বাংলাফ্লো স্পোর্টস
ঢাকা: হিথ স্ট্রিক, এলিস্টার ক্যাম্পবেল, গ্রান্ট ফ্লাওয়ারদের সেই জিম্বাবুয়ে দল এখন আর নেই। এরপরে একটা সময় আসে যখন তাদের বলে কয়েই হারাতো বাংলাদেশ। কিন্তু সেই দিনও সম্ভবত হারিয়ে গেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট থেকে।
অন্তত জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিলেটের প্রথম টেস্ট ম্যাচে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স তাই বলছে। ভক্তরা যখন আশা করছিল ঘরের মাঠে ভালো কিছু করে দেখাবে বাংলাদেশ দল তখন দেখা গেলো ভিন্ন কিছু। ঘরের দাওয়াত দিয়ে এনে জিম্বাবুয়েকে জয় উপহার দিল বাংলাদেশ। প্রথম টেস্টের চতুর্থ দিনে ম্যাচ শেষ হলেও এই ম্যাচে জয়ের জন্য বিশেষ কিছু আসলে করে দেখাতে পারে নি নাজমুল হোসেন শান্তর দল। উলটো ব্যাটিংয়ে দুই ইনিংসেই বাংলাদেশ দলের ব্যাটারদের ব্যর্থতা পুরো টেস্টে ছিল চোখে পড়ার মতো। ভক্তরা বলছে, এ যেন ঘরের মাঠে দাওয়াত দিয়ে এনে জিম্বাবুয়েকে জয় উপহার দিল বাংলাদেশ।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) চতুর্থ দিনের শেষ সেশনে টাইগারদের ৩ উইকেটে হারায় জিম্বাবুয়ে। প্রথম ইনিংসের বাজে ব্যাংটিয়ের পরও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি বাংলাদেশ।
এ দিন অর্থাৎ বুধবার (২৩ এপ্রিল) বৃষ্টির কারণে সকালে নির্ধারিত সময়ে খেলা শুরু হতে পারেনি। শুরু হয়েছে সকাল ১১টায়। তবে এরপর থেকে বাংলাদেশের পরিস্থিতিটা ক্রমে খারাপই হতে শুরু করে।
দিনের দ্বিতীয় বলেই আউট হন ৬০ রানে অপরাজিত নাজমুল হোসেন শান্ত। আগের দিনের সঙ্গে আর কোনো রানই যোগ করতে পারেননি নিজের খাতায়। শিকার বনে যান মুজারাবানির।
তাতে শান্তরও দোষ আছে বৈকি! অফ স্টাম্পের বাইরে শর্ট পিচ বলটা পুল করতে চেয়েছিলেন তিনি। সেটা লিডিং এজ হয়ে উঠে যায় ওপরে। ফাইন লেগে থাকা ভিক্টর নিয়াউচির হাতে গিয়ে জমা পড়ে বলটা।
উইকেটে শেষ স্বীকৃত ব্যাটার হিসেবে আসেন মেহেদি হাসান মিরাজ। তিনিও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। মুজারাবানির গতির কাছে পরাস্ত হয়ে তিনি ক্যাচ দেন গালিতে থাকা ব্রায়ান বেনেটের হাতে। আউট হন ১৫ বলে ১১ রান করে। মুজারাবানি তুলে নেন তার ক্যারিয়ারের তৃতীয় ফাইফার।
এর এক ওভার পর তাইজুল আউট হন রিচার্ড এনগারাভার শিকার হয়ে। তিনি ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে থাকা মায়াভোর হাতে। ফলে দিনের শুরুর ৬ ওভারে তিন উইকেট খুইয়ে বসে বাংলাদেশ।
এরপর হাসান মাহমুদকে সঙ্গে নিয়ে জাকের জুটি গড়েছিলেন। যদিও জাকেরের অ্যাপ্রোচ নিয়ে কথা উঠতেই পারে। ওভারের তৃতীয়-চতুর্থ বলে নির্দ্বিধায় স্ট্রাইক দিচ্ছিলেন টেল এন্ডার হাসানকে। ৫০ এরও বেশি বল খেলে সে আস্থার প্রতিদান অবশ্য দিয়েছেন হাসান, কিন্তু যেভাবে তিনি আউট হয়েছেন শেষে, তা তার সঙ্গী ‘শেষ স্বীকৃত ব্যাটার’ জাকেরের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিতেই পারে।
৯১ বলে ৩৫ রানের জুটিটা শেষ হয় অফ স্টাম্পের বাইরের বলে ব্যাট চালিয়ে হাসান মিড অফে ক্যাচ দিলে। এরপর আরেকটু হলে সে ওভারেই ওয়েলিংটন মাসাকাদজা ইনিংস শেষ করে দিচ্ছিলেন বাংলাদেশের। খালেদ আহমেদকে পরের বলে আউট করে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন।
হ্যাটট্রিকটা হয়ে গেলে সে ওভারে শেষ হতো বাংলাদেশের ইনিংস। তবে নাহিদ রানা শেষ বলটা ঠেকিয়ে তা হতে দেননি।
তাতে বাংলাদেশের লাভ হয়েছে মোটে ৭ রানই। জাকের আলী রিচার্ড এনগারাভার পরের ওভারে এক ছক্কাসমেত আনেন ৭ রান, তবে সে ওভারেও তৃতীয় বলে তিনি স্ট্রাইক ফেরত দেন টেল এন্ডার নাহিদকে। যদিও নাহিদ তার কাজটা ভালোভাবেই সেরেছেন, সে ওভারটা শেষ করেছেন কোনোরকম বিপদ ছাড়াই।
এরপর আক্রমণে আসেন মুজারাবানি। তার শিকার বনে যান জাকের। ৫৮ রানের ইনিংসটা তার শেষ হয় কাউ কর্নারে নিক ওয়েলশের হাতে ক্যাচ দিয়ে। বাংলাদেশ ইনিংস শেষ করে ১৭৩ রানের লিড নিয়ে।
জয়ের জন্য জিম্বাবুয়ের দরকার ছিলো ১৭৪ রান।
ব্রেইন বেনেট আর বেন কুরানের ব্যাটে দারুণ শুরু করে জিম্বাবুয়ে। এপর ভাঙনের মুখে পড়লেও জিম্বাবুয়েকে ঠেকাতে পারেনি বাংলাদেশ।
প্রথম ইনিংসে ১৯১ করা বাংলাদেশ নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে করেছিল ২৫৫ রান।
জবাবে জিম্বাবুয়ে নিজেদের প্রথম ইনিংসে তোলে ২৭৩ রান।
আর দ্বিতীয় ইনিংসে তারা তোলে ১৭৪ রান। হারায় ৭ উইকেট।
বাংলাদেশের বিপক্ষে জিম্বাবুয়ে জয় তুলে নেয় তিন উইকেটে।
বাংলাফ্লো/এসবি
Comments 0