জেলা প্রতিনিধি
যশোর: জেলার শার্শা উপজেলার ফাতেমাতুজ্জোহরা কওমি মাদ্রাসার আবাসিক ছাত্রীদের শোয়ার ঘরে লাগানো ছিল সিসি ক্যামেরা। মাদরাসার শিক্ষকের কক্ষে ছিল সেই সিসি ক্যামেরাগুলোর মনিটর।
একজন অভিভাবকের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার (৯ এপ্রিল) বিকেলে মাদ্রাসায় অভিযান চালিয়ে দুটি নাইট ভিশন সিসি ক্যামেরা ও শিক্ষকের কক্ষ থেকে মনিটর জব্দ করেছে পুলিশ।
অভিযানের সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী নাজিব হাসান ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নিশাত আল নাহিয়ান উপস্থিত ছিলেন। এ সময় মাদ্রাসার শিক্ষক আবু তাহেরকে (৪৫) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করলেও পরে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।
পুলিশ ও নির্ভরশীল সূত্রে জানা গেছে, কওমি মাদ্রাসাটির পাঁচতলা ভবনের নিচতলায় দুই শিক্ষক থাকেন। ওপরের চারটি তলায় আবাসিক থেকে মেয়েরা লেখাপড়া করে। ওই মাদ্রাসায় কতজন মেয়ে থাকে, এর হিসাব মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ দিতে পারেনি। তবে ৪০ মেয়ের নাম পেয়েছে পুলিশ। সংখ্যাটি ১০০ থেকে ১৫০ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মাদ্রাসার মালিক আবু তাহের একই সঙ্গে পরিচালক ও শিক্ষক। তিনি দাবি করেন, নিরাপত্তার জন্য সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। তিনি যখন সিসি ক্যামেরা দেখেন, তখন তাঁর স্ত্রী সঙ্গে থাকেন।
সিসি ক্যামেরা নিয়ন্ত্রণ করেন প্রতিষ্ঠানের নারী প্রধান শিক্ষক। গত বছর মাদ্রাসায় ১৮০ মেয়ে ভর্তি হয়েছিল। এখন ভর্তি চলছে। এ জন্য একটু কম আছে এখন। ১২ জন শিক্ষক রয়েছেন। এর মধ্যে নয়জন নারী ও তিনজন পুরুষ।
যশোরের মানবাধিকার সংগঠন রাইটস যশোরের নির্বাহী পরিচালক বিনয় কৃষ্ণ মল্লিক জানান, মেয়েদের ঘুমানোর ঘরে সিসি ক্যামেরা লাগিয়ে শিক্ষার্থীদের মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছেন শিক্ষক। তাঁর বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা হতে পারে। তবে এরা অপরাধ করেও পার পেয়ে যাওয়ায় সমাজে অপরাধের প্রবণতা বাড়ছে।
শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম রবিউল ইসলাম জানান, পুলিশ মাদ্রাসা থেকে ১৬টি সিসি ক্যামেরাসহ অন্যান্য যন্ত্র জব্দ করেছে। জব্দ করা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ যাচাই-বাছাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মেয়েদের শোয়ার ঘরে ক্যামেরা স্থাপন করে তাদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা খর্ব করা হয়েছে। এটা কেউ করতে পারেন না। যখনই ডাকা হবে, তখনই হাজির হওয়ার শর্তে পরে আবু তাহেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
বাংলাফ্লো/এসবি
Comments 0