অমিল রয়েছে।

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে। সংস্থাটি তাদের সর্বশেষ ‘ওয়ার্ল্ড এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল আউটলুক’ প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।

সংস্থাটি জানায়, ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা ও বাণিজ্য বিঘ্নিত হওয়ার কারণে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমে গেছে— যার ফলে চাকরির বৃদ্ধির গতি কমেছে।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০২২ সালে মাত্র ৪৭ দশমিক ৭ শতাংশ কর্মীর শিক্ষাগত যোগ্যতা তাদের কাজের জন্য যথাযথ ছিল। বিগত দশকে কম শিক্ষিত কর্মীর হার ৩৭ দশমিক ৯ শতাংশ থেকে ৩৩ দশমিক ৪ শতাংশে নেমে এলেও অতিশিক্ষিত কর্মীর হার বেড়ে ১৫ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ১৮ দশমিক ৯ শতাংশ হয়েছে।

বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার বিদায়ী কান্ট্রি ডিরেক্টর টুমো পৌটিআইনেন বলেন, চাকরির বৈশ্বিক সংকোচন অত্যন্ত উদ্বেগজনক, বিশেষ করে বাংলাদেশের জন্য– যা একাধারে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও জলবায়ু পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে এবং প্রতিবছর দেশটি ১০ লাখেরও বেশি কর্মী বিদেশে পাঠায়।

তিনি বলেন, এই প্রতিবেদন আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, নারী ও তরুণদের জন্য উপযুক্ত কাজের সুযোগ সৃষ্টির বিষয়টি অবহেলা করা যাবে না। ডিজিটাল ও উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন পেশার চাহিদা বাড়বে বলে পূর্বাভাস, তাই বাংলাদেশের জন্য এখনই দক্ষতা উন্নয়নের সংস্কার বাস্তবায়ন অত্যন্ত জরুরি, যেন দেশের ও বিদেশের বাজারে ভালো মজুরি-সুবিধার কাজের জন্য প্রস্তুত হওয়া যায়।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৫ সালের জন্য বৈশ্বিক কর্মসংস্থানের পূর্বাভাস ৬ কোটি থেকে কমে ৫ কোটি ৩০ লাখে নেমে এসেছে। ফলে চাকরি বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ৭ শতাংশ থেকে কমে ১ দশমিক ৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ পূর্বাভাসের তুলনায় বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশে প্রায় ৭০ লাখেরও কম নতুন চাকরি সৃষ্টি হবে। জিডিপি বৃদ্ধির হার পূর্বাভাস অনুযায়ী ৩ দশমিক ২ শতাংশ থেকে কমে ২ দশমিক ৮ শতাংশ হয়েছে। এই অনুমানগুলো আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) গত এপ্রিল মাসের বিশ্ব অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির ভিত্তিতে করা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার মহাপরিচালক বলেন, আমরা জানি, বৈশ্বিক অর্থনীতি আমাদের প্রত্যাশার চেয়ে ধীরগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। যদি ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা ও বাণিজ্য বিঘ্ন অব্যাহত থাকে এবং যদি আমরা শ্রমজগতের পরিবর্তনশীল বাস্তবতাগুলোর মোকাবিলায় ব্যর্থ হই, তাহলে এর নেতিবাচক প্রভাব শ্রমবাজারে অনিবার্য।

তিনি আরও বলেন, এই পরিস্থিতির পরিবর্তন সম্ভব— সামাজিক সুরক্ষা জোরদার করে, দক্ষতা উন্নয়নে বিনিয়োগ করে, সামাজিক সংলাপ উন্নীত করে এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক শ্রমবাজার গড়ে তুলে প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের সুফল সবাইকে পৌঁছে দিয়ে।

বাংলাফ্লো /এনআর

Leave a Comment

Comments 0