বাংলাফ্লো প্রতিনিধি
ঢাকা: সাভার পৌরসভার মজিদপুর কাঠালবাগান থেকে এক তরুণী ‘জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯’ নম্বরে ফোন করে জানান তিনি তার পিতাকে হত্যা করেছেন। তিনি আত্মসমর্পণ করতে চান এবং দ্রুত পুলিশ পাঠানোর জন্য বলেন।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) ভোরে এই ফোন করেন জান্নাতুল জাহান শিফা।
৯৯৯ থেকে সংবাদ পেয়ে সাভার থানা পুলিশের একটি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে এবং খুনের অভিযোগে কলার জান্নাতুল জাহান শিফাকে (২৩) গ্রেপ্তার করে।
খুনের কারণ হিসেবে জান্নাতুল জাহান শিফা জানান, তার পিতা তাকে চার বছর ধরে ধর্ষণ করে আসছিলেন। ২০২২ সালে নাটোরের সিংড়া থানায় বাবার বিরুদ্ধেই ধর্ষণ মামলা করেন তিনি। সেই মামলায় নিহত পিতা দীর্ঘদিন জেলখেটে সম্প্রতি বের হয়ে মেয়ের সঙ্গে ধর্ষণ মামলার মীমাংসা করে আবার বসবাস শুরু করে সাভারে। কিন্তু দীর্ঘ দিন জেলখেটে জামিনে মুক্ত হলেও তিনি ভালো হন নাই। গতরাতে আবার ধর্ষণ চেষ্টা করার কারণে তিনি পিতাকে খুন করেছেন।
একইসঙ্গে সেই ধর্ষণ মামলার সূত্র ধরেই বাবার সঙ্গে মেয়ে জান্নাতের বনি-বনা হচ্ছিল না বলেও জানান জান্নাত।
জান্নাত বলেন, তার বাবা ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করতেন। যে কারণে বুধবার রাতে খাবারের সময় তার ভাতের সঙ্গে ২০টি ঘুমের ঔষধ মিশিয়ে বাবাকে খেতে দেই। নিহত আব্দুর সাত্তার ঘুমিয়ে পড়লে ভোর ৪টার সময় আমি ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে কুপিয়ে হত্যা করি। পরে পুলিশকে খবর দেই।
সাভার মডেল থানার ডিউটি অফিসার আব্দুর রশিদ জানান, ভোররাত ৪টার দিকে জাতীয় জরুরি সেবা নাম্বার ৯৯৯ কল করে এক মেয়ে জানান, তার বাবাকে তিনি কুপিয়ে হত্যা করেছেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহত লাশ উদ্ধার করে এবং মেয়েকে আটক করে।
নিহতের নাম আব্দুস সাত্তার (৫৫)। তিনি নাটোর জেলার সিংড়া থানার ভগা গ্রামের বাসিন্দা।
স্ত্রীর মৃত্যুর পর মেয়েকে নিয়ে মজিদপুর কাঠালবাগান এলাকায় একটি বাড়ির ৫ম তলার বাসায় ভাড়া থাকতেন আব্দুস সাত্তার।
আব্দুল কাদেরের বাড়ির কেয়ারটেকার রহিজ উদ্দিন বলেন, গত ৫ মাস আগে বাবা ও মেয়ে ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন।
সাভার মডেল থানার উপপরিদর্শক ইমরান হোসেন বলেন, ৯৯৯ কল পেয়ে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে এবং নিহতের মেয়ে জান্নাতকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় সাভার মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সাভার মডেল থানার ওসি জুয়েল মিয়া জানান, পিতার বিরুদ্ধে মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে। আদালতে মামলাটি চলমান রয়েছে। এর জের ধরেই মেয়েটি এই হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়েছে। তাকে আটক করে জিজ্ঞেসাবাদ করা হচ্ছে।
বাংলাফ্লো/এসবি
Comments 0