Logo

কোপা দেল রে ফাইনাল: বার্সেলোনা নাকি রিয়াল মাদ্রিদের ঘরে যাবে শিরোপা?

বার্সেলোনা কী পারবে ৩২তম বারের মতো কোপা দেল রে শিরোপা ঘরে তুলতে? নাকি রিয়াল মাদ্রিদ ২১ তম বারের মতো ঘরে নেবে এই শিরোপা?

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাফ্লো স্পোর্টস

ঢাকা: ইতিহাস, প্রতিদ্বন্দ্বিতা আর স্প্যানিশ ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই মানেই বার্সেলোনা বনাম রিয়াল মাদ্রিদ ম্যাচ।

২০১৪ সালের পর এবারই প্রথম কোপা দেল রে ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে বার্সা ও মাদ্রিদ—আর উত্তেজনার পারদ একেবারে ঊর্ধ্বে।

সেভিয়ার ঐতিহাসিক লা কার্তুজা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এল ক্লাসিকো ।

বার্সেলোনা কোচ হান্সি ফ্লিক–এর অধীনে পুনরুজ্জীবিত বার্সেলোনা খুঁজছে তাদের ৩২তম কোপা শিরোপা। অপরদিকে, কার্লো আনচেলত্তির রিয়াল মাদ্রিদ আরও একটি ট্রফি যোগ করতে চায় তাদের দুর্দান্ত মৌসুমে।

৭০ হাজারের বেশি দর্শক সরাসরি গ্যালারিতে, আর বিশ্বজুড়ে লক্ষ লক্ষ চোখ—এটা কেবল একটি ম্যাচ নয়, বরং একটি বার্তা।

গত কয়েক মৌসুমে বার্সেলোনা বারবার চেষ্টা করেছে নিজেদের পুরনো দিন ফিরিয়ে আনতে যেখানে তারা মাঠের ফলাফলে ছিল নির্মম, ধারাবাহিক জয়ী, ব্যর্থতায় প্রতিরোধী।

কিন্তু সে চেষ্টা তাদের সফল হয় নি নানা কারণে।

তবে এবার হ্যান্সি ফ্লিক এসে বদলে দিয়েছেন বার্সাকে—শুধু মাঠে নয়, মাঠের বাইরেও।

ফ্লিক শিখিয়েছেন, ফুটবল কেবল ফলাফলের খেলা নয় বরং এক যাত্রাপথের নাম।

তরুণ, ক্ষুধার্ত একদল খেলোয়াড়কে তিনি পরিচালনা করছেন এক সহজ অথচ পরিশীলিত নেতৃত্বে।

তবে আজ বার্সেলোনা খেলছে দুই তারকা—রবার্ট লেভানদোভস্কি এবং আলেহান্দ্রো বালদে–কে ছাড়াই।

কিন্তু তাদের ভরসা এখন তরুণদের ওপর। ম্যাচের সব আলো পড়েছে ১৭ বছর বয়সী লামিন ইয়ামাল–এর ওপর, যিনি গোটা মৌসুমজুড়ে দর্শকদের মুগ্ধ করেছেন।

তার সঙ্গে আক্রমণে আছেন দানি ওলমো ও রাফিনহা—একটি দ্রুতগতির, কারিগরি ভিত্তিক ত্রয়ী।

মাঝমাঠে থাকবেন গাভি ও পেদ্রি।

আর অন্যদিকে কোপা দেলরে টুর্নামেন্টে আলাদাভাবে আলো ছড়ানো ফেরান তোরেসও থাকবে সবার নজরে। এই টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ পাঁচটি গোল করে রিয়ালের এন্ড্রিকের সমান অবস্থানে আছেন সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়ার দৌড়ে।

তবে গোলবারে কে থাকছেন তা নিয়ে ভক্তদের মাঝে চলছে নানা আলোচনা। কারণ একদিকে মৌসুমের মাঝপথ থেকে গোলবার সামলানো পোলিশ শেজনিও আছেন দুর্দান্ত ফর্মে।

২১৫ দিন পরে ইনজুরি কাটিয়ে দলে ফিরেছেন মার্ক–আন্ড্রে টের স্টেগান। আর অন্যদিকে তার বদলে তবে খেলার সম্ভাবনা বেশি শেজনিরই।

