Logo

অপহরণের ৪ ঘণ্টা পর মুক্তিপণে ঢাকা মেডিকেলের চিকিৎসক ছাড়া পেলেন

null

গাজীপুর প্রতিনিধি: অপহরণের চার ঘণ্টা পর মুক্তিপণের বিনিময়ে ছাড়া পেয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক আমিনুর রহমান। জানা গেছে শনিবার (১১ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে গাজীপুরের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের মাওনা চৌরাস্তা উড়াল সেতুর দক্ষিণ পাশ থেকে প্রাইভেট কারে তুলে নিয়ে যায় অপহরণকারীরা। প্রায় চার ঘণ্টা বিভিন্ন স্থানে ঘুরিয়ে রাত ১১টার দিকে সালনা এলাকায় ছেড়ে দেওয়া হয় বলে জানান অপহরণের শিকার আমিনুর রহমান। রোববার (১২ জানুয়ারি) তিনি জানান, “অপহরণকারীরা সঙ্গে থাকা নগদ সাড়ে নয় হাজার টাকা, আমার মোবাইল দিয়ে স্ত্রীর কাছে ফোন করে আমার নগদ নম্বরে ৪৫ হাজার, বিকাশ নম্বরে ৫০ হাজার এবং অপহরণকারীদের বিকাশ নম্বরে ৩০ হাজার টাকা নেয়। এ ছাড়া তার সঙ্গে থাকা ক্রেডিট কার্ড, দুটি স্মার্টফোন (নগদ-বিকাশ নাম্বার খোলা) এবং একটি ল্যাপটপ নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে শ্রীপুর থানার ওসি জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বলেন, “মৌখিক খবর পেয়ে আমরা মোবাইল ফোনের নম্বরে লোকেশন ট্র্যাক করি। পরবর্তীতে চিকিৎসকের বাসা থেকে জানানো হয়, তিনি বাসায় চলে গেছেন। এ বিষয়ে এখনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” আমিনুর রহমান (৩৯) টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার কচুটি গ্রামের ইসমাইল হোসেনের ছেলে। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগে কর্মরত। রাজধানীর যাত্রাবাড়ী (শনির আখড়া) এলাকায় পরিবারসহ বসবাস করেন ওই চিকিৎসক। রোববার দুপুরে চিকিৎসক আমিনুর রহমান (৪০) অপহরণের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, শনিবার বিকাল ৪টা থেকে ৭টা পর্যন্ত মাওনা চৌরাস্তা লাইফ কেয়ার হাসপাতালে তিনি প্রাইভেট রোগী দেখেন। ওইদিনই তিনি শ্রীপুরের মাওনায় প্রথম চেম্বার করেন। চেম্বার শেষে ঢাকার বাসায় ফেরার উদ্দেশে তিনি মাওনা চৌরাস্তা উড়াল সেতুর দক্ষিণ পাশে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। ওই স্থানে ১০ থেকে ১২ জন যাত্রী বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় সিলভার কালারের একটি প্রাইভেট কার এসে সেখানে দাঁড়ায়। তখন চালক প্রাইভেট কারের পেছনের দরজা খুলে যাত্রীদেরকে ঢাকা যাওয়ার জন্য আহ্বান করে। তিনি চালকের কথায় কোনো সাড়া দেননি। এ সময় পেছন থেকে তিনজন (১৮ থেকে ২৫ বছর বয়স) যুবক তাকে ধাক্কা দিয়ে প্রাইভেট কারের ভেতরে তুলে নেয়। চিকিৎসক বলেন, “তখন তাদেরকে জিজ্ঞাসা করি, আমাকে চেনে কিনা? তখন তাদের একজন বলে, ‘আপনি কিডনাপ (অপহরণ) হয়েছেন। আমাদের কাজই হচ্ছে এটা। আপনার কোনো ক্ষতি করা হবে না। টাকা দিলে ছেড়ে দেব। এটা করে আমরা খাই।’ পরে তারা আমার চোখ স্কচ টেপ দিয়ে পেঁচিয়ে ফেলে। হাতুড়ি দিয়ে আমার হাঁটুতে আঘাত করে এবং বুকে কিল-ঘুষি দেয়। একপর্যায়ে গলায় রশি পেঁচানোর চেষ্টা করলে আমি হাত দিয়ে বাধা দেই। “তারা প্রথমে আমার কাছে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করে। পরে বলে তিন লাখ টাকা দিলেই হবে। তারা আমার সঙ্গে থাকা টাকা এবং নগদ ও বিকাশে প্রায় এক লাখ ৩০ হাজার টাকা নিয়ে নেয়।” আমিনুর বলেন, দীর্ঘ সময় পেরিয়ে যাওয়ায় কেউ তাদেরকে ফলো করছে কিনা, এসব ভেবে বলে, আর লাগবে না। চার ঘণ্টা পর রাত সাড়ে ১১টার দিকে সালনা এলাকা থেকে এক কিলোমিটার ভিতরে আমাকে নামিয়ে দিয়ে তারা চলে যায়।

Related Posts বাংলাদেশ