জেলা প্রতিনিধি
কিশোরগঞ্জ: এবার ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্স থেকে পাওয়া গেল রেকর্ড ৯ কোটি ১৭ লাখ ৮০ হাজার ৬৮৭ টাকা! এছাড়াও পাওয়া গেছে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার, যা দেশের অন্যতম বৃহৎ দানসংগ্রহের নজির স্থাপন করেছে।
শনিবার (১২ এপ্রিল) গণনার কাজ শেষে শনিবার বিকেল পৌনে ৬টায় রূপালী ব্যাংক কিশোরগঞ্জ শাখার সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) রফিকুল ইসলাম এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
এদিন সকালে ৪ মাস ১২ দিন পর মসজিদের ১১টি দানবাক্স খোলা হয়। এতে ২৮ বস্তা টাকা পাওয়া গেছে, যার গণনার কাজ শুরু হয় মসজিদ কমপ্লেক্সের দুই তলায়।
গণনায় অংশ নিয়েছে চার শতাধিক মানুষ, যার মধ্যে ছিলেন মসজিদ কমপ্লেক্সের মাদরাসা ও এতিমখানার শিক্ষক-শিক্ষার্থী, পার্শ্ববর্তী জামিয়া এমদাদিয়া মাদরাসার শিক্ষার্থী, রূপালী ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ অন্যান্য সদস্য।
সকালে দান বাক্স খোলার সময় উপস্থিত ছিলেন- কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান এবং পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী।
এর আগে, গত বছরের ৩০ নভেম্বর পাগলা মসজিদে ৩ মাস ১৪ দিন পর দানবাক্স খোলার সময় পাওয়া গিয়েছিল ৮ কোটি ২১ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৪ টাকা, বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার। এটি ছিল এযাবৎকাল সবচেয়ে বেশি টাকার রেকর্ড। কিন্তু আজ ২৮ বস্তা টাকা সেই রেকর্ডটিও ভেঙে দিয়েছে।
এছাড়া মসজিদের অ্যাকাউন্টে আজকের অর্থসহ মোট দাড়ালো ৮৯ কোটি ৩৭ লাখ ৭৩ হাজার ৬৮৭ টাকা।
এই অর্থ মসজিদ পরিচালনা, জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদরাসা, এতিমখানা এবং সমাজকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় করা হয়।
মসজিদ কমিটি জানায়, এবার পাগলা মসজিদে আন্তর্জাতিক মানের ‘পাগলা মসজিদ ইসলামিক কমপ্লেক্স’ নির্মাণের কাজ শুরু হবে, যেখানে একসঙ্গে ৬০ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। এর নির্মাণে প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৫ কোটি টাকা।
পাগলা মসজিদে প্রতিদিনই অসংখ্য মানুষ নগদ টাকা-পয়সা ছাড়াও স্বর্ণালঙ্কার দান করেন। এছাড়া গবাদিপশু, হাঁস-মুরগিসহ বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্রও মসজিদে দান করা হয়।
মানুষের বিশ্বাস এই মসজিদে দান করলে মনোবাসনা পূর্ণ হয়। এ কারণে দূর-দূরান্ত থেকেও অসংখ্য মানুষ এসে এখানে দান করে থাকেন। শুধু মুসলমান নয়, সব ধর্মের মানুষ এখানে টাকা-পয়সা দান করে থাকেন।
কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহাসিক স্থাপনার মধ্যে পাগলা মসজিদ অন্যতম একটি প্রতিষ্ঠান।
শহরের পশ্চিমে হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে ১০ শতাংশ ভূমির ওপর এই মসজিদটি গড়ে উঠেছিল। সময়ের বিবর্তনে মসজিদের পরিধির সঙ্গে সঙ্গে এর খ্যাতিও বেড়েছে।
বাংলাফ্লো/এসবি
Comments 0