Logo

কুয়েটে প্রশাসন ও রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের ‘লাল কার্ড’ প্রদর্শন

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) এর শিক্ষার্থীরা আজ (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে কুয়েটের দুর্বার বাংলা চত্বরে লাল কার্ড প্রদর্শন করেছেন।

খুলনা প্রতিনিধি : খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) এর শিক্ষার্থীরা আজ (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে কুয়েটের দুর্বার বাংলা চত্বরে লাল কার্ড প্রদর্শন করেছেন। এ সময় তারা রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনগুলো এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। শিক্ষার্থীরা ছাত্রদল, ছাত্রলীগ, ছাত্রশিবির, ছাত্র ইউনিয়নসহ অন্যান্য রাজনৈতিক সংগঠন এবং কুয়েট প্রশাসনের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন এবং উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করেন।

শিক্ষার্থীদের স্লোগান ও প্রতিবাদ

শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ চলাকালে বিভিন্ন স্লোগান দেন, যেমন:

  1. ‘ছাত্র রাজনীতির ঠিকানা এই কুয়েটে হবে না’
  2. ‘নো ছাত্রদল, নো ছাত্রশিবির, নো বৈষম্য, অনলি ছাত্র’
  3. ‘রক্ত যখন ঝরছিল, প্রশাসন তখন কই ছিল?’
  4. ‘নিরাপদ ক্যাম্পাস চাই’
  5. ‘উই ওয়ান্ট নলেজ, নো পলিটিক্যাল ড্যামেজ’
  6. ‘শিক্ষার্থীর রক্ত ঝরে, প্রশাসন তামাশা করে’
  7. ‘ছাত্র রাজনীতি রেড কার্ড’
  8. ‘বহিষ্কার, বহিষ্কার, জড়িতদের বহিষ্কার’
  9. ‘দালালি না, রাজপথ রাজপথ’
  10. ‘তুমি কে আমি কে, আবরার আবরার’

এছাড়াও, প্ল্যাকার্ডে কিছু বিশেষ বক্তব্য ছিল, যেমন:

  1. ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’
  2. ‘দড়ি ধরে মারো টান, ভিসি হবে খান খান’

আন্দোলনের মূল দাবি

লাল কার্ড প্রদর্শনের সময় শিক্ষার্থীরা তাদের মূল দাবি তুলে ধরেন। তারা দাবি করেন, গত মঙ্গলবার কুয়েটের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় ছাত্রদলের যেসব সদস্য জড়িত, তাদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করতে হবে। তাদের মতে, কুয়েট প্রশাসন ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার যে অধ্যাদেশ করেছে, তা পরিবর্তন করে নতুন অর্ডিন্যান্স করতে হবে, যাতে কেউ আদালতে গিয়ে ছাত্র রাজনীতি করার অধিকার ফিরে না পায়।

নতুন প্রশাসন ও ভিসি নিয়োগের দাবি

শিক্ষার্থীরা কুয়েট প্রশাসনের প্রতি দাবি জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নতুন ভিসি নিয়োগ করা উচিত এবং ক্যাম্পাসে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে কাজ করতে হবে। তারা প্রধান উপদেষ্টার কাছে একটি স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন, যেখানে তারা নতুন ভিসি নিয়োগের মাধ্যমে শিক্ষার পরিবেশ উন্নত করার প্রস্তাব দিয়েছেন।

কুয়েট প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া

এদিকে, কুয়েট প্রশাসনও সম্প্রতি একটি জরুরি সিন্ডিকেট সভা করেছে, যেখানে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সব একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং এক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কুয়েট প্রশাসন খান জাহান আলী থানায় অজ্ঞাতনামা ৪০০-৫০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে।

আন্দোলনের পরবর্তী পদক্ষেপ

আজ বিকেল ৩টায় কুয়েটের ছাত্রকল্যাণ কেন্দ্রে আহত শিক্ষার্থীদের ছবি এবং হামলার ঘটনার বিভিন্ন ফুটেজ পরিদর্শন করা হবে বলে জানান শিক্ষার্থীরা। তারা আরও জানান, তাদের দাবি যদি পূর্ণাঙ্গভাবে না মেনে নেওয়া হয়, তবে ভবিষ্যতে আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

এছাড়া, শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, তাদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হচ্ছে তা মিথ্যা এবং সাজানো। তারা 'ছাত্রশিবির' সম্পর্কিত যে অভিযোগ উঠেছে, সেটি খণ্ডন করেন এবং নিরাপদ ক্যাম্পাসে শিক্ষার পরিবেশ ফিরে পাওয়ার জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

Related Posts শিক্ষা