এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক
ঢাকা: চলচ্চিত্রের বিষয়বস্তু অনুযায়ী বয়স ও শ্রেণি নির্ধারণ করে রেটিং দেওয়ার জন্য প্রায় এক বছর আগে ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ড’ গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন আইন, ২০২৩’-এর অধীনে এই বোর্ড গঠিত হলেও, এর প্রয়োজনীয় বিধিমালা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। ফলে, নতুন এই বোর্ডকে বাধ্য হয়ে সেই পুরনো ‘চলচ্চিত্র সেন্সরশিপ আইন, ১৯৬৩’-এর অধীনেই কাজ করতে হচ্ছে, যা নিয়ে নির্মাতা এবং বোর্ডের সদস্যদের মধ্যেই তৈরি হয়েছে তীব্র জটিলতা ও হতাশা।
এই সমস্যার সাম্প্রতিকতম উদাহরণ হলো ‘নীলচক্র’ সিনেমাটি। সার্টিফিকেশন বোর্ডের সদস্যরা মনে করেন, ছবিটি ‘১৫+’ (১৫ বছরের বেশি বয়সী দর্শকদের জন্য উপযুক্ত) রেটিং পাওয়ার যোগ্য। কিন্তু বিধিমালা না থাকায়, তাঁদের হাতে ‘ইউ’ (সর্বজনীন) অথবা ‘১৮+’ (প্রাপ্তবয়স্ক) সার্টিফিকেট দেওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না। অবশেষে, বোর্ড বাধ্য হয়ে ছবিটিকে ‘ইউ’ ক্যাটাগরিতেই ছাড়পত্র দিয়েছে, যা তাঁদের মতে, ছবিটির সঠিক মূল্যায়ন নয়।
বোর্ডের সদস্য, নির্মাতা ও প্রযোজক রফিকুল আনোয়ার বলেন, “কিছু কিছু ছবির অ্যাসেসমেন্ট (মূল্যায়ন) করতে সমস্যা হয়। কোনো ছবি হয়তো ভাবতেছি ‘১৫+’ দিলে ভালো হতো... কিন্তু রেটিং না থাকায় ছবিটিতে ‘১৫+’ দেওয়ার সুযোগ নেই। দেখা গেল, ছবিটা ‘ইউ’ কিংবা ‘১৮+’ ক্যাটাগরিতে ছাড়তে হচ্ছে।”
প্রযোজক শাহরিয়ার শাকিল বলেন, “সার্টিফিকেশন বোর্ড গঠনের পর আমরা ভেবেছিলাম, রেটিং চালু হয়ে যাবে। তবে তা হয়নি। ...ছবিগুলোকে ঠিকভাবে মূল্যায়ন করা হচ্ছে কি না, সেটা আমাদের ভাবতে হবে।”
প্রস্তাবিত ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বিধিমালা, ২০২৫’-এ পাঁচটি ক্যাটাগরি রাখার কথা রয়েছে— ইউ (সর্বজনীন), ১২+, ১৫+, ১৮+ এবং এস (বিশেষ শ্রেণির জন্য)। কিন্তু এই বিধিমালা চূড়ান্ত না হওয়ায়, গত এক বছরে ছাড়পত্র পাওয়া প্রায় ১০০টি সিনেমার বেশিরভাগকেই গতানুগতিকভাবে ‘ইউ’ সার্টিফিকেট দিয়েই মুক্তি দিতে হয়েছে।
সব মিলিয়ে, আধুনিক রেটিং ব্যবস্থা চালুর উদ্দেশ্যে গঠিত হলেও, বিধিমালা না থাকায় সার্টিফিকেশন বোর্ড কার্যত একটি ‘নাম সর্বস্ব’ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে, যা বাংলা সিনেমার অগ্রযাত্রায় এক বড় বাধা সৃষ্টি করছে।
বাংলাফ্লো/এইচএম
Like
Dislike
Love
Angry
Sad
Funny
Wow
Comments 0