বাংলা ফ্লো প্রতিনিধি
ঢাকা: বাংলাদেশকে দেওয়া ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের ৪র্থ ও ৫ম কিস্তি পাওয়ার বিষয়ে আগামী জুনে সিদ্ধান্ত হবে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।
সংস্থাটি বলছে, বৈশ্বিক অনিশ্চয়তার কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বহুমুখী চ্যালেঞ্জে রয়েছে। তবে মূল্যস্ফীতি সামান্য কমলেও তা এখনও লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি। মূল্যস্ফীতি (৯.৪ শতাংশ) এখনও উচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। ।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) আইএমএফ মিশন ৬ থেকে ১৭ এপ্রিল বাংলাদেশ সফর শেষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান।
আইএমএফ প্রতিনিধি দল জানায়, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ টানতে সুশাসন নিশ্চিত জরুরি। বাংলাদেশের সাথে আমাদের আলোচনা চলমান এবং সঠিক পথে চলছে। বাংলাদেশকে দেওয়া ৪.৭ বিলিয়ন ঋণের ৪র্থ ও ৫ম কিস্তির অর্থ পাওয়ার বিষয়ে আগামী জুনে সিদ্ধান্ত হবে। জুনে আইএমএফর বোর্ড মিটিং আছে, সেখানেই সিদ্ধান্ত আসবে।
সংস্থাটি বলছে, বৈশ্বিক অনিশ্চয়তার কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি বহুমুখী চ্যালেঞ্জে রয়েছে। মূল্যস্ফীতি সামান্য কমলেও তা এখনও লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি। তবে প্রবৃদ্ধি কমে ৩ দশমিক ৩ শতাংশ হলেও মূল্যস্ফীতি (৯.৪ শতাংশ) এখনও উচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। রাজস্ব আদায়ে কর সংস্কার, বিনিময় হারে নমনীয়তা, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পুনর্গঠন ও ব্যাংক খাত সংস্কারে জোর দিয়েছে।
তবে স্বচ্ছতা, সুশাসন ও বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বাধীনতা বিনিয়োগ পরিবেশে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছে আইএমএফ।
মিশন প্রধান পাপেজোরজিউ বলেন, স্বচ্ছতা, সুশাসন ও বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বাধীনতা বিনিয়োগ পরিবেশে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।
ব্যাংক খাতে সুসংগঠিত সংস্কার এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বাধীনতা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, সুশাসন ও স্বচ্ছতা বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নয়নে ও রপ্তানি খাতের বৈচিত্র্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। জলবায়ু-সহনশীল অর্থনীতিতেও বিনিয়োগ বাড়ানোর তাগিদ দেন।
আলোচনা আগামীতে ওয়াশিংটনে আইএমএফ-ওয়ার্ল্ড ব্যাংক বৈঠকেও চলবে বলেও জানান তিনি।
পাপেজোরজিউ বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি বর্তমানে বহুমুখী চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। ২০২৫ অর্থবছরের প্রথমার্ধে জিডিপি প্রবৃদ্ধি নেমে এসেছে ৩ দশমিক ৩ শতাংশে, যেখানে গত অর্থবছরে একই সময়ে প্রবৃদ্ধি ছিল ৫ দশমিক ১ শতাংশ। মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে মার্চে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৪ শতাংশ, তবে এটি এখনো বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত ৫ থেকে ৬ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রার বাইরে।
আইএমএফ বলেছে, বড় আকারের বৈদেশিক অর্থায়নের ঘাটতি পূরণ ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কঠোর নীতিমালার প্রয়োজন রয়েছে। রাজস্ব আদায় বাড়াতে কর সংস্কারের ত্বরান্বিত বাস্তবায়নের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে, বিনিময় হারে নমনীয়তা ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পুনর্গঠনের দিকেও দৃষ্টি রাখার সুপারিশ করা হয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে জলবায়ু-প্রতিক্রিয়াশীল অর্থনীতি ও অবকাঠামোতে বিনিয়োগের তাগিদও দেওয়া হয়েছে।
আইএমএফ জানিয়েছে, আগামী দিনে ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠেয় আইএমএফ-ওয়ার্ল্ড ব্যাংক বসন্তকালীন বৈঠকের সময়ও আলোচনা অব্যাহত থাকবে। কর্মসূচির আওতায় সংস্কারের গতি বজায় রাখতে সম্ভাব্য চুক্তির লক্ষ্যে কাজ চলবে।
সফরকালে আইএমএফ দল অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর, অর্থ সচিব, এনবিআর চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। এছাড়া, তারা বেসরকারি খাত, থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ও আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গেও মতবিনিময় করেছে।
বাংলাফ্লো/এসবি
Comments 0