Logo

লবণের ভালোবাসা: বেশিতেও বিপদ, কমেও ঝুঁকি

নুন খাই যার—গুণ গাই তার। কিন্তু আসলে এই নুন বা লবণ কতটুকু উপকারী আমাদের জন্য?

ছবিঃ সংগৃহীত

বাংলাফ্লো লাইফস্টাইল

ঢাকা: বাংলায় একটি প্রচলিত কথা হচ্ছে, নুন খাই যার—গুণ গাই তার। কিন্তু আসলে এই নুন বা লবণ কতটুকু উপকারী আমাদের জন্য? মাত্রার চাইতে বেশি নুন বা লবণ গ্রহণ এমন সমস্যা তৈরি করতে পারে যার কারণে গুণ আর গাওয়া সম্ভব নাও হতে পারে। তবে কম নুন খেলেই কী গুণ গাওয়ার শারীরিক অবস্থা থাকে সবার?

জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে, লবণ দান করলে শনিদেবের সাথে সতীর ক্রোধ হয়। আর তাই লবণ দান করা নিষিদ্ধ। যদি কখনও বাধ্য হয়ে কাউকে লবণ দিতে হয়, তাহলে বিনিময়ে এক টাকা হলেও নেওয়া উচিত।

এটি নিছক মিথ হলেও লবণের রয়েছে একাধিক ক্ষতিকর ও উপকারী দিক ।

কেউ কেউ মনে করেন যে লবণাক্ত খাবার খেলে মন ভাল হয়ে যায়। যদিও দাবিটি বিতর্কিত,গবেষকরা এখনও সঠিক কারণ খুঁজে চলেছেন।

লবণের উপকারিতা

গবেষকরা বলছেন, লবণ আমাদের হাইপোথ্যালামাসকে ডোপামিন নিঃসরণে প্ররোচিত করে ।

তারা বলছেন, যেহেতু বেঁচে থাকার জন্য লবণের প্রয়োজন, তাই মানব মস্তিষ্ক জীবন রক্ষাকারী প্রতিক্রিয়া হিসেবে লবণের প্রতি আকাঙ্ক্ষা করতে শেখে। লবণের অভাবে হতে পারে হাইপোনাট্রেমিয়া।

এটি এমন একটি অবস্থা যেখানে শরীরে স্বাভাবিকভাবে কাজ করার জন্য পর্যাপ্ত লবণ থাকে না।

বিশেষজ্ঞরা আরও বলছেন, লবণ না খেলে, লিপোলাইসিস এবং থার্মোজেনেসিস বৃদ্ধি, লেপটিন, ন্যাট্রিউরেটিক পেপটাইড এবং অ্যালডোস্টেরনের মতো গুরুত্বপূর্ণ হরমোনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ সহ বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে লবণ বিপাক এবং শক্তির ভারসাম্য বিশেষ করে শক্তি ব্যয়কে প্রভাবিত করে। রক্তে লবণ কমে গেলে এবং সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করলে স্নায়ু ও মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা একেবারে থেমে যেতে পারে। অর্থাৎ যেসব স্নায়বিক সমস্যা সৃষ্টি হয় সেগুলো আর কখনোই স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে নাও আসতে পারে। রোগী কোমায় চলে যেতে পারেন।

মানসিক চাপ,উদ্বেগ এবং ক্লান্তি কমানোর একটি নিরাপদ এবং কার্যকর উপায় লবণ থেরাপি। মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করার জন্য এটি প্রাকৃতিক এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ামুক্ত।

লবণের পরিমাণ কম বা বেশি হলে নষ্ট হয় খাবারের স্বাদ।

প্রয়োজনের অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ ডেকে আনে বিপদ

অনেকেই খাবারের সঙ্গে কাঁচা লবণ খেতে পছন্দ করেন। আমাদের খাদ্যতালিকায় কিছু লবণের প্রয়োজন আছে কিন্তু আমাদের বেশিরভাগই প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি লবণ খাচ্ছি। অতিরিক্ত লবণযুক্ত খাবার উচ্চ রক্তচাপের সাথে সম্পর্কিত,কারণ লবণে থাকা সোডিয়াম আপনার রক্তনালীতে বেশি পানি জমায় যার ফলে চাপ বৃদ্ধি পায় ।

অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ তথা অতিরিক্ত সোডিয়াম গ্যাস্ট্রিক, ক্যান্সার, অস্টিওপোরোসিস, স্থূলতা, কিডনির ক্ষতি, পানি জমা হওয়া (এডিমা), হাড়ের ক্ষতি, পাচনতন্ত্রের সমস্যা হৃদরোগ, স্ট্রোকের এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি এবং কিডনি রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, লবণ বেশি গ্রহণের কারণে প্রতি বছর প্রায় এক দশমিক ৯ মিলিয়ন বা ১৯ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। তাই আমাদের সকলের উচিত লবণ গ্রহণের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা। এক্ষেত্রে কিছু কার্যকর উপায় হল - লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করা খাবার এড়িয়ে চলা, ভাতের সাথে কাঁচা লবণ না খাওয়া, আচার,সস ইত্যাদি প্রসেসড খাবার বাদ দেওয়া বা কম খাওয়া।


বাংলাফ্লো/আফি

Related Posts শিক্ষা

Leave a Comment

Comments 0