বাংলাফ্লো ডেস্ক
ঢাকা: আজ শনিবার (৩০ আগস্ট) ১৫তম আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস । ২০১০ সালের ডিসেম্বরে জাতিসংঘের ‘ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন ফর প্রটেকশন অব অল পারসনস অ্যাগেইনস্ট এনফোর্সড ডিসঅ্যাপিয়ারেন্স’ সম্মেলনে গৃহীত সনদের মাধ্যমে ৩০ আগস্টকে গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০১১ সাল থেকে বাংলাদেশে পালিত হয়ে আসছে এই দিবসটি। তবে এবার দিনটি পালিত হচ্ছে ভিন্ন এক প্রেক্ষাপটে। র্যাব বিলুপ্তিসহ ১০ দফা সুপারিশ অধিকারের দিবসটি উপলক্ষে গুম হওয়া ব্যক্তিদের স্বজনদের সংগঠন ‘মায়ের ডাক’সহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছে। তারা গুমের শিকার ব্যক্তিদের খোঁজ ও দায়ীদের বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে আসছেন দীর্ঘ দিন ধরে।
এদিকে গত ২৮ আগস্ট ‘গুম প্রতিরোধ, প্রতিকার ও সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। এই অধ্যাদেশ আরও অধিকতর পর্যালোচনা শেষে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হবে।
উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের বিষয়ে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে সেদিন প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘গুম প্রতিরোধ, প্রতিকার ও সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ এর খসড়ার বিষয়ে গুম সংক্রান্ত কমিশনের মতামতের ভিত্তিতে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড সার্ভিসেস ব্লাস্ট, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং অন্যান্য মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা থেকে প্রাপ্ত মতামত বিবেচনায় নিয়ে এবং আইন ও বিচার বিভাগের দুটি মতবিনিময় সভা থেকে প্রাপ্ত মতামত ও পরামর্শ পর্যালোচনা করে খসড়া পরিমার্জন করা হয়।
তিনি বলেন, খসড়া অধ্যাদেশে গুমকে সংজ্ঞায়নসহ চলমান অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করে মৃত্যুদণ্ডসহ কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। গোপন আটক কেন্দ্র স্থাপন বা ব্যবহারকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে গুম সংক্রান্ত অভিযোগ গ্রহণ ও তদন্ত করতে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। খসড়া অধ্যাদেশে গুম প্রতিরোধ, প্রতিকার ও সুরক্ষায় ট্রাইব্যুনাল গঠন এবং অভিযোগ গঠনের ১২০ দিনের মধ্যে বিচারের বাধ্যবাধকতা, ভুক্তভোগী, তথ্যপ্রচারকারী ও সাক্ষীর সুরক্ষা, ভুক্তভোগীর ক্ষতিপূরণ ও আইনগত সহায়তা নিশ্চিতের বিধান সন্নিবেশ করা হয়েছে।
এদিকে শুক্রবার এক অনুষ্ঠানে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক নূর খান লিটন বলেন, গুম কমিশনের কিছু কার্যক্রম শিগগির ফল দিতে পারে, তবে ফ্যাসিবাদী মানসিকতা দূর না হলে এই সংস্কৃতি বিলুপ্ত হবে না। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর এস এম মঈনুল করিম মনে করেন, গুমের শিকারদের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা এখনও নেওয়া হয়নি। অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া জরুরি।
একই অনুষ্ঠানে গুমের শিকার হওয়া ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) রাজনৈতিক সংগঠক মাইকেল চাকমা বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার গুমের ঘটনার বিচার করবে– এমন প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর পেরোনোর পর এই বিচার আর হবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় আছে।
বাংলাফ্লো/এইচএম
Like
Dislike
Love
Angry
Sad
Funny
Wow
Comments 0