স্পোর্টস ডেস্ক
ঢাকা: কিছুদিন আগেও যে ১৪টি ক্লাব নিয়ে আপত্তি উঠেছিল, সে আরজি হয়তো আর ধোপে টিকবে না। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দেওয়া পর্যবেক্ষণও নিবন্ধন বাতিল করতে পারবে না ক্লাবগুলোর। কারণ, আইনি বাধার সঙ্গে ১৪টি ক্লাবের পাশে ঢাল হিসেবে দাঁড়িয়েছে ঢাকা ক্রিকেট ক্লাব অ্যাসোসিয়েশন। বিসিবির আসন্ন নির্বাচনে ঢাকার ৭৪টি ক্লাবের অংশগ্রহণ থাকবে বলে জানান সংগঠকরা।
ক্লাব অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক বিসিবির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বাবু জানান, ১৪টি ক্লাবের নিবন্ধন বাতিল করতে গেলে দেশের ক্রিকেটের অস্তিত্বে টান পড়বে। গতকাল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ঢাকা ক্রিকেট ক্লাব অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে একে অন্যের বিরুদ্ধে কাদা ছোড়াছুড়ি না করার আহ্বান জানানো হয়। তারা কর্মকর্তাদের অনুরোধ জানান, সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে বিসিবির নির্বাচনে অংশ নিতে।
এ বছর অক্টোবরে হওয়ার কথা বিসিবি নির্বাচন। আইসিসি থেকে নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন আয়োজনের বাধ্যবাধকতা আছে। ক্লাব অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তারাও বেঁধে দেওয়া সময়ে নির্বাচন করার পক্ষে। রফিকুল ইসলাম বাবুর মতে, ‘বিসিবির নির্বাচন নিয়ে নানা ষড়যন্ত্রের কথা শোনা যাচ্ছে মিডিয়ার মাধ্যমে। দেশের ক্রিকেট নিয়ে কোনো ধরনের ষড়যন্ত্র চলবে না। আমরা সেপ্টেম্বরের শেষ বা অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন দেখতে চাই।’
বিসিবির নির্বাচন বানচালের কথা তোলা হলেও ষড়যন্ত্রকারীদের নাম বলতে পারেননি ক্লাব সংগঠকরা। তবে ভোটের রাজনীতিতে কাউন্সিলর সংখ্যা বাড়াতে যারা ক্লাব দখলের লড়াইয়ে নেমেছেন, তাদের থামার আহ্বান জানান তারা। এ ব্যাপারে রফিকুল ইসলাম বাবুর মত হলো, ‘দুদক ১৪টি ক্লাবের ব্যাপারে পর্যবেক্ষণ দিয়েছে। এটা আদালতের রায় না। যে সময়ে ক্লাবগুলো বাছাই লিগ থেকে তৃতীয় বিভাগে উন্নীত হয়েছে, তখন কেউ প্রতিবাদ জানায়নি। অনেক বছর ধরে এই ক্লাবগুলো নিয়মতান্ত্রিকভাবে চলছে। এগুলোর নিবন্ধন বাতিল করতে হলে লিগ বাতিল করতে হবে। ক্রিকেটারদের কাছ থেকে টাকা ফেরত নিতে হবে। বিসিবির নির্বাচিত কমিটি বাতিল হবে। ক্লাবগুলোর নাম-ঠিকানা, কমিটিতে পরিবর্তন হয়েছে। এখন কোনোভাবেই ক্লাবগুলোকে বাতিল করতে পারবে না।’
ফারুক আহমেদ সভাপতি হওয়ার পর বিসিবির গঠনতন্ত্র সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। পরিচালক নাজমুল আবেদীন ফাহিম ক্লাব ক্যাটেগরিতে পরিচালকের সংখ্যা কমানোর প্রস্তাব দেওয়ায় বিদ্রোহ দেখা দেয়। প্রতিবাদস্বরূপ ৭৪টি ক্লাব একাট্টা হয়ে অ্যাসোসিয়েশন গঠন ও লিগ বয়কটের হুমকি দেয়। চাপের মুখে গঠনতন্ত্র সংশোধন কমিটির কর্যক্রম স্থগিত করা হয়। বিগত গঠনতন্ত্রেই নির্বাচন হবে বলে জানান ক্লাব সংগঠকরা।
ক্লাব অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য সচিব সৈয়দ বুরহানুল হোসেন পাপ্পু বলেন, ‘কাউন্সিলরদের ভোটে অনুমোদিত গঠনতন্ত্রে পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচিত হবে। গঠনতন্ত্রের যে ধারা-উপধারায় সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে, সেগুলো সংশোধন করবে নির্বাচিত কমিটি।’
সংবাদ সম্মেলনে ক্লাব কর্মকর্তারা জেলা ও বিভাগ থেকে প্রকৃত ক্রিকেট সংগঠকদের কাউন্সিলর করার পক্ষে মত দেন। বিশেষ করে জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থায় অ্যাডহক কমিটি গঠন করায় বিভাগীয় পর্যায় থেকে কাউন্সিলর মনোনয়নে ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) হস্তক্ষেপ করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। বিএনপির ক্রীড়া সম্পাদক আমিনুল হক এক সাক্ষাৎকারে এ সংশয় প্রকাশ করেন।
যদিও এনএসসি সচিব আমিনুল ইসলাম বলছেন, বিসিবির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী স্বচ্ছতা বজায় রেখে অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচন। ‘আইসিসি সমর্থিত বিসিবির গঠনতন্ত্রে নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। উচ্চ আদালতেরও একটি নির্দেশনা আছে। এনএসসি অভিভাবক সংস্থা হলেও প্রতিটি ফেডারেশনের গঠনতন্ত্রের নিয়মের প্রতি সম্মান দেখায়।’
আজ ২৫ আগস্ট নির্বাচনের প্রজ্ঞাপন জারির কথা থাকলেও তিন দিন পিছিয়ে ২৮ আগস্ট করা হতে পারে বলে জানান পরিচালক ফাহিম সিনহা।
বাংলাফ্লো/এসও
Like
Dislike
Love
Angry
Sad
Funny
Wow
Comments 0