স্পোর্টস ডেস্ক
ঢাকা: ক্রিকেট উপমহাদেশে কেবল একটি খেলা নয়, বরং জাতীয় আবেগ, মর্যাদা আর পরিচয়ের জায়গা। কিন্তু যখন রাজনীতি এসে খেলার মাঠকে দখল করে নেয়, তখন হারিয়ে যায় সেই বহুল প্রতীক্ষিত ব্যাট-বলের রোমাঞ্চ।
উপমহাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট রয়েছে সবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। আর এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে বিভিন্ন খাতে। আর এরই প্রভাবে কিছুটা অনিশ্চয়তা দেখা যাচ্ছে ভারত ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফর নিয়েও।
আগস্টে ভারতীয় ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফরের কথা রয়েছে।
কিন্তু বর্তমান টালমাটাল পরিস্থিতিতে সেই সিরিজের ভবিষ্যৎ এখন ঘোর অনিশ্চয়তায়, এমনটাই দাবি টাইমস অব ইন্ডিয়ার।
আর তাই ভারত-বাংলাদেশ সিরিজ ও এশিয়া কাপ—দুটোর ভবিষ্যৎ এখন অন্ধকারে– এমনটাই দাবি টাইমস অব ইন্ডিয়ার।
গণমাধ্যমটি বলছে, তিনটি ওয়ানডে ও তিনটি টি-টোয়েন্টির এই সিরিজ এখন শুধু কাগজে-কলমেই আছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
গণমাধ্যমটি জানায়, সম্প্রতি বাংলাদেশের অবসরপ্রাপ্ত এক সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল (অব.) এএলএম ফজলুর রহমান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন একটি মন্তব্য করেন, যা কূটনৈতিক উত্তেজনায় ঘি ঢেলে দেয়। তিনি বলেন—
‘যদি ভারত পাকিস্তানে হামলা করে, তাহলে বাংলাদেশকে ভারতের সাতটি উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য দখল করে নিতে হবে। একই সঙ্গে চীনের সঙ্গে যৌথ সামরিক ব্যবস্থার কথাও বিবেচনায় আনা উচিত।’
এই বক্তব্য ভারতীয় গোয়েন্দা মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। সরকারের উচ্চপর্যায়েও বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচিত হচ্ছে। এ অবস্থায় কূটনৈতিক দ্বন্দ্ব থেকে ক্রিকেটীয় সম্পর্কও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে গণমাধ্যমটি।
তাদের দাবি, ‘সূচি অনুযায়ী ভারতীয় দল বাংলাদেশে খেলতে আসবে, তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে এই সফর হওয়া প্রায় অসম্ভব। সরকারিভাবে কিছু জানানো না হলেও ক্রিকেট বোর্ডের ভেতরে আলোচনা চলছে সফর বাতিলের ব্যাপারে।’
আগস্টে বাংলাদেশ সফর বাতিল হলে তার সরাসরি প্রভাব পড়বে সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য এশিয়া কাপ ২০২৫-এ। এখনো ভেন্যু চূড়ান্ত না হলেও নিরপেক্ষ স্থানে টুর্নামেন্ট আয়োজনের কথা থাকলেও ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্বের কারণে সেটিও এখন প্রশ্নবিদ্ধ।
বিশেষ করে কাশ্মীরের পেহেলগামে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত প্রতিবেশীদের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে। ফলাফলস্বরূপ, খেলাধুলার মঞ্চেও বন্ধ হওয়ার পথে আছে ক্রিকেটীয় সম্পর্ক।
২০২৩ সালের এশিয়া কাপেও ভারত শুধু শ্রীলঙ্কায় খেলে, পাকিস্তানে না গিয়ে। এবার যদি একই ধাঁচে আয়োজন হয় বা ভারত সরাসরি অংশগ্রহণ না করে, তাহলে এশিয়া কাপের আকর্ষণ অনেকটাই ফিকে হয়ে যাবে।
আর তাই বর্তমান রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান না হলে, ২০২৫ সালের সবচেয়ে আলোচিত সিরিজগুলো দেখা হয়তো স্বপ্নই থেকে যাবে!
বাংলাফ্লো/এসও
Comments 0