বাংলাফ্লো প্রতিনিধি,
ঢাকা: গণঅভ্যুত্থানের পর দেশের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য অবনতির চিত্র তুলে ধরেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটি জানায়, দেশজুড়ে খুন, ডাকাতি, ছিনতাই, ধর্ষণ, আন্দোলন, লুটপাট ও অরাজকতার মতো ঘটনাগুলো বেড়েই চলেছে। পুলিশের নির্লিপ্ততা, দায়িত্ব পালনে অনাগ্রহ এবং পেশাদারিত্বের অভাব এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী বলে মনে করছে টিআইবি।
সোমবার (৪ আগস্ট) রাজধানীর মাইডাস সেন্টারে টিআইবির সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত 'নতুন বাংলাদেশ : কর্তৃত্ববাদী সরকার পতন-পরবর্তী এক বছরের ওপর পর্যবেক্ষণ' শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়।
টিআইবির ফেলো শাহজাদা এম আকরাম বলেন, গত এক বছরে পুলিশে ব্যাপক রদবদল হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে- অব্যাহতি, পদোন্নতি, পদায়ন ও বদলি। পুলিশ বাহিনীতে মৌলিক সংস্কারের পরিবর্তে কেবল পদোন্নতি, পদায়ন ও বদলির বিষয়ে মনোযোগ ছিল।
তিনি জানান, চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ১ মার্চ পর্যন্ত ২১ দিনব্যাপী পরিচালিত ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’-এ ১২ হাজার ৫০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। যদিও নিয়মিত অভিযান চালানো হয়েছে, কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি।
টিআইবির তথ্য মতে, গত ১১ মাসে পুলিশের বিরুদ্ধে ৭৬১টি মামলা দায়ের হয়েছে। পুলিশের বিরুদ্ধে রয়েছে গ্রেপ্তার বাণিজ্যের অভিযোগ, রাজনৈতিক চাপ বাড়লেই আটক বৃদ্ধির প্রবণতা, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও হেফাজতে মৃত্যুর মতো গুরুতর অভিযোগ।
আকরাম আরও বলেন, আন্দোলনে নেতিবাচক ভূমিকার কারণে পুলিশের ভাবমূর্তির পতন হয়েছে। আইন হাতে তুলে নেওয়ার প্রবণতায় (মব জাস্টিস) গণপিটুনিতে মৃত্যুর ঘটনার আশঙ্খাজনক বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মবকে ক্ষুব্ধ মানুষের ‘প্রেশার গ্রুপ’ হিসেবে অভিহিত করেছে। ‘মব’ তৈরি করে দাবি আদায়ের প্রবণতা কোনো কোনো ক্ষেত্রে দাবি আদায়ে সফল হয়েছে।
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় বৈষম্যপূর্ণ আচরণ এবং রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করে টিআইবি। সংস্থাটি বলছে, কোনো পক্ষের প্রতি নমনীয়তা ও অন্য পক্ষের ওপর অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, ফেলো মো. জুলকারনাইন, ফারহানা রহমান ও অন্যান্যরা।
বাংলাফ্লো/সিএস
Like
Dislike
Love
Angry
Sad
Funny
Wow
Comments 0