রিয়াল মাদ্রিদ দল অবশ্য স্বস্তিতে নেই। দল পূর্ণ শক্তি নিয়ে মাঠে নামার সম্ভাবনা থাকলেও ম্যাচের আগে ঘটে গেছে কিছু অনাকাঙ্খিত বিষয়। বিশেষ করে রেফারি ইস্যুতে গোঁটও ২৪ ঘণ্টার নাটক তো প্রায় সব ফুটবল ভক্তের মুখে মুখে।

তবে মাঠের বাইরে যাই হোক না কেনো এই ম্যাচে রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে গোলবার সামলাবেন কোর্তোয়াই। জুড বেলিংহ্যাম ইউরোপের অন্যতম সেরা মিডফিল্ডার হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেছেন। কিন্তু তার সামনে আক্রমণভাগের খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স নিয়ে অবশ্য স্বস্তিতে নেই রিয়াল মাদ্রিদ। আর তাই তাদের আশা ভিনিসিয়াস, এমবাপ্পেরা যেনো ফর্মে ফিরে আসে।

তবে এই নজরে রাখতে হবে এন্দ্রিক–কে। কারণ এই তরুণ ব্রাজিলিয়ান ইতিমধ্যেই এই কাপ রানে ৫টি গোল করেছেন—তিনি হতে পারেন ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট।

এই মৌসুমে বার্সার বিপক্ষে আগের দুটি ম্যাচই রিয়াল হেরেছে লজ্জাজনকভাবে—৪-০ ও ৫-২ ব্যবধানে।

তাই লা কার্তুজা স্টেডিয়ামের এই ফাইনাল কেবল আরেকটি ম্যাচ নয়, বরং রিয়ালের মুখরক্ষা।

দলটির কোচ হিসেবে অবশ্য কার্লো আনচোলত্তি নিজেও স্বস্তিতে নেই খুব বেশি।

তিনি আগামী মৌসুমে ব্রাজিল জাতীয় দলের দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন—এমনটাই আলোচনায়। তবে তার আগে এই মৌসুমে দলের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে গিয়ে ক্লান্ত তিনি। ফাইনালের ফলাফল যাই হোক, এই নাটকের শেষ দৃশ্য নাও হতে পারে আজ।

এই ম্যাচ শুধুই একটি ট্রফি জয়ের জন্য নয়। এটি মর্যাদা, প্রতিশোধ এবং উত্তরাধিকার রক্ষার লড়াই।

সেভিয়ায় বার্সা নামবে প্রস্তুত হয়ে, আত্মবিশ্বাস নিয়ে। বার্সার জন্য এটি প্রমাণের সুযোগ—তাদের নতুন যুগ থেমে যাওয়ার জন্য নয় বরং ভবিষ্যতে রাজত্ব করার জন্যেই প্রস্তুত হচ্ছে।

আর অন্যদিকে রিয়াল মাদ্রিদ তাদের ট্রফি কেবিনেটে নতুন একটা শিরোপা যোগ করতে চাইবে।

ইতিমধ্যেই সাফল্য আনছে। মাদ্রিদের জন্য এটি আধিপত্য ধরে রাখার মিশন।

কারণ ১১ মে’র এল ক্লাসিকো হয়তো নির্ধারণ করে দেবে লিগ শিরোপাও।

আর রিয়াল?  তারা নামবে হয় নবজন্ম নিয়ে, নয়তো ক্ষত নিয়ে।

ম্যাচের আগে শেষ মুহূর্তে তাই এখন সবার মনেই চলছে নানা ধরণের হিসাব-নিকাশ।

কার ঘরে যাবে কোপা দেল রে শিরোপা?

বার্সেলোনা কী পারবে ৩২তম বারের মতো কোপা দেল রে শিরোপা ঘরে তুলতে? নাকি রিয়াল মাদ্রিদ ২১ তম বারের মতো ঘরে নেবে এই শিরোপা?

বাংলাফ্লো/এসবি


Related Posts খেলা

Leave a Comment

Comments 0