বাংলাফ্লো প্রতিনিধি
ঢাকা: ২০০৮ সালে সর্বশেষ বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ২০০৯ সাল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) চালু হওয়ায় বৃত্তি পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যায়। এবার সেই পরীক্ষা পুনরায় চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
দীর্ঘ ১৬ বছর পর আবারও আগের নিয়মে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বৃত্তি পরীক্ষা চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
চলতি বছরের ডিসেম্বরেই পঞ্চম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার পর এ বৃত্তি পরীক্ষা আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। একইসঙ্গে দ্বিগুণ করা হচ্ছে বৃত্তির অর্থের পরিমাণ।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর ইতোমধ্যে একটি খসড়া নীতিমালা তৈরি করে জমা দিয়েছে। নতুন নীতিমালায় বৃত্তির পরিমাণ বাড়ানোসহ পরীক্ষায় অংশগ্রহণের হারও বৃদ্ধির প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রতি বিদ্যালয় থেকে ২০ শতাংশ শিক্ষার্থী বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে। তবে সেটি বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করার সুপারিশ করা হয়েছে। উত্তীর্ণদের ‘ট্যালেন্টপুল’ ও ‘সাধারণ’—এই দুই ক্যাটাগরিতে বৃত্তি দেওয়া হবে।
খসড়া অনুযায়ী, বৃত্তির পরিমাণ দ্বিগুণ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ট্যালেন্টপুল বৃত্তি ৩০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬০০ টাকা এবং সাধারণ বৃত্তি ২২৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪৫০ টাকা করার সুপারিশ রয়েছে খসড়ায়।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক আবু নূর মো. শামসুজ্জামান গণমাধ্যমকে জানান, এ বছর থেকেই বৃত্তি পরীক্ষা চালু হবে। নীতিমালা দ্রুত চূড়ান্ত করে প্রকাশ করা হবে।
বর্তমানে দেশে প্রায় এক কোটি শিক্ষার্থী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করছে। সেই অনুযায়ী অন্তত ১ লাখ শিক্ষার্থীকে বৃত্তির আওতায় আনার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। ২০০৮ সালের সর্বশেষ পরীক্ষায় ৮২ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী বৃত্তি পেয়েছিল। এবার সেই সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
অভিভাবকরা সরকারের এই সিদ্ধান্তে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
তারা মনে করেন, এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে পড়ালেখার প্রতি আগ্রহ ও প্রতিযোগিতা বাড়বে। তবে শিক্ষাবিদদের একাংশ মনে করছেন, এমন পরীক্ষায় শ্রেণিভিত্তিক বৈষম্যের ঝুঁকি থেকে যায়, যেখানে দরিদ্র শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে পড়তে পারে।
সব মিলিয়ে, ১৬ বছর পর প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার পুনরায় চালু হওয়া দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও প্রতীকী পরিবর্তন হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বাংলাফ্লো/এসবি
Comments 0