শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যা মামলার খসড়া তদন্ত প্রতিবেদন প্রসিকিউশনে জমা

চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, একাধিক অপরাধের তথ্য-প্রমাণ মিলেছে খসড়া তদন্ত রিপোর্টে। পার পাওয়ার কোনও সুযোগ নেই।

চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামফাইল ছবি

বাংলা ফ্লো প্রতিবেদক

ঢাকা: জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা মামলার খসড়া তদন্ত প্রতিবেদন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনের হাতে এসেছে বলে জানিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

বুধবার (২ এপ্রিল) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

তাজুল ইসলাম বলেন, তদন্ত প্রতিবেদনে গণহত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বহু প্রমাণ ও উপাত্ত রয়েছে। কখনো সরাসরি, কখনো টেলিফোনেসহ নানা মাধ্যমে গুলির নির্দেশ দিয়ে তা আবার নিশ্চিতও করেন শেখ হাসিনা। হেলিকপ্টার থেকে গুলি করার স্পষ্ট নির্দেশও দিয়েছিলেন তিনি। আইনের ভাষায় এ গণহত্যার সুপেরিয়র কমান্ড রেসপনসিবিলিটি শেখ হাসিনার।

চিফ প্রসিকিউটর জানান, খসড়া প্রতিবেদনটি এখন প্রসিকিউশনের হাতে রয়েছে। প্রতিবেদনে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে গণহত্যার চালানোর অজস্র প্রমাণ উঠে এসেছে। শিগগিরই চূড়ান্ত প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালে জমা দেওয়া হবে।

ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম জানিয়েছেন, ছাত্র জনতার আন্দোলন নির্মূলে সংঘটিত হত্যা-গণহত্যা, বিগত আমলে গুমসহ নানা ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনে এ পর্যন্ত ৩০০টির বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে।

প্রসিকিউটর বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন বরাবর জুলাই-আগস্টে গণ-আন্দোলন নির্মূলে পরিচালিত হত্যা-গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ, বিগত ১৫ বছরে গুমের বিভিন্ন অভিযোগ ও ২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিল শাপলা চত্বরে পরিচালিত গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।

ছাত্র-জনতার আন্দোলন নির্মূলে বিগত সরকারের শীর্ষ ব্যক্তি ও কর্মকর্তা এবং রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও দলীয় ক্যাডারদের বিরুদ্ধে হত্যা ও গণহত্যার সুনির্দিষ্ট ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ উল্লেখ করে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা ও বিচারের আরজি পেশ করা হয়েছে এসব অভিযোগে।

প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম জানান, এসব অভিযোগের মধ্যে এখন পর্যন্ত ২৩টি (মিসকেস) মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ১৪৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫০ জনের মতো আসামি গ্রেফতার রয়েছেন।

গত ১৭ অক্টোবর গণহত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ ২০ এপ্রিলের মধ্যে শেখ হাসিনার বিরদ্ধে তদন্তকাজ শেষ করার নির্দেশ দেন।

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। এর আগে-পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের গুলিবর্ষণ ও হামলায় প্রায় দেড় হাজার মানুষ প্রাণ হারান। শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপি এবং শীর্ষ সারির নেতাদের বিরুদ্ধে জুলাই-গণহত্যার অভিযোগ ট্রাইব্যুনালে দায়ের করা হয়েছে। বিভিন্ন ভুক্তভোগীর পরিবার ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছে, যেগুলোর তদন্ত করছে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।

বাংলাফ্লো/এসবি

Leave a Comment

Comments 0