শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতাদের গার্মেন্টস ক্রয়াদেশ স্থগিতে উদ্বেগ বাংলাদেশি রফতানিকারকদের

মোহাম্মদ মুশফিকুর রহমান বলেছেন, ব্যাগ, বেল্ট আর ওয়ালেটসহ প্রায় তিন লাখ মার্কিন ডলার অর্থমূল্যের চামড়াজাত পণ্য রফতানির অপেক্ষায় ছিল। কিন্তু এই শিপমেন্ট স্থগিত রাখাতে রবিবার একটি চিঠি পেয়েছি। অথচ ওই ভদ্রলোক আমার দীর্ঘদিনের ক্রেতা।

বাংলা ফ্লো ডেস্ক

ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা ৩৭ শতাংশ শুল্কের পরে পোশাক খাত নিয়ে আরেকটি ধাক্কা খেলো বাংলাদেশ। ইতোমধ্যেই তৈরি হওয়া পোশাকের ক্রয়াদেশ বাতিল করতে শুরু করেছেন মার্কিন ক্রেতারা।

সোমবার (৭ এপ্রিল) বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প খাতের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ এ তথ্য দিয়েছেন বলে জানিয়েছে ফরাসি বার্তাসংস্থা এএফপি।

এসসেনর ফুটওয়্যার অ্যান্ড লেদার প্রোডাক্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মুশফিকুর রহমান বলেছেন, ব্যাগ, বেল্ট আর ওয়ালেটসহ প্রায় তিন লাখ মার্কিন ডলার অর্থমূল্যের চামড়াজাত পণ্য রফতানির অপেক্ষায় ছিল। কিন্তু এই শিপমেন্ট স্থগিত রাখাতে রবিবার একটি চিঠি পেয়েছি। অথচ ওই ভদ্রলোক আমার দীর্ঘদিনের ক্রেতা।

২০০৮ সাল থেকে রফতানি ব্যবসায় আছেন জনাব রহমান। প্রতিমাসে গড়ে লাখ ডলারের পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে পাঠিয়ে থাকেন বলে দাবি করেছেন তিনি।

বাংলাদেশের মোট রফতানি বাণিজ্যের ৮০ শতাংশের মতোই আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৮৪০ কোটি ডলার মূল্যমানের দ্রব্য রফতানি করেছিল দেশটি। এরমধ্যে তৈরি পোশাকের অর্থমূল্য ছিল প্রায় ৭৩৪ কোটি ডলার।

গত আগস্টে বাংলাদেশে ব্যাপক রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে প্রাথমিকভাবে অনেকটা বেসামাল হয়ে পড়ে তৈরি পোশাক খাতের উৎপাদন। কয়েকমাসে অনেকটা সামলে নেওয়ার চেষ্টা করলেও নতুন মার্কিন শুল্কের আঘাতে আবারও যেন খড়্গ নেমে আসে পোশাক শিল্পের ওপর।

আগে থেকেই বাংলাদেশের তুলাজাত পণ্য মার্কিন মুলুকে আমদানিতে ১৬ শতাংশ শুল্কের বোঝা ছিল, সেটাকে একলাফে ৩৭ শতাংশ করেছেন ট্রাম্প।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাতে এএফপি জানিয়েছে, উইকিটেক্স বিডির দেড় লাখ ডলার মূল্যের শিপমেন্ট স্থগিতের অনুরোধ করেছেন মার্কিন ক্রেতারা। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেছেন, শুল্ক জারির পর এই পণ্য নিলে বাড়তি দামের বোঝা বইতে হবে সাধারণ মার্কিন ভোক্তাদের। তাই, মূল্য না কমালে সেটা নিতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা।

পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দেওয়ার চেষ্টায় মার্কিন ক্রেতাদের উদ্দেশে চিঠি লিখেছেন বিজিএমইএ-এর সরকারি নিয়োগপ্রাপ্ত প্রশাসক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন। তিনি বলেছেন, শুল্ক নীতি নিয়ে সবাই উদ্বিগ্ন। কিন্তু উৎপাদকদের ওপর সরাসরি সব বোঝা চালিয়ে দিলে ভোগান্তির মাত্রা আরও বৃদ্ধিই পাবে। বাংলাদেশ এই সংকট সমাধানের যুক্তিসংগত একটি উপায় খুঁজছে। এ সময় আমাদের সমর্থন দিতে সবাইকে অনুরোধ করছি।

এদিকে, বিজিএমইএ-র সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল এএফপিকে বলেছেন, পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত শিপমেন্ট স্থগিত রাখতে চিঠি দিয়েছেন অধিকাংশ ক্রেতা। বিশেষত, তুলনামূলক ছোট ক্রেতাদের আবদার, হয় বাংলাদেশি রফতানিকারকরা শুল্কের পুরো আঁচ সহ্য করুক নতুবা বাড়তি খরচা দুপক্ষের মধ্যে ভাগ করে নিক।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এক জরুরি বৈঠক ডেকেছিলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তার প্রশাসনের প্রেস সচিব জনাব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, শুল্ক ইস্যু সমাধানের লক্ষ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বরাবর চিঠি লিখেছেন প্রধান উপদেষ্টা।

।।এএফপি।।

বাংলাফ্লো/এসবি

Leave a Comment

Comments 0