Logo

পারভেজ হত্যাকান্ড: দুই নারী শিক্ষার্থীকে আটক

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) রাজধানীর জুরাইন থেকে তাদের আটক করা হয়। আটক দুই শিক্ষার্থী হলেন- ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের ফাতেমা তাহসিন ঐশী ও ইংরেজি বিভাগের ফারিয়া হক টিনা।

নিহত শিক্ষার্থী জাহিদুল হাসান পারভেজ

বাংলাফ্লো প্রতিনিধি

ঢাকা: রাজধানীর বনানীতে অবস্থিত প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নাম আসা দুই নারী শিক্ষার্থীকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ ডিবি। এর আগে এ ঘটনায় ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) রাজধানীর জুরাইন থেকে তাদের আটক করা হয়। আটক দুই শিক্ষার্থী হলেন- ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের ফাতেমা তাহসিন ঐশী ও ইংরেজি বিভাগের ফারিয়া হক টিনা।

এর আগে, পারভেজ হত্যার ঘটনায় দুই ছাত্রীকে সাময়িক বহিষ্কার করে ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্স।

ডিবি পুলিশের একটি সূত্র তাদের আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

ডিবি জানায়, ওই দুই নারী শিক্ষার্থী জুরাইন আশরাফ মাস্টার আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশের হোল্ডিংয়ে একটি ভবনের দ্বিতীয় তলায় দুই দিন আগে বাসা ভাড়া নেয়। এই তথ্যের ভিত্তিতে ডিবির টিম অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে।

গতকাল বুধবার (২৩ এপ্রিল) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত হত্যাকাণ্ডের সময় উপস্থিত দুই তরুণীর অবস্থান জানতে চেয়েছিলেন পুলিশের কাছে। আদালত তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে জানতে চান, ওই দুই নারী কোথায়? তখন পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, ওই দুই নারীকে তারা খুঁজছে।

উল্লেখ্য, গত ১৯ এপ্রিল বিকালে রাজধানীর বনানীতে প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে কিছু শিক্ষার্থীর মধ্যে বিবাদের জেরে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২২৩ ব্যাচের ছাত্র জাহিদুল ইসলাম পারভেজকে ছুরি মেরে হত্যা করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য অনুযায়ী, ক্যাম্পাসের পাশে একটি দোকানে বন্ধুদের সঙ্গে সিঙ্গারা খাচ্ছিলেন পারভেজ। তাদের পাশে সদ্য ভর্তি হওয়া ইংরেজি ও ইন্টারন্যাশনাল হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্টের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাদের বন্ধু ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের দুই ছাত্রী ছিলেন। এক পর্যায়ে দুই ছাত্রী অভিযোগ করেন পারভেজ তাদের উত্যক্ত করেছেন। তারা বিষয়টি প্রাইমএশিয়া ইউনিভার্সিটির প্রক্ট্ররকে জানান।

এরপর প্রক্টর পারভেজকে ডেকে নেন। প্রক্টর অফিসে পারভেজ দাবি করেন, তিনি বন্ধুদের সঙ্গে নিজেদের আলাপের বিষয় নিয়ে হাসাহাসি করছিলেন, কাউকে উত্ত্যক্ত করেননি। এক পর্যায়ে ওই দুই ছাত্রীর কাছে ক্ষমা চাইতে বলা হলে পারভেজ ক্ষমাও চান।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, সেখানেই ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীরা পারভেজকে হুমকি দেন। প্রক্টরের অফিস থেকে বেরিয়ে আসার পর কিছু বহিরাগত এসে আক্রমণ করেন। একপর্যায়ে ধারালো কিছু দিয়ে পারভেজের বুকে আঘাত করে তারা পালিয়ে যান।

পরে রক্তাক্ত পারভেজকে কুর্মিটোলা হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক আগেই মৃত্যু হয়ে বলে জানান।

এ ঘটনায় নিহতের মামাত ভাই হুমায়ুন কবীরের করা মামলায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের দুই নেতাসহ আটজনের নাম উল্লেখ করা হয়। এছাড়া নাম না দিয়ে আরও ২৫-৩০ জনকে আসামি করা হয়।

মামলার এজাহারের আসামিরা হলেন- মেহেরাজ ইসলাম (২০), আবু জর গিফারী পিয়াস (২০), মাহাথির হাসান (২০), সোবহান নিয়াজ তুষার (২৪), হৃদয় মিয়াজী (২৩), রিফাত (২১), আলী (২১) ও ফাহিম (২২)।

গত ২১ এপ্রিল রাতে কুমিল্লার তিতাস উপজেলার মনাইরকান্দি গ্রাম থেকে হৃদয়কে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

এর আগের দিন আল কামাল শেখ ওরফে কামাল (১৯), আলভী হোসেন জুনায়েদ (১৯) এবং আল আমিন সানি (১৯) নামে তিন জনকে ঢাকার মহাখালী ওয়ারলেস গেইট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এজাহারে তাদের নাম না থাকলেও সিসিটিভি ভিডিওতে তাদের ঘটনাস্থলে দেখা যাওয়ার কথা বলা হয় পুলিশের তরফ থেকে। পরে তাদের আদালতে হাজির করে রিমান্ডেও নেয় পুলিশ।

সর্বশেষ, বুধবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে গাইবান্ধা থেকে গ্রেফতার করা হয় মামলার প্রধান আসামি মেহেরাজ ইসলামকে।

বাংলাফ্লো/এসবি

Related Posts শিক্ষা

Leave a Comment

Comments 0