শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

‘পাগলা চাচা শেখ হাসিনা কোথায়’

আগে তিন মাস পর পর খোলা হলেও এবার কিছুটা দেরিতে খোলা হয়েছে সিন্দুক। ৪ মাস ১২ দিন পর খোলা হয়েছে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানসিন্দুক।

জেলা প্রতিনিধি

কিশোরগঞ্জ: মানুষের বিশ্বাস পাগলা মসজিদে দান করলে মনোবাসনা পূর্ণ হয়। আর তাই এই মসজিদের দানবাক্সে টাকার সঙ্গে মনোবাসনা পূরণের আকাঙ্ক্ষার বেশ কিছু চিঠি ও চিরকুট দিয়ে থাকেন। তবে এবার এর মধ্যে পাওয়া একটি চিরকুট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। বেনামি ওই চিরকুটে লেখা রয়েছে ‘পাগলা চাচা, শেখ হাসিনা কোথায়’।

এছাড়া, আরেকটি চিরকুটে দেখা যায় লেখা আছে, ‘ড. ইউনূস স্যারকে আরও ৫ বছর চাই- সাধারণ জনগণ। আল্লাহ তুমি সহজ করে দাও।’

শনিবার (১২ এপ্রিল) সকাল ৭ টায় জেলা প্রশাসনের উপস্থিতিতে সিলগালা করা সিন্দুক খোলা হয়েছে। এসময় সেনাবাহিনী ও পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, আগে তিন মাস পর পর খোলা হলেও এবার কিছুটা দেরিতে খোলা হয়েছে সিন্দুক। ৪ মাস ১২ দিন পর খোলা হয়েছে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানসিন্দুক। এবার ১১ টি সিন্দুক ও অতিরিক্ত একটি ট্রাংক থেকে পাওয়া গেছে ২৮ বস্তা টাকা। তবে এখনো চলছে গণনার কাজ।

জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে মসজিদের দান বাক্স খোলা হয়।

এরপর এগুলো বস্তায় ভরে মসজিদের দোতলায় নিয়ে গণনার কাজ শুরু করা হয়। এখানকার জেলা প্রশাসক পদাধিকার বলে মসজিদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান পুলিশ সুপার হাসান চৌধুরীসহ কয়েকজন ম্যাজিস্ট্রেট টাকা গণনার কাজ তদারকি করেন।

আর একদল আনসার সদস্য নিরাপত্তা বিধান করেন। বিভিন্ন মাদ্রাসার দুই শতাধিক ছাত্র, মসজিদের ৩৪ জন কর্মচারী ও রূপালী ব্যাংকের কর্মকর্তা কর্মচারীরা গণনার কাজে অংশ নিয়েছেন।

রূপালী ব্যাংকের জেলা শাখার কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী হারিসী বলেন, ব্যাংকের ৮০ জন কর্মকর্তা এই গণনার কাজে শেষ পর্যন্ত অংশগ্রহণ করবেন।

মসজিদ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানান, মসজিদের উন্নয়নমূলক কাজ ছাড়াও দানের টাকায় দুঃস্থ ও অসহায়দের নানাভাবে সহযোগিতা দেওয়া হয়। দুরারোগ্য রোগীদের চিকিৎসায় অনুদান দেয় এই মসজিদ।

পাগলা মসজিদে প্রতিদিনই অসংখ্য মানুষ নগদ টাকা-পয়সা ছাড়াও স্বর্ণালঙ্কার দান করেন। এছাড়া গবাদিপশু, হাঁস-মুরগিসহ বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্রও মসজিদে দান করা হয়।

মানুষের বিশ্বাস এই মসজিদে দান করলে মনোবাসনা পূর্ণ হয়। এ কারণে দূর-দূরান্ত থেকেও অসংখ্য মানুষ এসে এখানে দান করে থাকেন। শুধু মুসলমান নয়, সব ধর্মের মানুষ এখানে টাকা-পয়সা দান করে থাকেন।

কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহাসিক স্থাপনার মধ্যে পাগলা মসজিদ অন্যতম একটি প্রতিষ্ঠান।

শহরের পশ্চিমে হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে ১০ শতাংশ ভূমির ওপর এই মসজিদটি গড়ে উঠেছিল। সময়ের বিবর্তনে মসজিদের পরিধির সঙ্গে সঙ্গে এর খ্যাতিও বেড়েছে।

বাংলাফ্লো/এসবি

Leave a Comment

Comments 0