বাংলাফ্লো স্পোর্টস

ঢাকা: এ যেন তুমুল ঝড়ের মাঝে তরী চালিয়ে তীরে এসে ডুবে যাওয়া। হ্যাঁ, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের শেষ ম্যাচের সমীকরণটা অনেকটা এমনই হয়ে গেলো। ম্যাচ জিতলো, সমীকরণকে নিজেদের করে নেওয়ার লড়াইয়ে সবার মনও জিতলো কিন্তু বিশ্বকাপের মূল পর্বে জায়গা করে নিতে পারলো না সামাণ্য একটা ভুলে।

আর তাতেই ভাগ্যদেবী মুখ তুলে তাকায় বাংলাদেশের জ্যোতিদের দিকে। ফলে বাংলাদেশের টাইগ্রেসদের হাতে চলে আসে ভারতে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপের মূল পর্বে খেলার টিকেট।

পরপর তিন ম্যাচ জিতলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হেরে বিশ্বকাপের মূল পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করার স্বপ্নে ধাক্কা খায় বাংলাদেশের বাঘিনীরা।

বাছাইপর্বে নিজেদের সবশেষ ম্যাচে আজ পাকিস্তানের কাছে হেরে যাওয়ার পরে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন আরও কঠিন হয়ে যায়।

তবে নিজেদের ম্যাচ হারলেও সমীকরণ বলছিল, ওয়েস্ট ইন্ডিজের শেষ ম্যাচের ফলাফল ও রানরেটের ওপর নির্ভর করছে জ্যোতিদের ভাগ্য।

অন্যদিকে, পাকিস্তানের কাছে বাংলাদেশ হেরে যাওয়ার ফলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটারদের সামনেও চলে সমীকরণের নানা হিসেব।

মাঠে তুলনামূলক সহজ প্রতিপক্ষ থাইল্যান্ডের বিপক্ষে জয় তুলে নেওয়ার পাশাপাশি বাড়াতে হবে রানরেটও।

কারণ টানা দুই হারে বাংলাদেশের নেট রানরেট নেমে দাঁড়িয়েছিল ০.৬৩৯। বিশ্বকাপের মূল পর্বে খেলতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রয়োজন ছিল ম্যাচ জয়ের পাশাপাশি এই রানরেটকে টপকে যাওয়া।

থাইল্যান্ডের দেয়া ১৬৭ রানের লক্ষ্য ১০.১ ওভারে টপকে যেতে পারলেই বাংলাদেশকে পেছনে ফেলে বিশ্বকাপের মূল পর্বে চলে যাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে ১৬৬ রানে পৌঁছানোর পর শেষ বলে চার হলে ১০.৪ ওভারের ভেতর ওয়েস্ট ইন্ডিজ জয় পেলেও বিশ্বকাপের টিকিট পাবে। এখানেই শেষ নয়, ১৬৬ রানের পর শেষ বলে ছয় মারতে পারলে ১১ ওভারের ভেতর জয় পেলেও উইন্ডিজ বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পেত।

এমন একাধিক সমীকরণের ম্যাচে বিশ্বকাপের টিকিট নিজেদের ভুলেই হাত ছাড়া করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। লক্ষ্য তাড়া করতে মাঠে নেমে ঝড় তুলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটাররা।

১০.৪ ওভারে ১৬২ রান ছিল ক্যারিবিয়ানদের।

জয়ের জন্য ৫ রানের প্রয়োজন হলেও পরের দুই বলে একটি চার ও একটি ছয় মারতে পারলে বিশ্বকাপের টিকিট পেয়ে যেত ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

কিন্তু স্টেফানি টেইলর ১০.৫ ওভারের সেই বল চার মারার জন্য লং অনে সজোরে শট খেললে বল থাইল্যান্ডের ফিল্ডারের মাথার ওপর দিয়ে ছয় হয়ে যায়।

সেই সঙ্গে ম্যাচ জিতে গেলেও বিশ্বকাপের আশা শেষ হয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের।

২৩৫ বল হাতে রেখে ৬ উইকেটে ম্যাচ জিতলেও বিশ্বকাপের দরজা খুলতে পারেনি ক্যারিবিয়ানরা।

১০.৫ ওভারেই থাইল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ জিতলেও শেষ রক্ষা আর হয় নি ওয়েস্ট ইন্ডিজের।

তীরে এসে তরী ডুবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের আর তাতেই ভাগ্য খুলে যায় বাংলাদেশের টাইগ্রেসদের।

ভাগ্যদেবী জ্যোতিদের হাতে তুলে দেয় ভারতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া বিশ্বকাপের মূল পর্বে খেলার টিকেট।

থাইল্যান্ডের বিপক্ষে জিতলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজ নারীদের নেট রানরেট ০.৬৩। আর অন্যদিকে বাছাইপর্বের সেরা দল পাকিস্তানের কাছে হারলেও ০.৬৪ রানরেট থাকায় বাছাইপর্বের দ্বিতীয় সেরা দল হিসেবে বিশ্বকাপের মূল পর্বে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।

এর আগে নিজেদের ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাট করা টাইগ্রেসরা ৯ উইকেট হারিয়ে ১৭৮ রান সংগ্রহ পায়। সেই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৬২ বল হাতে রেখে ৭ উইকেটের জয় পায় পাকিস্তানের মেয়েরা। তাতে ৬ দলের বাছাই পর্বে পাঁচ ম্যাচ জিতে বিশ্বকাপে পা রাখে পাকিস্তান।

উল্লেখ্য, পাকিস্তানে চলমান বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের খেলায় নিজেদের প্রথম তিন ম্যাচে থাইল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডকে উড়িয়ে মূল পর্বের যাওয়ার জন্য সহজ পথ বানিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হারের পর, শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে হারে টাইগ্রেসরা।

বাংলাফ্লো/এসবি