রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫

রোহিঙ্গাদের অনুদান কমেছে ৭২ শতাংশ, ঘাটতি সামলাতে ঋণ ৪০০ মিলিয়ন

বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাফ্লো প্রতিনিধি

ঢাকা: বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা কমে আসছে দ্রুত। যুক্তরাষ্ট্র গত বছর যেখানে ৩০০ মিলিয়ন ডলার অনুদান দিয়েছিল, চলতি বছর সেখানে দিয়েছে মাত্র ৮৫ মিলিয়ন ডলার—যা ৭২ শতাংশ কম। একইভাবে যুক্তরাজ্যের অনুদানও এক বছরের ব্যবধানে ৪৮ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।

এই ঘাটতি সামলাতে বাংলাদেশ সরকার বিশ্বব্যাংক থেকে ৪০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ নিয়েছে বলে জানিয়েছে কোস্ট ফাউন্ডেশনের একটি গবেষণা। বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।

কোস্ট ফাউন্ডেশন ও কক্সবাজার সিএসও-এনজিও ফোরাম (সিসিএনএফ) যৌথভাবে সংবাদ সম্মেলনটি আয়োজন করে। সেখানে জানানো হয়, এক বছরের ব্যবধানে যুক্তরাজ্যের অনুদান ৪৬ মিলিয়ন ডলার থেকে কমে হয়েছে ২৪ মিলিয়ন। অন্যদিকে বাংলাদেশ সরকার নিজস্ব অর্থায়নে রোহিঙ্গা খাতে ব্যয় বাড়িয়েছে ২৬৩ শতাংশ—গত বছর ১১ মিলিয়ন ডলার অনুদান দিলেও এ বছর দিয়েছে প্রায় ৪০ মিলিয়ন ডলার।

কোস্ট ফাউন্ডেশনের সহকারী পরিচালক শাহিনুর ইসলাম বলেন, চলতি বছরের জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত রোহিঙ্গা শিবিরে মোট ৬৩টি প্রকল্প অনুমোদিত ও শুরু হয়েছে।

সংস্থার নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, “কক্সবাজার শহর থেকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যাওয়া-আসা করতে অন্তত তিন ঘণ্টা সময় লাগে। সুতরাং কক্সবাজার শহরে বসে রোহিঙ্গাদের জন্য কাজ করার কোনো প্রয়োজন নেই। বড় এনজিও এবং আইএনজিওগুলো প্রকল্প পরিচালনা করলে খরচ অনেক বেশি হয়। অন্যদিকে, স্থানীয় এনজিওগুলো মাত্র ৪ দশমিক ৮ শতাংশ তহবিল পায়। অথচ তারা বড় ধরনের প্রকল্প খুব কম খরচে চালাতে পারে। সুতরাং রোহিঙ্গাদের সহায়তা কার্যক্রমে স্থানীয় এনজিওগুলোর প্রতি গুরুত্ব দেওয়া উচিত।”

রোহিঙ্গাদের মানবসম্পদে রূপান্তরের আহ্বান জানিয়ে ফাউন্ডেশনের যুগ্ম নির্বাহী পরিচালক ইকবাল উদ্দিন বলেন, “রোহিঙ্গাদের শুধু মুখে তুলে খাওয়ানোর জন্য রাখা উচিত নয়। তাদের মানবসম্পদে রূপান্তর করা দরকার।”

একই অনুষ্ঠানে ফাউন্ডেশনের পরিচালক মোস্তফা কামাল আকন্দ বলেন, “উখিয়া, টেকনাফে রোহিঙ্গারা ধীরে ধীরে সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। বিপরীতে স্থানীয়রা হচ্ছে সংখ্যালঘু। ফলে শান্তি ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে উত্তেজনা বাড়ছে। এ জন্য রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সরকারকে গুরুত্ব দিতে হবে।”

‘রোহিঙ্গা মানবিক সহায়তার স্থানীয়করণ’ শীর্ষক গবেষণার জন্য চলতি বছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সরেজমিন জরিপ চালানো হয়। পাশাপাশি ২০১৭ থেকে ২০২৫ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন নথি ও প্রতিবেদন থেকেও তথ্য সংগ্রহ করা হয়।

বাংলাফ্লো/সিএস


Post Reaction

👍

Like

👎

Dislike

😍

Love

😡

Angry

😭

Sad

😂

Funny

😱

Wow

Leave a Comment

Comments 0